বন্ধ ছিলো ফার্মগেট কোচিং পাড়া
তবিবুর রহমান
প্রকাশিত : ১১:৩৬ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার
আসন্ন মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে আজ শুক্রবার থেকেই দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রাজধানীর ফার্মগেট এলাকা ঘুরে দেখা যায় সরকারি নির্দেশ মেনে কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রেখেছে মালিক পক্ষ। কোচিং কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দশে কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। তবে এমন ভাবে চললে আমরা না খেয়ে মারা যাবো।
ওরাকল বিসিএস কোচিং সেন্টারের ফার্মগেট শাখার ব্যবস্থাপক মো. উজ্জ্বল ইটিভি অনলাইনকে বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরা আমাদের কোচিং সেন্টার বন্ধ সেন্টার বন্ধ রেখেছি। যদি আমাদের কোচিং সেন্টার কোনো একাডেমিক কার্যক্রামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়।
নাছিম নামের এক অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা, যারা সরকারি চাকরি করে তারা সন্তানকে বেশি সময় দিতে পারে না। যে কারণে এক প্রকার বাধ্য হয়ে কোচিং নির্ভর হতে হয়।
তিনি ইটিভি অনলাইনকে বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনই চাকরি করি। একারণে সন্তানকে কোচিং পাঠাই। আমি মনে করি শিক্ষকরা যদি ক্লাসে সঠিক ভাবে পাঠ দান করে তাহলে আর বাড়তি কোচিং করতে হত না।
এব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, শিক্ষকরা যাতে ক্লাসে ভালো পড়ায় একারণে আইন করে কোচিং সেন্টার বন্ধের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এখন পরীক্ষার কারণে বন্ধ আছে। সামনে একবারে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, রাজধানীর স্কুলগুলোর পাশের অলিগলিতে নামে বেনামে চলছে কোচিং বাণিজ্য। আর এই কোচিং সেন্টারের সাথে জড়িত রয়েছেন নামিধামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা।
শিক্ষামন্ত্রী ভাষ্য, এসকল শিক্ষকরা প্রত্যাক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রশ্নফাঁস এর সাথে জড়িত। সরকারের নির্দেশে কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকলেও এসব শিক্ষকরা ব্যাচের নাম করে হয়তো বাড়িতে কিংবা বাসা ভাড়া নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন এ ধরনের কোচিং বাণিজ্য।
গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জাতীয় মনিটরিং কমিটির সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, সরকার ডেসপারেট ও অ্যাগ্রেসিভ হয়ে ভূমিকা রাখবে। কারণ দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। ১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। কোচিং সেন্টার বন্ধের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা শুরুর তিন দিন আগে থেকে পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকার কথা বলা হয়েছিল। এখন সেই সিদ্ধান্ত এগিয়ে এনে সাত দিন আগে থেকে পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পরীক্ষা শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের শুধু কেন্দ্রেই নয়, তাদের নিজ নিজ আসনে গিয়ে বসতে হবে। পরীক্ষার সময় একটি সীমিত সময়ের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বন্ধ রাখার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে।
মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, পরীক্ষার পরও যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে, আগে প্রশ্ন আউট হয়েছে সে ক্ষেত্রে সে পরীক্ষা বাতিল হবে। কোনো অবস্থাতেই ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। এ ব্যাপারে আমরা কোনো অবস্থাতেই কোনো ধরনের আপস করতে রাজি নই। এবার থেকেই এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সব শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষা হবে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে।
টিকে