ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

হোয়াইট হাউজ ছেড়ে হোটেলে মেলানিয়া

প্রকাশিত : ০৯:১০ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০১:৩০ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ রবিবার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অসংখ্যা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এসব নিয়ে রয়েছে নানা মুখরোচক গল্প। কিছুদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাবেক পর্নো-তারকা ড্যানিয়েল স্টর্মের সম্পর্কের অভিযোগ ওঠার পর তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প চরমভাবে ক্ষেপে গিয়েছিলেন। এতে অভিমান করে ট্রাম্পকে ছেড়ে বিলাসবহুল এক হোটেলে গিয়ে উঠেছিলেন তিনি। হোয়াইট হাউস থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র থেকে এমন তথ্য পেয়েছেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল। মেইল অনলাইনের প্রতিবেদsনে বলা হয়, স্টর্মের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কের এমন গুঞ্জন ওঠার পর মেলানিয়া ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বেশ কিছু সময় আলাদা বসবাস করেছেন।

ড্যানিয়েলের প্রকৃত নাম স্টেফানি ক্লিফোর্ড। তিনি ২০১১ সালে এক সাক্ষাতকারে ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা বলেছিলেন। তবে টাচ উইকলিকে দেওয়া সাক্ষাতকারটি চলতি বছর ১৭ জানুয়ারি আগে প্রকাশিত হয়নি। সাক্ষাতকারে তিনি দাবি করেছিলেন, ২০০৬ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০০৭ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ছিল সে সম্পর্ক। ১২ জানুয়ারি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল দাবি করেছিল, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন ড্যানিয়েলকে সম্পর্কের ব্যাপারে ‘চুপ থাকার’ জন্য ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিল। কোহেন ট্রাম্পের সঙ্গে ড্যানিয়েলের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করলেও টাকা দেওয়ার কথা অস্বীকার করতে পারেননি।

ড্যানিয়েলের সঙ্গে এ ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর তাদের দুজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। হোয়াইট হাউসের ওই সূত্রের দাবি, ‘এটা খুবই বেদনাদায়ক ও হতাশাজনক মুহূর্ত। ট্রাম্পের সঙ্গে মেলানিয়ার সম্পর্ক অন্যরকম হয়ে গেছে। নির্ভরযোগ্য এক সূত্র ডেইলি মেইলকে জানায়, ‘জানুয়ারিতেই হোয়াইট হাউস ছেড়ে এক হোটেলে তিন-চারদিন ছিলেন মেলানিয়া। গিয়েছিলেন নিউ ইয়র্কেও।’ ওই সূত্র দাবি করে, অন্যান্য ফার্স্টলেডিদের মতো ওয়েস্ট উইং অফিসে খুব একটা যান না মেলানিয়া। তার শিডিউল অন্যরকম। তিনি কোনও বিশেষ কারণ ছাড়া দায়িত্ব এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, ‘এরপর স্টর্মি ড্যানিয়েলসের ওই গুঞ্জনে আঘাত পেয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কে এটি বিরুপ প্রভাব ফেলেছে।’

পর্নস্টারের সঙ্গে সম্পর্কের কথা সংবাদমাধ্যমে আসার পর থেকে ট্রাম্প ও মেলানিয়াকে আর এক সঙ্গে দেখা যায়নি। এমনকি সোমবার তাদের ১৩তম বিবাহবার্ষিকী নিয়েও কোনও কথা বলেননি ট্রাম্প। একসঙ্গে দেখাও যায়নি যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে প্রভাবশালী এই দম্পতিকে। ডেইলি মেইল বলছে, সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি শাটডাউন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন ট্রাম্প। ১৫ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে ফেরার পর মেলানিয়ার কোনও ছবিও তোলা হয়নি।

মেলানিয়া ট্রাম্পের এক মুখপাত্র স্টেফানি গ্রিশাম ডেইলি মেইলে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে এক টুইটে বলেন, মেলানিয়া ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ট্যাবলয়েডের প্রকাশ করা মিথ্যা সংবাদগুলো এখন মূলধারার সংবাদমাধ্যমেও চলে আসছে।’ তবে ডেইলি মেইলের সংবাদের সত্যতা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও প্রশ্ন তোলেননি তিনি। মেলানিয়ার হোটেলে থাকা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নও এড়িয়ে গেছেন ট্রাম্পের ওই মুখপাত্র।  

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর চারটি বিদেশ সফর করেছেন ট্রাম্প। সবগুলোতেই সফরসঙ্গী হিসেবে পাশে ছিলেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া। ট্রাম্পের সঙ্গে সৌদি আরব, ইসরায়েল, ভ্যাটিকান, বেলজিয়াম, পোল্যান্ড. ফ্রান্স, জাপান ও চীনে গেছেন মেলানিয়া। কিন্তু এই প্রথম তার সঙ্গে দাভোস গেলেন না মেলানিয়া। এই দম্পতির ১৩ তম বিবাহবার্ষিকীতেও ছিল না কোনও আয়োজন। সে সময় শাটডাউন নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিলেন ট্রাম্প। শাটডাউন নিয়েই টুইট করে যাচ্ছিলেন। মেলানিয়াও সামাজিক মাধ্যমে খুব সরব ছিলেন না। অথচ ১০ম বিবাহবার্ষিকী খুবই আড়ম্বরে পালন করেছিলেন এই দম্পতি। ২৫ ক্যারেটের হীরের আংটি উপহার দিয়ছিলেন ট্রাম্প।

এছাড়া ১২ জানুয়ারির পর খুব একটা একসঙ্গে দেখাও যায়নি তাদের। ট্রাম্প আয়োজিত মাত্র দুটি ডিনারে দেখা গেছে তাকে। ১৫ জানুয়ারি মার্টিন লুথার কিংকে নিয়ে টু্ইট করেন মেলানিয়া। এরপর ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের দায়িত্বগ্রহণের এক বছর পূর্তির দিন টুইটারে ছবিসম্বলিত একটি পোস্ট দেন ফার্স্টলেডি। তিনি বলেন, ‘এই এক বছরে অনেক মানুষ ও দারুণ কিছু মুহূর্ত পেয়েছি আমি। দেশ ও বিদেশের এমন অসাধারণ মুহূর্তের স্বাক্ষী হতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।’ তবে সেই টুইটে ট্রাম্পের কোনও প্রসঙ্গের উল্লেখ ছিল না। মেলানিয়ার ছবিতেও ছিলেন না ট্রাম্প।

গ্রিশাম ডেইলি মেইলকে নিশ্চিত করেছিলেন, ব্যস্ততার কারণেই দাভোসে যাওয়া হয়নি মেলানিয়ার। ট্রাম্পকে সমর্থন দিতে তার সেখানে যাওয়ার কথা ছিলো। তবে আরেকটি সূত্র জানায়, দাভোসে না গেলেও জনসমক্ষে আসার কথা ছিলো না মেলানিয়ার। এতে করে প্রশ্ন ওঠার আশঙ্কা করছিলেন তারা। বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে দেখা যায় তাকে। যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট জাদুঘরে গিয়েছিলেন তিনি। তবে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে মেলানিয়ার ঐতিহাসিক এই জাদুঘর পরিদর্শনের জন্য কোনও সাংবাদিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এমনকি ফ্লোরিডায় তার সফর নিয়ে আগাম কিছু জানানোও হয়নি।

 

এসি/টিকে