শেষ শুক্রবারে মেলায় দর্শনার্থীর ঢল
রিজাউল করিম
প্রকাশিত : ০৬:০৩ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:০৬ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়। মাসব্যাপী এ মেলার শেষ ছুটির দিন হওয়ায় অন্য দিনের তুলনায় আগন্তুক ছিল বেশি। দর্শনার্থী সমাগমে মেলার আশপাশের রাস্তা ও খালি জায়গাগুলোতেও যেন তিল ধারণের ঠাই ছিল না। মেলার প্রধান ফটক এবং টিকিট কাউন্টারে ছিল দীর্ঘ লাইন। মেলার ভিতরে প্রতিটি স্টলে ছিল উপচে পড়া ভীড়। ভীড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে বিক্রেতারা। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের এমন বাধ ভাঙ্গা সাড়া পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে মেলায় অংশ নেওয়া স্টল ও প্যাভিলিয়নের মালিক ও বিক্রেতারা।
আজ শুক্রবার রাজধানীর আগাঁরগাওয়ে অনুষ্ঠিত এ মেলার ২৬তম দিনে সরেজমিনে দেখা যায়, মেলা শেষ সময় হওয়ায় এদিন সকাল থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীর আগমন ছিল বেশি। বিকেল থেকেই দর্শনার্থী বাড়তে থাকে বাণিজ্য মেলায়। সন্ধ্যার আগমুহুর্তে মোহাম্মদপুর, চন্দ্রিমা উদ্যান এবং আগারগাঁও তালতলা থেকে দর্শনার্থীদের জট শুরু হয়। দুই দিক দিয়ে হেঁটে দর্শনার্থীরা মেলায় প্রবেশ করে।
মেলায় আগত দর্শনার্থী এবং যানবাহন সামলাতে রীতিমত বেগ পেতে হচ্ছে মেলা কর্তৃপক্ষ এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীদের। মেলার প্রধান গেটে দায়িত্বে থাকা পুলিশের সার্জেন্ট ঝোটন শিকদার বলেন, “দিন বাড়ার সাথে সাথে মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। মানুষের এমন ঢল আর পাশাপাশি তাদের সাথে আসা ব্যক্তিগত গাড়ি আর মোটর সাইকেলের ভীড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। মেলায় আসা দর্শনার্থীরা যেন নির্ঝঞ্ঝাটে মেলা ঘুরে বেড়িয়ে যেতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি ”।
মেলায় গৃহস্থলি বিভিন্ন পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের বেশি আগ্রহ দেখা গেছে। প্লাস্টিক পণ্যের পাশাপাশি আগ্রহ রয়েছে প্রেসার কুকার, জুস মেকার, জুস ব্লেন্ডার, ওভেন, রাইস কুকার, ইস্ত্রি, ইন্ডাকশন চুলা, ফ্যানসহ নানা ধরণের ইলেক্ট্রনিক ও ইলেক্ট্রিক গৃহস্থলি পণ্যে।
মেলায় অংশ নেয়া গৃহস্থলী পণ্যের বিক্রেতা রাফিউর রাব্বি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান মেলায় অনেক গৃহস্থলী পণ্যের সমাহার ঘটিয়েছে। অন্য স্টলগুলোর তুলোনায় আমাদের স্টলে ভীড় বেশি। কারণ আমরা গেটের পাশে ও গৃস্থলী পণ্যে বেশি ছাড় দিচ্ছি। আমরা সব পণ্যে ১০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি। মেলায় অন্যান্য দিনের চেয়ে শুক্রবার ক্রেতা দর্শনার্থী বেশি হওয়ায় বিক্রিও বেশি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজধানীর মিরপুর থেকে মেলায় আসা আরিফ বলেন, হরেক রকমের পন্য পাওয়া যায় বলে প্রতি বছরই মেলার অপেক্ষায় থাকি। এবার মেলা থেকে একটি রাইস কুকার ও ঘরে ব্যবহারের জন্য প্লাস্টিকের বিভিন্ন সামগ্রি কনেছি। আমার সঙ্গে আমার স্ত্রী আতিকা আফরিন মৌ এসেছে। ভালই লাগছে। তবে আরো আগে আসলে এতো ভীড়ের মধ্যে কষ্ট পেতে হতো না। এবার একটু বেশি ভীড়।
আদাবর থেকে মেলায় আসা শাওন আহম্মেদ বলেন, ছুটির দিন থাকায় ছেলে মেয়েদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। মেয়ের পছন্দের একটি ফ্রিজ কিনবো। মেলায় সব ব্রান্ডের পণ্য পাওয়া যায়। এছাড়া বিশেষ ছাড়ও রয়েছে। এখন ঘুরে ঘুরে দেখছি। কোথায় বেশি ছাড় ও ভালো মানের পণ্য পাওয়া যায়।
গত ১ জানুয়ারি মাস ব্যাপী ২৩ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এবারের মেলায় মোট ২২টি দেশ অংশ নিয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকছে। মেলায় আগন্তুকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
//আরকে//এস এইচ এস