আবারও খুলছে গুয়েতেমালা বে কারাগার
প্রকাশিত : ১২:২৯ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ বুধবার
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে গুয়েতেমালা বে কারাগার খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এতে আবারও বন্দীদের ওপর বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতনক্ষেত্র খ্যাত কারাগারটির ব্যবহার শুরু হতে যাচ্ছে। ইউনিয়ন এড্রেসে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প এ কথা বলেন।
এদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গুয়েতেমালা কারাগার বন্ধের নিদের্শ দিয়েছিলেন। তবে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প ওবামার নেওয়া নীতিগুলোর বিরোধীতা করতে থাকেন। নতুন করে দেওয়া নির্বাহী আদেরেশর মাধ্যমে যেন তারই প্রতিফলন ঘটল।
বিতর্কিত ওই গুয়েতেমালা কারাগার খুলে দেওয়ায় যুদ্ধবন্দী অথবা দেশটির করা সন্ত্রাসের তালিকায় ব্যক্তিদের আবারও গুয়েতেমালা কারাগারে পাঠানো শুরু হবে বলে জানা গেছে।
৯/১১ হামলার পর কিউবাতে গাড়া গুয়েতেমালা বে কারাগারে ‘সন্ত্রাসীদের’ বা যুদ্ধবন্দীদের আটক রাখার কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে বর্তমানে ওই কারাগারে মাত্র ৪২ জন সন্ত্রাসী বা যুদ্ধবন্দী রয়েছে। যুদ্ধবন্দীকে আটক করে রাখা ওই কারাগার থেকে শত শত হাজতবাসীকে বারাক ওবামা অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন, যেখানে তারা অন্যান্য আসামীদের মতো সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারেন। এদিকে গুয়েতেমালা বে কারাগার বিশ্বের মধ্যে জঘণ্যতম কারাগার হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
হোয়াইট হাইজ থেকে জানানো হয়েছে, ওবামার বন্ধ করে দেওয়া গুয়েতেমালা বে কারাগার আবারও প্রয়োজনে খুলতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এখন থেকে ওই কারাগারে আবারও যুদ্ধবন্দী বা সন্ত্রাসীর তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের পাঠানো শুরু হবে বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্টের দফতরটি।
গত বুধবার দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা কেবল অপরাধী নয়। তাদেরকে আইনিভাবেই দমন করতে হবে। আর যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের যে কোন জায়গা থেকে তাদের আটক করার পর তাদের সঙ্গে ওই ধরণের আচরণ-ই করতে হবে, যা তাদের প্রাপ্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘অতীতে আমরা বোকার মতো শত শত সন্ত্রাসীকে মুক্ত করে দিয়েছি। এতে তাদের আবারও যুদ্ধক্ষেত্রে মোকাবেলা করতে হচ্ছে। ইসলামিক স্টেটের প্রধান আবু বকর আল-বোগদাদির উদাহরণ টেনে ট্রাম্প বলেন, তাদের মুক্ত করে দিয়ে আমরা বিশ্বজুড়ে আমাদের হুমকি বাড়িয়ে তুলেছি। তবে আর না, আমরা এখন থেকে আবারও কারাগারটি খুলে দিতে যাচ্ছি।’
২০০২ সালে প্রথম কারাগারটি খুলে দেয় যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে ৭০০’র ও বেশি সন্ত্রাসী ও যুদ্ধবন্দীকে আটক করে নির্যাতন চালায় যুক্তরাষ্ট্র। গুয়েতেমালা কারাগারটি খোলার পর থেকেই মানবাধিকার সংস্থাগুলো এর তীব্র বিরোধীতা করতে থাকে। তবে ২০০৯ সালে বারাক ওবামা কারাগারটি বন্ধের জন্য নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এরপর থেকে অনেক আসামীকে মুক্তি দেন তিনি। তবে ২০০৯ সালে নির্বাহী আদেশ জারি করলেও দীর্ঘ ৮ বছর সংসদ সদস্যদের বিরোধীতার মুখে তার আদেশ পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। অবশেষে ২০১৬ সালে এর বাস্তবায়ন শুরু হয়।
সূত্র: বিবিসি
এমজে/