ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

‘ওরা আমার মুখের কথা কাইরা নিতে চায়’

প্রকাশিত : ১১:০৭ পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ১০:৩১ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শনিবার

‘ওরা আমার মুখের কথা কাইরা নিতে চায়। ওরা কথায় কথায় শিকল পরাই আমার হাতে পায়ে।’ ‘এক একটি বাংলা অক্ষর, এক একটি বাঙালির জীবন’।

এসব কালজয়ী কথামালা যথাক্রমে আব্দুল লতিফ ও শিল্পী কামরুল হাসানের। তাদের কালজয়ী এ বাণীগুলো উঠে এসেছে একুশের গ্রন্থমেলার ক্যানভাস ও বিলবোর্ডে। নন্দিত কবি, লেখক, মনিষী ও শিল্পীদের এ বাণীগুলো মেলার দর্শকদের আকর্ষণ করছে।

মেলাঙ্গনে বিশজন কবি-সাহিত্যিকের কালজয়ী চরণ লেখা সাড়ে তিনশ’ বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশের ফুটপাতে শতাধিক বিলবোর্ডের বাণীগুলো পড়ার জন্য লোকজন ভীড় করছে।

এ ছাড়া বাংলা একাডেমির ভেতরে ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার বিভিন্ন সারিতে স্থাপন করা হয়েছে প্রায় দুইশ’ ক্যানভাস। মেলায় আগন্তুকরা চলতি পথে বা দাঁড়িয়ে এগুলো পড়ছেন। অনেকে আবার ক্যামেরা বন্দী করে রাখছেন।

ভাষা আন্দোলন ও শহীদদের ওপর লেখা কালজয়ী অন্যান্য বাণীগুলো হচ্ছে, ভাষা সৈনিক ও শিল্পী আবদুল লতিফের ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায়’, আবদুল গাফফার চৌধুরীর ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’, কবি সুফিয়া কামালের ‘মুখে ফুটেছে ভাষা, ভীরু কণ্ঠে বেজে উঠে গান, অতুল প্রসাদ সেনের ‘মোদের গরব মোদের আশা, আমরি বাংলা ভাষা’, গাজীউল হকের ‘স্মৃতির সৌধ ভাঙ্গিয়াছে, জেগেছে পাষাণের প্রাণ। এ ছাড়াও আলাউদ্দিন আল আজাদ, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহসহ বিশজন লেখকের ভাষা আন্দোলনের ওপর লেখা বিলবোর্ডে স্থান পেয়েছে।

একুশে গ্রন্থমেলা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, ভাষা শহীদ ও ভাষা আন্দোলনের বীর সৈনিকদের ওপর আমাদের কবি সাহিত্যিকরা কালজয়ী লেখা লিখেছেন। সেই সব গান-কবিতা, লেখা নতুন প্রজন্মসহ সব বয়সের মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, মহান একুশে গ্রন্থমেলা ভাষা আন্দোলনের কালজয়ী কবিতা, গান, সাহিত্যের বাণীতে সগর্বে সেজেছে এবার। পুরো মেলাঙ্গণে এসব বাণী সম্বলিত বিলবোর্ড দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করছে। লেখাগুলো পড়তে হঠাৎ বিলবোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে অগণিত মানুষ।

মেলার তথ্য কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা মিসেস পপি বলেন, মেলার নবম দিন আজ শুক্রবার পর্যন্ত মোট ৯৩০টি বই এসেছে। যার মধ্যে আজই এসেছে ১৩৬টি। এসব বইয়ের মধ্যে প্রবন্ধের সংখ্যাই বেশি ।

মেলায় ড. আনু মাহমুদের ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ: শৈল্পিক-প্রামাণিক ঐতিহ্য’ এনেছে ন্যাশনাল পাবলিকেশন্স। য়ারোয়া বুক কর্ণারের স্টলে ইসহাক খানের উপন্যাস ‘দূরের ভুবন, হালিম আজাদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘গঙ্গাধারা’, আসলাম সানীর ‘আমীরুলনামা, আসাদুজ্জামান আসাদের ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম, বাদল চৌধুরীর ‘বাংলাদেশের সাত বীরশ্রেষ্ঠ, মওলায় এসেছে আনোয়ারা সৈয়দ হকের‘ শূন্যতার সাথে নৃত্য, হাসান আজিজুল হকের রচনাসমগ্র।

শুক্রবার ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় সকাল ১১টায়। তবে শিশুকিশোরদের চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা শুরু হয় সকাল সাড়ে ৮টায়। সাড়ে ১১টায় ছিল ছোট্টমণিদের জন্য শিশুপ্রহর। মেলায় বিকেলে মূলমঞ্চে ছিল তিন শিল্পী বারী সিদ্দিকী, রশীদউদ্দিন ও উকিল মুন্সির ওপর আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

 

আরকে//