ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে মালয়েশিয়া

শেখ আরিফুজ্জামান, মালয়েশিয়া থেকে

প্রকাশিত : ০৯:৩১ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৯:০৮ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ বুধবার

যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও যানজট নিরসনে সরকারের নানামুখি উদ্যোগের ক্ষেত্রে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে মালয়েশিয়া। বাংলাদেশ থেকে আকাশপথে মালয়েশিয়ার দূরত্ব মাত্র চার ঘণ্টা।  এ দেশটি যেন এশিয়ায় একখণ্ড ইউরোপ।  কেননা ইউরোপের দেশগুলোর মতোই মালয়েশিয়ার সবকিছু বেশ সাজানো-গোছানো।  অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থাও অনেক উন্নত।  যেটাকে এক কথায় সুশৃঙ্খল বলা হলেও বোধহয় ভুল হবে না।  যার একটি অংশ গাড়ি পার্কিং।

 রাস্তার পাশে পার্কিংয়ের স্থান গুলো দেখলে মনে হবে সবগুলো গাড়ি বোধহয় বিক্রির জন্য সাজানো হয়েছে।  কিন্তু না, কর্মব্যস্ত জীবনে মালয়েশিয়ায় প্রথম পছন্দ নিজস্ব গাড়ি ব্যবহার।  তাই একই পরিবারে একাধিক গাড়ি থাকাটাও অস্বাভাবিক কিছু না। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেডারেল টেরিটরি মন্ত্রনালয় কুয়ালালামপুরকে তিনটি জোনে বিভক্ত করে পার্কিং হার নির্ধারণ করেছে।  পার্কিং ফিগুলো টাকা, কয়েন, টাচ `এন গো কার্ড এবং মোবাইল ফোন অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ব্যবহার করে পরিশোধ করা যেতে পারে।

এমনকি দৈনিক ভিত্তিতে পার্কিং লম্বা সময়ের জন্য মাসিক এককালিন টাকা দিয়ে পাস পদ্ধতি চালু করেছে মন্ত্রণালয়।  যা অন লাইন সাবস্ক্রাইব করে ব্যবহার করা যাবে। 

জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় সব রাস্তারই নিয়ম এক দিক দিয়ে চলাচল করা। তাই ওয়ানওয়ে রাস্তা হওয়ার কারণে কোনো ব্যক্তি পার্কিং করতে চাইলে রাস্তার পাশে গাড়ি রাখতে পারেন।  আর এ জন্য ঘণ্টা প্রতি ৮০ সেন্ট হিসেবে সরকারকে ফি দিতে হয়। 

নতুবা সেই গাড়িকে অবৈধভাবে পার্কিংয়ের জন্য মোটা অংকের টাকা জরিমানা করা হয়।  এ সব তদারকির জন্য মালয়েশিয়ান সরকার আলাদা একটি সংস্থা গঠন করেছেন যার নাম `দেওয়ান বান্দারায়া কুয়ালালামপুর` বা ডিবিকেএল।

এদিকে, গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য রাস্তার পাশে নির্দিষ্ট স্থানে বসানো হয়েছে স্বয়ংক্রিয় ম্যাশিন।  যাকে বলা হয়ে থাকে অটো পে।  অটো পে`র জন্য গাড়ি নম্বরসহ  পার্কিংয়ের সময় থেকে শুরু করে যে কয় ঘণ্টা পর্যন্ত থাকবে সে কয় ঘণ্টার টাকা স্বয়ংক্রিয় ম্যাশিনের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।  পরিশোধের সকল তথ্য সাথে সাথে ডিবিকেএল অফিসের সফটওয়্যারে চলে যাবে। কর্তৃপক্ষ এসব তদারকির জন্য প্রাইভেটকার, মটরসাইকেল এমনকি বাইসাইকেলও ব্যবহার করে থাকেন। 

ডিবিকেএল`র কাজ যে শুধু অবৈধ পার্কিং দেখাশোনা করা তা নয়। অবৈধ জায়গা দখল, ব্যবসা-বাণিজ্য, হোটেল-রেষ্টুরেন্টে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, ব্যবসায়ের জন্য সঠিক কাগজপত্র যাছাই-বাছাইসহ প্রভৃতি দায়িত্ব পালন করে থাকে।  সরকারের সঠিক পরিকল্পনার কারণে একদিকে যেমন যানজটমুক্ত হচ্ছে শহর।  অন্যদিকে প্রত্যেক মাসে মোটা অংকের টাকা জমা হচ্ছে সরকারি কোষাগাড়ে। 

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের কানেক্টিং ডিজিটাল বাংলাদেশ, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, ই-গভর্নমেন্ট এবং আইসিটি শিল্পের উন্নয়ন- এই চার মূলমন্ত্রে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ করছে সরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের এ কর্মযজ্ঞের ধারাবাহিকতায় অটো পে কার পার্কিং একদিকে যেমন যানজট নিরসন, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে অন্যদিকে, সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।  এই জন্য সরকারের আশু পদক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগী মহল।