যে সমাজে এখনও কুমারীত্বের পরীক্ষা দিতে হয়
প্রকাশিত : ১০:৩৬ পিএম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৬:৩৭ পিএম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার
নবদম্পতির বিছানায় পাতা সাদা চাদরে রক্তের দাগ লাগলেই পাওয়া যায় প্রমাণ। তবেই সমাজ মেনে নেয় যে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর নিজের কৌমার্য প্রমাণে ব্যর্থ হলে নববধূর কপালে জোটে জুতোপেটা, অথবা বের করে দেওয়া হয় শ্বশুরবাড়ি থেকে। এ নিয়ম এখনও প্রচলিত আছে ভারতের মহারাষ্ট্রের কঞ্জরভাট নামে আদিবাসীদের সমাজে।
ওই সমাজে নববধুদের কুমারীত্ব পরীক্ষার নামে চরম অবমাননা করা হয়। সেই সমাজের সদ্য বিবাহিত নারীদের পরীক্ষা দিয়ে প্রমাণ করতে হয়, বিয়ের দিন পর্যন্ত তাঁদের কৌমার্য বজায় আছে।
এদিকে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সোনিয়া নায়েক বিবিসিকে বলছিলেন, প্রথমবার শারীরিক সম্পর্কের সময়ে যে নারীর দেহ থেকে রক্ত বেরবেই, এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। অনেক সময়ে প্রথমবার শারীরিক মিলন হলেও কুমারী মেয়েদের শরীর থেকে রক্ত নাও বেরোতে পারে। এর অনেক কারণ রয়েছে। কিন্তু রক্ত না বেরনো মানেই যে কোনও নারী কুমারী নন, এটা বলা অবৈজ্ঞানিক।
বিবেক তামাইচিকার এক মারাঠি যুবক এই প্রথা বন্ধের উদ্দেশ্যে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছেন। `স্টপ দা ভি রিচুয়াল` নামে একটা হোয়াটস্ অ্যাপ গ্রুপও হয়েছে, যেটির ৬০ জন সদস্যের অর্ধেকই নারী। `ভি রিচুয়াল` অর্থ ভার্জিনিটি রিচুয়াল, বা কৌমার্য পরীক্ষা।
বিবেক বিবিসিকে জানান, পুণে শহরে একটা বিয়েবাড়িতে তিনি আর তাঁর কয়েকজন বন্ধু এই কৌমার্য পরীক্ষা বন্ধের স্বপক্ষে প্রচার চালাতে গিয়েছিলেন। সেখানেই কঞ্জরভাট সম্প্রদায়ের মানুষজন মারধর করেন। পুলিশ সেখান থেকে চল্লিশ জনকে গ্রেপ্তারও করেছে।
"আমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে এবছরের শেষে। কিন্তু আমি তো পঞ্চায়েতকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছি যে আমার স্ত্রী কোনওমতেই ওই কৌমার্যের পরীক্ষা দেবে না। কিন্তু শুধু আমি বা আমাদের গ্রুপের সদস্যরা বললে তো হবে না। এগিয়ে আসতে হবে সমাজের বাকি অংশকেও," বলছিলেন বিবেক তামাইচিকার।
সূত্র: বিবিসি
একে/টিকে