তারকালাপে শুভ-তানহা
বেয়াই-বেয়াইনের রোমান্স দেখবে দর্শক
প্রকাশিত : ০২:০০ পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০৬:৫০ পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার
তানহা তাসনিয়া। ঢালিউডের নতুন নায়িকা। আজ দিনটি শুধুই তার। কারণ আজ দেশের সিনেমা হলগুলো দখল করে আছেন তিনি। আজই মুক্তি পেয়েছে ‘ভালো থেকো’ সিনেমা। সিনেমার তানহার বিপরিতে অভিনয় করেছেন ঢাকাই সিনেমার স্মার্ট ও হ্যান্ডসাম হিরো আরিফিন শুভ। একটা সময় এই শুভই ছিলো তানহার স্বপ্নের নায়ক। মনে মনে স্বপ্ন দেখতেন, কোনো একদিন শুভর বিপরীতে সিনেমাতে অভিনয় করবেন তিনি। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে নায়িকার। স্বপ্নের নায়কের সঙ্গে জুটি হয়ে দর্শকদের সামনে এসেছেন সময়ের সম্ভাবনাময়ী নতুন এই চিত্রনায়িকা।
অপরদিকে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ খ্যাত নায়ক আরিফিন শুভ ফিরে আসছেন দর্শকদের কাছে পুরোপুরি ভিন্ন রূপে। অ্যাকশন হিরো থেকে শতভাগ রোমান্টিক হিরো। দুজনই আজ সিনেমা হলে দর্শকদের আমোদিত করবেন ‘ভালো থেকো’ সিনেমা দিয়ে।
ভালোবাসা দিবসকে সামনে রেখে মুক্তি পাওয়া আলোচিত এই সিনেমা নিয়ে একুশে টেলিভিশন (ইটিভি) অনলাইন’র মুখোমুখি হয়েছেন দুই তারকা। তাদের সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- সোহাগ আশরাফ
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : কেমন আছেন?
আরিফিন শুভ : ভালো আছি। সিনেমার প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত আছি। এছাড়াও দুই বাংলায় একই সময় ব্যস্ততা বেড়েছে।
তানহা তাসনিয়া : অনেক ভালো। কারণ আজ আমি পৃথীবির সব চেয়ে সুখি মানুষ। দর্শকদের ভালো রাখতে আজ আমি ও শুভ সিনেমা হলে আসছি।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : ‘ভালো থেকো’ সিনেমা নিয়ে আপনাদের প্রত্যাশা কেমন?
আরিফিন শুভ : সিনেমা যখন মুক্তির সময় হয়ে আসে তখন প্রত্যাশাটা অনেক বেড়ে যায়। সত্যি কথা বলতে ‘ভালো থেকো’ সবাইকে ভালো রাখবে আশা করি।
তানহা তাসনিয়া : আমার প্রত্যাশাটা অনেক বেশি। আমি আমার স্বপ্নের নায়কের সঙ্গে পর্দায় আসছি। তবে এটুকু বলতে পারি দর্শক আরও একটি ভালো সিনেমা পাচ্ছে। আমার তো মনে হয় ভালো একটি কাজ হয়েছে। কারণ আমার খুব ইচ্ছে ছিলো জাকির হোসেন রাজু স্যার ও আরিফিন শুভর সঙ্গে কাজ করার। আমার বিগত দুটি সিনেমাতে নিজেকে প্রমাণ করার তেমন কোনো সুযোগ পাইনি। এ সিনেমাতে কিছুটা হলেও পেয়েছি। এ সিনেমাতে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সো আশা তো করতেই পারি ভালো কিছু হবে।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : সিনেমাটির গল্প সম্পর্কে একটু জানতে চাই। আপনাদের চরিত্র কি?
আরিফিন শুভ : ভালো থেকো’ একটি পারিবারিক গল্পের সিনেমা। ইদানিংকালে এই ধরণের গল্পে খুব একটা সিনেমা হয় না। এতে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি মেসেজ রয়েছে। আমি সাধারণত এমন সিনেমাতে কাজ করার চেষ্টা করি, যেখানে সমাজ ও মানুষের জন্য শিক্ষণীয় কোনো মেসেজ থাকে। আবার শুধু মেসেজ থাকলেই কাজ করি, এমন নয়। সেই মেসেজটা যেন বিনোদনের মাধ্যমে দেওয়া হয়, সেটাও খেয়াল করি। ‘ভালো থেকো’ সিনেমাতে ঠিক তেমনই হয়েছে। এটি একটি মানবিক গল্প। মানবতার গল্প। হল থেকে বের হবার পর মানুষের বিবেককে জাগ্রত করবে।
আর চরিত্রের কথা যদি বলি তবে বলবো- আমি পরিবার ও সমাজের একটি সাধারণ চরিত্র বহন করেছি।
তানহা তাসনিয়া : আমি বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ইনোসেন্ট একটা মেয়ে, নাম নীলা। পরিবারের অনেক আদরের মেয়ে। আমার মাঝে বাঙালি মেয়ে নিজেদের খুঁজে পাবেন। আর ব্যক্তি জীবনে আমি যেমন এ সিনেমার চরিত্রটাও ঠিক তেমনই। পরিবারের খুব আদরের একটা মেয়ে তবে অনেকটা রাগী ও জেদি। নিজের সঙ্গে মিল রয়েছে বলেই এই চরিত্রে কাজ করতে বেশি আগ্রহ পেয়েছি। তাছাড়া ভালো গল্প ও চরিত্র কেউই মিস করতে চায় না। চরিত্রগত জায়গা থেকে এক্সপেরিমেন্ট করার খুব ইচ্ছে ছিলো। সেই সুযোগ এই সিনেমাতে পেয়েছি।
সিনেমাটিতে শুভ আর আমি বেয়াই-বেয়াইন। পর্দায় বেয়াই-বেয়াইনের রোমান্টিকতা দেখবে দর্শক।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : সিনেমাটিতে এমন কি আছে যার টানে দর্শক হলে গিয়ে এটি দেখবে?
আরিফিন শুভ : তাহলে আমি এই সিনেমার মূল বক্তব্যটা বলি। আমরা বিনোদনের মাধ্যমে একটা গল্প বলতে চেয়েছি। একটা মানুষের কর্মে যে পরিচয়টা হয় সেটাই কি তার বড় পরিচয়? নাকি তার জন্মসূত্র বা জন্মপরিচয় অর্থাৎ সে কোথা থেকে এসেছে সেটাই তার বড় পরিচয় হওয়া উচিৎ? এমনই একটি প্রশ্ন সিনেমাতে আছে। আমার বিশ্বাস দর্শকদের কাছে এই বিষয়টি খুব নাড়া দেবে। আমরা সামাজিক যে দৃষ্টি ভঙ্গি নিয়ে আছি, আমরা যে ভুলটা সব সময়ই করি তা ধরিয়ে দিতে চেয়েছি সিনেমাটির মাধ্যমে। কর্মই মানুষের আসল পরিচয় হওয়া উচিত। মানুষটি কোথা থেকে উঠে এসেছে? তার জন্মপরিচয় কি? এটা বড় বিষয় নয়।
মনে করেন একজন মানুষ অনেক বড় একটি পরিবার থেকে এসেছে কিন্তু তার কর্ম অনেক নিকৃষ্ট। এটা কি ভালো? নাকি ছোট বা নিচু একটা পরিবার থেকে এসেও কেউ ভালো কিছু করেছে সেটা ভালো? কোন পরিচয়টা গ্রহণযোগ্য হবে?
তানহা তাসনিয়া : অনেক বড় বাজেটের সিনেমা, ভালো পরিচালক দ্বারা নির্মিত। পারিবারিক বন্ধনের সুন্দর একটি গল্প পাবেন এ সিনেমায়। ভালো থেকো মৌলিক গল্পের সিনেমা। পরিবারকে নিয়ে দেখার সিনেমা। সিনেমা শিল্পের এ দুর্দশায়ও ‘ভালো থেকো’ আমার মনে হয় সবকিছু উৎরে যাবে। ভালো থেকো মানুষকে ভালো রাখবে।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : দর্শক একজন অ্যাকশ হিরোকে দেখেছে ‘ঢাকা অ্যাটাক’র মাধ্যমে। এবার রোমান্টিক হিরোকে দেখতে যাচ্ছে। কিভাবে নিজেকে পরিবর্তন করলেন?
আরিফিন শুভ : সত্যি কথা যদি বলি-আপনি দেখবেন যে এই কাজটি আগেও আমি করেছি। ‘মুসাফির’ সিনেমাটি ছিলো একেবারেই অ্যাকশ সিনেমা, আর ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ ছিলো রোমান্টিক মুভি। তাই বলবো যে এ ধরণের কাজ আমার জন্য নতুন না। নিজেকে পরিবর্তনের এক্সপেরিমেন্ট আমি আগেও করেছি। ‘ঢাকা অ্যাটাক’ এতো বড় একটি সফলতা পেয়েছে যার কারণে সবার হয়তো চোখে পড়ছে বিষয়টি। কিন্তু আমি বলবো-এক ধরণের কাজ যদি বারবার করি তবে দর্শক বিরক্ত হয়ে যাবে। তাই নিজেকে প্রতিনিয়ত ভিন্ন ভিন্ন ভাবে তুলে ধরতে চাই।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : আপনিতো এর আগেও সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তবে আরিফিন শুভর সঙ্গে জুটি হয়ে এই প্রথম। কেমন লাগছে?
তানহা তাসনিয়া : শুভ এ সময়ের একজন জনপ্রিয় তারকা। তার সঙ্গে কাজ করতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে। সে অনেক আন্তরিক। আমাকে কাজের ব্যপারে খুব সহযোগিতা করেছে। কখনও মনেই হয়নি যে আমি তার সঙ্গে এই প্রথম কাজ করেছি।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : আরিফিন শুভকে এর আগে অনেক নায়িকার সঙ্গে দর্শক দেখেছে। তানহার সঙ্গে এই প্রথম। দুজনের রসায়নটা কেমন হয়েছে বলে মনে করেন?
আরিফিন শুভ : আমি বললে তো হবে না। দর্শক বলবে কেমন হয়েছে। আমি আর তানহা যেভাবে কাজ করেছি আমাদের দুজনের জায়গা থেকে কোন অবহেলা ছিলো না। আমি দর্শকদের এই অনুরোধটাই করবো যে তারা হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখুক।
তাছাড়া তানহা নতুন। ওর সঙ্গে কাজটা এনজয় করেছি। সে খুব চেষ্টা করেছে কাজটা ভালো করার জন্য। সেটা স্ক্রিনেও বোধহয়ফুটে উঠেছে। আমাদের মধ্যেও যথেষ্ট ভালো বোঝাপড়া ছিল। ও যাতে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজটা করতে পারে সেজন্য আমিও যথেষ্ট সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : আশা রাখি ‘ভালো থেকো’ দর্শকদের ভালো কিছু উপহার দিবে। আপনাদের জন্য শুভ কমনা। ভালো থাকবেন।
আরিফিন শুভ : একুশে টেলিভিশনকেও অনেক ধন্যবাদ। দর্শকদের বলবো পরিবারের সবাইকে নিয়ে সিনেমা হলে এসে ‘ভালো থেকো’ দেখুন। আশা করি মন ভালো হবে।
তানহা তাসনিয়া : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। দর্শকদের বলতে চাই সিনেমা হলে গিয়ে বাংলা চলচ্চিত্র দেখুন। কারণ আপনারা হলে গিয়ে সিনেমা দেখলেই ভালো সিনেমা আসবে।
এসএ/