ব্রিটেনে জরিপ
দারিদ্র্যতা কেড়ে নিচ্ছে সন্তানের এক বেলা খাবার
প্রকাশিত : ০১:১৭ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার
ব্রিটেনে দারিদ্র্যতার কারণে প্রতি চারজন পিতা-মাতার একজন সন্তানকে ঠিকমতো খাবার খাওয়াতে পারছেন না। সন্তানের খাবার চাহিদা মেটাতে না পারায় দেশটিতে নীরব দারিদ্র্যতা বিরাজ করছে বলে দাবি করা হয়েছে এক গবেষণায়। শিগগিরই এই অবস্থানের উন্নতি করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান জরিপকারীগণ।
ব্রিটেনের ট্রাসেল ট্রাস্টের করা জরিপে দেখা যায়, ব্রিটেনের শতকার ২৩ শতাংশ বাবা-মা ১৮ বছর বা তারচেয়ে কম বয়সী সন্তানদের খাবার চাহিদা মেটাতে পারছেন না। অর্থ বা খাধ্যের অভাবে প্রতিদিনই তারা সন্তানদের একবেলা খাবার খাওয়ানো বন্ধ রাখছেন।
দুই হাজার মানুষের ওপর চালানো এই জরিপে আরও দেখা যায়, ২৩ শতাংশ মানুষ তাদের খাবারের বিষয় নিয়ে অনিশ্চিত জীবন-যাপন করছে। তাদের কেউ জানে না, তারা পরের দিন কি খাবে। এমনকি গত ১২ মাসে ১৩ শতাংশ মানুষ একবেলাও না খেয়ে দিন কাটিয়েছেন বলে দাবি করা হয় জরিপে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েছে এমন ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের বাবা-মায়ের অবস্থা আরও করুণ। তাদের ২৭ শতাংশ হয় নিজেরা তাদের সন্তানদের খাবার কিনে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন অথবা অন্যদের দিনে একবেলা উপোস থাকতে দেখেছেন। বিপরীতে গত তিনমাসে ৫৯ শতাংশ মানুষের খাবার কেন্দ্রিক খরচ বেড়েছে। ওই ৫৯ শতাংশ মানুষ ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে উন্নত মানের খাবার খেয়েছে।
এই জরিপে ব্রিটেনের খাদ্য অনিরাপত্তার বিষয়টি আবারও সামনে এসেছে। সরকারের উদাসীনতা বা ব্যর্থতা যা-ই বলা হোক না কেন, দেশটিতে দরিদ্র মানুষের খাবার কিনতে হাপিত্যেশ ওঠছে। শুধু তাই নয়, আগামীতেও এ ধরণের নীরব দুর্ভিক্ষ থাকবে বলে জরিপে সতর্কতা জারি করা হয়।
যুক্তরাজ্যে খাদ্যের এই নিরাপত্তাহীনতা মোকাবেলায় ইতোমধ্যে সংসদে একটি বিল আনা হয়েছে। এদিকে বেশ কয়েকটি দাতা সংস্থা খাদ্য অনিরাপত্তা দূরীকরণে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। এদিকে বিলটির লেখক এমা লেওয়েল বাক বলেন, যুক্তরাজ্যজুড়ে কি পরিমাণ মানুষ খাদ্য অনিরাপত্তায় ভোগছেন, এ বিলটির মাধ্যমে প্রথমে জরিপ কার্যক্রম শুরু হবে। পরে ওই জরিপের ওপর ভিত্তি করে সংসদে প্রশ্ন উত্থাপন করা হবে। এই জরিপ পরবর্তীতে জাতীয় খাধ্য জরিপের সঙ্গে যোগ করা হবে।
লেওয়েল বাক আরও বলেন, জাতিসংঘ এক জরিপে জানিয়েছে, দেশটিতে ৮০ লাখ লোক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। দেশটিতে ২ হাজারেরও বেশি ফুড ব্যাঙ্ক রয়েছে। আর অপুষ্ঠির কারণে দেশটি প্রতিবছর ১২ বিলিয়ন ডলার খরচ করছে বলেও জানায় সংস্থাটি।
বিলটি সংসদে আসার আগে অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ এক জরিপের ফলাফলে জানা গেছে, সব রাজ্যজুড়ে অন্তত ১০ লাখ বৃদ্ধ মানুষ অপুষ্ঠিতে ভোগছেন। এতে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ অপুষ্ঠির জন্য দেশটিকে ব্যয় করতে হবে ১৫.৭ বিলিয়ন ডলার।
সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট
এমজে/