ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

নড়াইলের অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব

পাখিদের বিশাল অভয়রণ্য

প্রকাশিত : ০১:২০ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ০৫:১৬ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ বুধবার

শহরের জীবনে যান্ত্রিকতার সঙ্গে চলতে চলতে ক্লান্তি আসতেই পারে। হয়তো চিন্তা করছেন একটু দূরে কোথাও দু’একটা দিন একাকি নিরিবিলি সময় কাটিয়ে আসবেন! সে ক্ষেত্রে আমি প্রস্তাব করতে পারি নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার পানিপাড়া গ্রামে মধুমতি নদীর তীরে গড়ে ওঠা অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব বা ইকো পার্ককে।

যদিও শীতকালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অতিথি পাখির সমারোহ থাকে তবে অরুণিমায় গ্রীষ্মকালেও দেশী-বিদেশী কয়েক হাজার পাখি দেখা যায়। যা এই রিসোর্টের সৌন্দর্য্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এই মুহুর্তে পাখিদের ব্যপক উপস্থিত দেখা গেছে অরুনিমায়। মোট কথা দিনে দিনে পাখিদের এই উপস্থিতি বিশাল অভয়রণ্যে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা শুধু পাখি দেখতেই ছুটে আসছেন প্রতিদিন।

দীর্ঘ এক যুগের সাধনায় গ্রামীণ পরিবেশে ৫০ একর জমির উপর গড়ে তোলা হয়াছে অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় একটি ইকো পার্কটি। অরুণিমা কান্ট্রি সাইড এর নাম। এখানে গাছের ছায়ায়, পাখির গান শুনতে শুনতে, জলের ধারে অনায়াসে কাটিয়ে দেয়া যায় অনেকটা সময়। আবহমান গ্রামবাংলার চিরচেনা রূপ আর আধুনিকতার সুপরিকল্পিত সমন্বয় ঘটানো হয়েছে এই রিসোর্টে।

দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় দিক

আধুনিক বাংলো, চিড়িয়াখানা, পুকুর, লেক, গোলাপ বাগান, বাটার ফ্লাই পার্ক, ছেড়াদ্বীপ, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি, গলফ খেলার মাঠ। অরুনিমার প্রবেশ পথে রয়েছে সারিবদ্ধ মন্দির ঝাউ। অভ্যর্থনা জানানোর ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে সারিবদ্ধ গাছ। আরও নজর কারবে রাস্তার দুপাশে গড়ে তোলা দেশী-বিদেশি অসংখ্য ফুল গাছের বাগান। এখানকার প্রাইম গার্ডেন অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। এছাড়া গোলাপ বাগানের সৌন্দর্যেমোহিত হবেন। আছে পাহারবেষ্টিত বাংলো দীঘি।

সব কিছু মিলিয়ে এটিসত্যিই একটি আকর্ষনীয় পর্যটন স্থান।

এখানে আরও রয়েছে-

আধুনিক ও বৈচিত্রময় কটেজ, উন্নত ডাইনিং হল, কনফারেন্স হল, আধুনিক বিজনেস সেন্টার, চিলড্রেন পার্ক, ইনডোর-আউটডোর খেলাধুলার সুবিধাসহ আরও অনেক কিছু।

রয়েছে গ্রাম বাংলার হারানো ঐতিহ্যবাহী উপকরণ। ঢেঁকি, পোলো, কোচ, পানের বাটা, হুক্কা, গরুর গাড়ীসহ বিভিন্ন গ্রামীণ উপকরণ ব্যবহার ও প্রদর্শনের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। লেকে এবং মধুমতি নদীতে ভ্রমনের জন্য অরুণিমাতে রয়েছে লাইফবোট, ডিনার বোর্ট প্যাডেল বোর্ট। রিসোর্ট সংলগ্ন মধুমতি নদীতে আকর্ষণীয় নৌ পর্যটনও রয়েছে।

হাজার হাজার বিরল প্রজাতির ফল ও ফুলের ও বনজ ও ঔষধি বৃক্ষের চারা রোপন করে অরুনিমাকে প্রাকৃতিক সৌন্দার্যের এক অপরূপ সৃষ্টি হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। আম, কাঠাল, লিচু, নারকেল, চেরি, স্টার আপেল, জলপাই, পেঁপে, কুল প্রভৃতিসহ অসংখ্য ফলের গাছ রয়েছে। ফুলের মধ্যে ড্যাফোডিল, ক্যামেলিয়া, লিলি, কুমারী পান্থ, পদ্ম, নীলপদ্ম, রঙ্গন, কাঞ্চন, প্রায় দুইশ´ প্রজাতির গোলাপ, মার্বেলটাস্ক, টগর, গ্যালাডুলাসসহ আরো অনেক রকম ফুল এ পর্যটন কেন্দ্রের শোভা বর্ধন করেছে।

যেভাবে যাবেন

নড়াইল শহর থেকে আপনাকে যেতে হবে কালিয়া উপজেলায়। সেখান থেকে অরুনিমা রিসোর্টে। সেক্ষেত্রে আপনি নড়াইল থেকে যেকোন যানবাহন নিয়ে যেতে পারেন। অথবা আপনার নিজস্ব গাড়ি নিয়েও যেতে পারেন সেখানে।

রেস্টুরেন্ট ও আবাসিক ব্যাবস্থা

পর্যটকদের আবাসিক সুবিধার জন্য মধুমতি নদীর তীরে গড়ে তোলা এই রিসোর্টে আছে এসি, ননএসি ৩০টি কটেজে ৩৫টি রুম রয়েছে। ২ রুম বিশিষ্ট একটি ভাসমান কটেজ যা পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। এ আবাসিক বোটসহ সকল প্রকার কটেজে রয়েছে খাবারের সু-ব্যবস্থা। এছাড়াও আছে ৪০ বেডের তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি ডরমিটরি, ডাইনিং হল, কনফারেন্স হল, ট্রেনিং সেন্টার।

এসএ/