ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

লুসি হল্টকে লেখা শেখ রেহানার চিঠি

প্রকাশিত : ০৬:২৯ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ১০:৩৪ এএম, ২৯ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার

পুরো নাম লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট। জন্ম ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে। ৫৮ বছর ধরে বাংলাদেশে আছেন। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের শুশ্রূষা দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা ফিরে গেছেন। কিন্তু লুসির ইচ্ছা, এ মাটিতেই দেহ রাখবেন। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন কেউ নেই এখানে তাঁর। বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে থাকেন তিনি।
বাংলাকে ভালোবেসে, বাংলার মানুষের সেবা করে পার করেছেন ৫৮ বছর। দুঃখ এই—দেশটির নাগরিকত্ব পাননি। সরকার অবশ্য তাঁর ভিসা ফি মওকুফ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য বিজয় দিবসে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ তাঁকে সম্মাননা দিয়েছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সঙ্গে লুসি হল্টের ছিল নিবিড় যোগাযোগ। যেটির প্রমাণ মেলে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ মেয়ে শেখ রেহানার লেখা এক চিঠিতে।
ওই চিঠিতে শেখ রেহানা লিখেছেন, আপনার লেখা দুটো চিঠি ও পারসেল মা (ফজিলাতুন্নেছা মুজিব) পেয়েছেন। শুধু সময়ের অভাবে চিঠির উত্তর দিতে পারেন নাই। অনেক ধন্যবাদ আপনার উপহারের জন্য।


১৯৬০ সালে লুসি বাংলাদেশে আসেন। যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়ানোর কাজ নেন। এরপর থেকে ঘুরেফিরে বাংলাদেশেই আছেন। যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে কাজ করেছেন তিনি। অবসরে গিয়েছেন ২০০৪ সালে। ফিরে এসেছেন বরিশালে। মিশন প্রাঙ্গণে একটি ছোট্ট টিনের ঘরে তাঁর থাকার ব্যবস্থা। সেখানে আসবাব বলতে ছোট একটি কাঠের চৌকি আর কাঠের ছোট দুটি টেবিল। পাশে একটি তাকে কিছু বই ও পুরনো ডায়েরি।
যশোর ক্যাথলিক চার্চ স্কুলে ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন লুসি ১৯৭১ সালে। যুদ্ধ শুরু হলে চার্চের সহকর্মীরা খুলনা চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু লুসি যুদ্ধাহতদের সেবা করার মানসে যোগ দেন যশোরের ফাতেমা হাসপাতালে। এরপর থেকে লুসি এদেশেই রয়ে গেছেন।
লুসি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে আমি এতটাই শ্রদ্ধা করতাম যে ১৯৭২ সালে আমি নিজ হাতে ডাইনিং টেবিলের ম্যাট বানিয়ে তাঁর স্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ রেহানা মায়ের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফিরতি চিঠি দিয়েছিলেন। লুসি বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখতে পারায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি।’
 / এআর /