ঢাকা, রবিবার   ১২ জানুয়ারি ২০২৫,   পৌষ ২৮ ১৪৩১

লন্ডনে বাংলাদেশি হত্যায় একজন দোষী সাব্যস্ত

প্রকাশিত : ১১:৩০ এএম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার

টেলিভিশনে প্রচারিত একটি ইসলাম বিদ্বেষী নাটক দেখার পর ইসলাম ধর্মের প্রতি ক্ষোভ-রাগ-ঘৃণা ও হিংসা জন্মায় ব্রিটিশ নাগরিক ড্যারেন ওসবর্ন (৪৮)। এরই প্রেক্ষিতে গত বছর মসজিদমুখী মুসল্লিদের ওপর ভ্যান চাপা দিয়ে এক বাংলাদেশি মুসল্লিকে হত্যা করে ওই ব্যক্তি। হত্যার ঘটনায় ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত। তবে তাকে কি পরিমাণ শাস্তি দেওয়া হবে তা এখনও জানা যায়নি।

জানা যায়, বিবিসির তৈরি করা একটি শিশু চলচ্চিত্রে তিন ব্রিটিশ কিশোরীর শ্বেত বর্ণের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে ব্রিটিশ-পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এক তরুণ। ওই ঘটনার পর থেকে ড্যারেন ইসলাম বিদ্বেষী মনোভা পোষণ করতে শুরু করেন। পরে সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে ব্রিটেনে যে পরিমাণ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে, এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মুসলিমদের ওপর হামলা চালায় ড্যারেন। এতে ওই বাংলাদেশি তরুণ ভ্যান চাপায় মৃত্যুবরণ করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৯ জুন উত্তর লন্ডনের ফিন্সবারি পার্ক এলাকায় একটি মসজিদের সামনে দাঁড়ানো কয়েকজন পূণ্যর্থীর ওপর ভ্যান গাড়ি চালিয়ে হামলা চালায় ওসবর্ন। এতে ৫১ বছরের মকরম আলী নিহত হন। এ সময় অন্যদেরও হত্যার চেষ্টা করে ওয়েলসের রাজধানী কার্ডিফের বাসিন্দা ওসবর্ন। তবে ওই ঘটনায় আরও অন্তত ১২ জন মারাত্মকভাবে আহত হন।

হামলায় নিহত মকররম আলীর গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সরুয়ালায়। মকররমের পরিবার দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করছিলেন লন্ডনে। ১২ বছর বয়সে তিনি পাড়ি জমান লন্ডনে। একটানা প্রবাস জীবন কাটিয়ে বিশ্বনাথের দৌলতপুরে বিয়ে করেন তিনি। কয়েক বছর পর স্ত্রীকেও লন্ডনে নিয়ে যান। সেখানে জন্ম হয় চার মেয়ে ও দুই ছেলের।


লন্ডনের উলউইচ ক্রাউন আদালতে ওসবর্ন দাবি করে, হামলার একেবারে শেষ মুহূর্তে ডেভ নামের এক ব্যক্তি গাড়ির চালকের আসনে ছিল। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা ওসবর্নকে বলতে শুনেন, আমি আমার দায়িত্বপালন করেছি। এখন আপনারা আমাকে হত্যা করতে পারেন। তবে ওসবর্ন কেন হঠাৎ করে বাম রাজনীতিতে আসেন, তা নিয়েও কৌতূহল দেখা দিয়েছে।

আদালতে ওসবর্ন জানায়, তিনি ব্রিটেনের গুরুত্বপূর্ণ বামপন্থী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ যেমন ইংলিশ ডিফেন্স লিগ টমি রবিনসন এবং ব্রিটেনের প্রথম নেতা পল গোল্ডিং এর আর্দেশ দীক্ষিত হয়ে তিনি ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ শুরু করেন। আর তাদের এই আদর্শ-ই তাকে মুসলমানদের ওপর হামলা চালাতে উদ্ভূত করেছে। রায় ঘোষণার আগে জুরি বোর্ডের আটজন নারী ও চার জন পুরুষ সদস্য প্রায় এক ঘণ্টা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন।

পরে তারা ওসবর্নকে দোষী সাব্যস্ত করেন। রায়ে আদালত জানান, ওসবর্ন ওই হামলা পরিকল্পনামাফিক চালিয়েছে। তবে শাস্তি থেকে বাঁচতে সে একটি কাহিনী দাঁড় করিয়েছে, যাতে জুরিরা প্রভাবিত হন। বিচারকরা আরও বলেন, আমরা নিশ্চিত ছিলাম এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা। এখন তাকে পরিণাম ভোগ করতে হবে।

সূত্র: দ্য মেইল
এমজে/