আড়াই বছরের মধ্যে ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন
প্রকাশিত : ১০:৪৫ পিএম, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরেই দরপতন হচ্ছে পুঁজিবাজারে। মাঝে দুয়েকদিন সূচক বাড়লেও লেনদেনে কোনো উন্নতি দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার সূচক কিছুটা বাড়তে শুরু করলেও লেনদেন তলানীতে নেমে এসেছে। আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩০০ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা গত প্রায় আড়াই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৬ সালের ১১ জুলাই ডিএসইতে ২৭২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, পুঁজিবাজারে গত প্রায় দুই বছর ধরে লেনদেন ভালো হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ায় লেনদেন বেড়েছে। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে লেনদেন তলানীতে নেমে এসেছে।
এর কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। ফলে অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার ছেড়ে দিয়েছেন। যার প্রভাব পড়েছে বাজারের সূচক ও লেনদেনে। এখন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লেনদেন থেকে দূরে রয়েছেন। ফলে লেনদেন তলানীতে নেমে গেছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার নিশ্চয়তা না আসা পর্যন্ত পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা ফিরে আসার সম্ভাবনা কম। কারণ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এখন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে ভয় পাচ্ছেন। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে ভয় পাচ্ছেন।
তবে বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার রায় উপলক্ষ্যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে যেন বাজারে পতন না হয় সেজন্য সক্রিয় ছিল দুয়েকটি মার্চেন্ট ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) বাজারে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিল।
বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে ৩০০ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিন থেকে প্রায় ৯৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা কম। আগেরদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৩৯৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
ডিএসইর লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৩৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৫টির, কমেছে ৯০টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬০টি কোম্পানির শেয়ার দর।
আজ ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ২৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ৩৮৯ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ২২৫ পয়েন্টে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ৪৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৮ হাজার ৪৪৪ পয়েন্টে।
আইডিএলসির দৈনন্দিন বাজার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার বাজারে সূচক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছে ব্যাংকিং খাত। এ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বেড়েছে গড়ে প্রায় ১ শতাংশ।
এছাড়া বস্ত্র খাত এবং ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামও বেড়েছে গড়ে প্রায় দশমিক ৬০ শতাংশ করে। লেনদেনের ক্ষেত্রেও শীর্ষে ছিল ব্যাংকিং খাত। এ খাতের কোম্পানিগুলোতে লেনদেন হয়েছে ৬৪ কোটি টাকা। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় সাড়ে ২১ শতাংশ। ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিগুলোতে লেনদেন হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের সাড়ে ১৫ শতাংশ।
আর/টিকে