ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

বাংলাদেশি হত্যা, ব্রিটিশ নাগরিকের ৪৩ বছরের জেল

প্রকাশিত : ০৪:০৫ পিএম, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ১১:১৩ পিএম, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শনিবার

লন্ডনের মসজিদের কাছে মুকাররম আলী (৫১) নামে এক বাংলাদেশি মুসল্লিকে ভ্যান চাপা দিয়ে হত্যার দায়ে এক ব্রিটিশ নাগরিকের ৪৩ বছরের কারাদণ্ড হয়েছেন। যুক্তরাজ্যের একটি আদালত ড্যারেন ওসবর্ন নামে ওই ব্যাক্তির ৪৩ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন।

শুক্রবার লন্ডনের ওই আদালতের বিচারক রায় ঘোষণার সময় এই ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মৌলবাদের দিকে ঝুঁকে পড়া ওসবর্ন ইসলাম বিদ্বেষ থেকেই ওই হামলা চালিয়েছিলেন।

বিবিসি জানায়, এই সাজা অনুযায়ী ড্যারেন ওসবর্নকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

রায়ের আগে লন্ডনের উলউইচ ক্রাউন আদালতে ওসবর্ন দাবি করে, হামলার একেবারে শেষ মুহূর্তে ডেভ নামের এক ব্যক্তি গাড়ির চালকের আসনে ছিল। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা ওসবর্নকে বলতে শুনেন, আমি আমার দায়িত্বপালন করেছি। এখন আপনারা আমাকে হত্যা করতে পারেন। তবে ওসবর্ন কেন হঠাৎ করে বাম রাজনীতিতে আসেন, তা নিয়েও কৌতূহল দেখা দিয়েছে।

আদালতে ওসবর্ন জানায়, তিনি ব্রিটেনের গুরুত্বপূর্ণ বামপন্থী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ যেমন ইংলিশ ডিফেন্স লিগ টমি রবিনসন এবং ব্রিটেনের প্রথম নেতা পল গোল্ডিং এর আর্দেশ দীক্ষিত হয়ে তিনি ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ শুরু করেন। আর তাদের এই আদর্শ-ই তাকে মুসলমানদের ওপর হামলা চালাতে উদ্ভূত করেছে। রায় ঘোষণার আগে জুরি বোর্ডের আটজন নারী ও চার জন পুরুষ সদস্য প্রায় এক ঘণ্টা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন।

পরে তারা ওসবর্নকে দোষী সাব্যস্ত করেন। রায়ে আদালত জানান, ওসবর্ন ওই হামলা পরিকল্পনামাফিক চালিয়েছে। তবে শাস্তি থেকে বাঁচতে সে একটি কাহিনী দাঁড় করিয়েছে, যাতে জুরিরা প্রভাবিত হন। বিচারকরা আরও বলেন, আমরা নিশ্চিত ছিলাম এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা। এখন তাকে পরিণাম ভোগ করতে হবে। 

উল্লেখ্য, টেলিভিশনে প্রচারিত একটি ইসলাম বিদ্বেষী নাটক দেখার পর ইসলাম ধর্মের প্রতি ক্ষোভ-রাগ-ঘৃণা ও হিংসা জন্মায় ব্রিটিশ নাগরিক ড্যারেন ওসবর্নের (৪৮)। এরই প্রেক্ষিতে গত বছরের ১৯ জুন উত্তর লন্ডনের ফিন্সবুরি পার্কে মসজিদের কাছে মুসল্লিদের ভিড়ে গাড়ি উঠিয়ে দেয় ওসবর্ন। মসজিদমুখী মুসল্লিদের ওপর ওই ব্যক্তি ভ্যান চাপা দিলে মুকাররম আলী নামে এক বাংলাদেশি মুসল্লি নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন আরও ১২ জন। এ হামলায় নিহত মকররম আলীর গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সরুয়ালায়। মকররমের পরিবার দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করছিলেন লন্ডনে। ১২ বছর বয়সে তিনি পাড়ি জমান লন্ডনে। একটানা প্রবাস জীবন কাটিয়ে বিশ্বনাথের দৌলতপুরে বিয়ে করেন তিনি। কয়েক বছর পর স্ত্রীকেও লন্ডনে নিয়ে যান। সেখানে জন্ম হয় চার মেয়ে ও দুই ছেলের।

সূত্র: দ্য মেইল, বিবিসি

একে// এআর