ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

রোহিঙ্গা ইস্যু: বিভিন্ন বার্তা ছড়াচ্ছে শিবিরগুলোতে

প্রকাশিত : ১০:৫০ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে ঘিরে শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে জনমত গঠনের চেষ্টা চলছে। মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার ক্ষেত্রে ৬ থেকে ৮টি শর্ত পূরণের দাবিতে গত দুই মাসে ত্রাণ শিবিরে একাধিক বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটেছে।

রোহিঙ্গারা ফেরত যাওয়ার আগে যে বিষয়গুলো নিশ্চিত করার দাবি তুলেছেন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা পরিচয়ে নাগরিকত্ব প্রদান, নিজস্ব জমি বসত ভিটা ফেরত পাওয়া, মিয়ানমারে অন্যান্য গোষ্ঠীর মতো সমান মর্যাদা নিশ্চিত করা। এছাড়া ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং হত্যা ধর্ষণের বিচারও চাইছেন তারা।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন অংশের দাবি নিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আলোচনার খবর জানেন পুরোনো রোহিঙ্গা জাফর আলম। ক্যাম্পে লিফলেট ছড়ানো এমনকি ছাপানো ফরমে স্বাক্ষর নেয়ার ঘটনাও তার নজরে এসেছে। কিন্তু এসবের নেপথ্যে `আরাকান রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস সোসাইটি` নামে অনানুষ্ঠানিক একটি সংগঠন গড়ে ওঠার যে খবর বেরিয়েছে সেটি তিনি জানেন না।

জাফর আলম বলেন, "এখানে মায়ানমারে যাবে না এরকম বিভিন্ন ধরনের দাবি আলোচনা করতে দেখা যাচ্ছে। তাদেরকে (সাধারণ রোহিঙ্গা) ভুল মোটিভেশন দেয়া হচ্ছে। স্বঘোষিত কমিটিগুলোই হয়তো ভুল মোটিভেশন দিচ্ছে।"

রোহিঙ্গাদের বক্তব্য এবং কার্যক্রমে অনেকটা পরিষ্কার যে তারা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে বিভিন্ন দাবিতে সংগঠিত হতে চাইছেন। সাধারণ রোহিঙ্গাদের অনেকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে স্বেচ্ছায় ফেরার আগে তাদের দাবি কী হবে এবং তারা আসলে কী চান। কক্সাবাজারে ত্রাণ শিবিরে থাকা বেশিরভাগ রোহিঙ্গাই এখনো প্রত্যাবাসন নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল বলেন, "একটা গ্রুপ চেষ্টা করছে প্রত্যাবাসন বিষয়টিকে অন্যদিকে মোড় দেয়ার জন্য। কিন্তু এ জিনিসটা যেন না হয় সেজন্য আমরা তৎপর আছি। রোহিঙ্গারা কিন্তু অর্গানাইজড না। অনেকেই চেষ্টা করছে এদেরকে ভুলপথে ধাবিত করার জন্য। আমরা চেষ্টা করছি কোনোরকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য যেন প্রচার না পায়।"

রোহিঙ্গা ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম জানান, প্রত্যাবাসনের আগে রোহিঙ্গাদেরকে কাউন্সিলিং করা হবে। মিয়ানমারে তাদের কী সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে সেটি পরিষ্কার জানাতে পারলে কোনো সমস্যা হবে না বলেও তিনি মনে করছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের অক্টোবর এবং ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে আসা নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন অন্তত ৭ লাখ ৮০ হাজার। এই সব রোহিঙ্গাকেই ফেরত পাঠানোর কথা আগামী দুই বছরের মধ্যে।

সূত্র: বিবিসি

একে/টিকে