ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

‘মনে আনন্দ দেওয়ার মতো লেখাই পারে তরুণদের বইমুখী করতে’

প্রকাশিত : ০১:০২ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ১২:৪০ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সোমবার

সেলিম আজাদ চৌধুরী

সেলিম আজাদ চৌধুরী

শিক্ষাজীবন শেষে নানা প্রয়োজনে মার্কিন মুলুকে পাড়ি জমান লেখক সেলিম আজাদ চৌধুরী। সেখানেই কেটেছে পেশায় ফার্মাসিস্ট এই কবি ও লেখকের জীবনের দীর্ঘ সময়। প্রবাস জীবনে অবলোকন করেছেন অনেক কিছু। সম্মুখীন হয়েছেন নানা ঘাত-প্রতিঘাতের। সেই অভিজ্ঞতার সঙ্গে ফেলে আসা জীবনের স্মৃতি শাণিত করেছে লেখকসত্তাকে।

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে লিখেছেন ভ্রমণকাহিনী ‘তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে’ ও উপন্যাস ‘কোন কূলে আজ ভিড়ল তরী’। অমর একুশে গ্রন্থমেলার বলাকা প্রকাশনীতে পাওয়া যাচ্ছে বই দুটি।

লেখক সেলিম আজাদ চৌধুরী তার বাস্তব অভিজ্ঞতা, সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে নিজের ভাবনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন একুশে টিভি অনলাইনের সঙ্গে। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান

একুশে টিভি অনলাইন : ‘তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে’ ও উপন্যাস ‘কোন কূলে আজ ভিড়ল তরী’  কোন পেক্ষাপট নিয়ে  লেখা ?

সেলিম আজাদ চৌধুরী : দুটো বইয়ের মধ্যে উপন্যাসের পটভূমি বেশ বড়। সাতচল্লিশের দেশভাগের আগের সময় থেকে সাম্প্রতিককাল পর্যন্ত বিস্তৃত প্রেক্ষাপট। পটভূমির তুলনায় বইটি যে জায়গা নিয়েছে তা অপেক্ষাকৃত কম। আর ভ্রমণকাহিনীতে যুক্তরাষ্ট্রের নানা স্থানে ঘোরাঘুরির বর্ণনার পাশাপাশি উঠে এসেছে অভিবাসী জীবনের নানা দিক।

বইয়ের মধ্যে একইসঙ্গে একজন ভ্রমণপিয়াসু এবং একজন সমাজ নিরীক্ষককে খুঁজে পাওয়া যায়। সমাজে মানুষের পাওয়া না পাওয়ার যে গল্প তা অতি প্রাঞ্জল ভাষায় উঠে এসেছে।

একুশে টিভি অনলাইন : বর্তমানে  কি নিয়ে ব্যস্ত আছেন ?

সেলিম আজাদ চৌধুরী : বর্তমানে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে খন্ডকালীন শিক্ষকতা করছি। আগামী গ্রন্থমেলায়ও নতুন বই নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়ে এখন থেকেই কাজ শুরু করেছি। পাঠদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে একটি ছোট লিখা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। তবে এখন গল্পটির নাম নির্ধারণ করা হয়নি।

একুশে টিভি অনলাইন : আপনার মোট কতটি বই প্রকাশিত হয়েছে এবং পাঠক জনপ্রিয়তায় শীর্ষ ছিল কোনটি?

সেলিম আজাদ চৌধুরী :  এ যাবত ৫ টি বই বই লেখা হয়েছে। ১টি কবিতা ও চারটি ভ্রমণকাহিনী ও উপন্যাস। প্রতিটা বই পাঠকের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এবারের বই মেলাতে প্রবাসে জীবনের অভিজ্ঞতা ও নিয়ে লিখেছি, ‘কোন কূলে আজ ভিড়ল তরী, তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে। গত গ্রন্থ মেলায় প্রকাশিত হয়েছে ঘূর্ণি, সুড়ঙ্গ। বইদুটি ইতোমধ্যে পাঠক হৃদয়ে স্থান দখল  করছে।

একুশে টিভি অনলাইন : আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি ?

সেলিম আজাদ চৌধুরী : পাঠকের চাহিদা মাথায় রেখে বই, উপন্যাস, গল্প লিখার সঙ্গে সঙ্গে আগামীতে  মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি গবেষণা ভিত্তিক উপন্যাস লিখার পরিকল্পনা আছে। একাত্তরের  মুক্তিযুদ্ধার সমকালীন পেক্ষাপট বইয়ের  মূলবিষয় হবে। এছাড়া ছোট গল্প ও কবিতা এবং উপন্যাস লেখার পরিকল্পনা তো রয়েছেই।

একুশে টিভি অনলাইন  : তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বই পড়ার প্রবণতা কেমন ? 

সেলিম আজাদ চৌধুরী : বর্তমান তরুণ প্রজন্মের দৃষ্টি মোবাইল, টিভি, ফেসবুক ও ইন্টারনেটে। ওইসব মাধ্যমেই তারা বেশি সময় পার করছে।  তারা গভীর মনযোগ  দিয়ে বই পড়তে চায় না। তবে অমর একুশে গ্রন্থ মেলা উপলক্ষে প্রতিবছর একটি জাগরণ সৃষ্টি হয়। যার মধ্যে কিছু  নতুন পাঠক তৈরি হয়। এরাই হলো আমাদের লেখক পাঠকদের ভবিষ্যৎ।

একুশে টিভি অনলাইন :  বর্তমান তরুণদের বই পিপাসু করতে আপনার পরামর্শ কি ?

সেলিম আজাদ চৌধুরী :  বর্তমান তরুণ প্রজন্ম অধিকাংশই ইন্টারনেট নির্ভর এটা আমি ঠিক ওভাবে বলবো না। বিজ্ঞানের কাছে সবাইকে আত্মসমর্পণ করতে হয়। নতুন কোন প্রযুক্তি আসলে মানুষ এটা গ্রহণ করবে এটা স্বাভাবিক। বিজ্ঞানকে অস্বীকার করা চলবে না। তবে পাঠকের মনে আনন্দ দেওয়ার মতো বই বের  করতে পারলে আমরা অবশ্যই তরুণদের বইমুখী করতে পারবো। এছাড়া অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। ইন্টারনেটে কি করছে, কতটুকু সময় দিচ্ছে  তা পিতামাতাকে লক্ষ রাখতে হবে।

একুশে টিভি অনলাইন:  ইন্টারনেটর  অপব্যবহারের ফলে  শিক্ষর্থীরা বিভিন্ন প্রকার অররাধমুলক কমকাণ্ড জড়িয়ে পড়ছে। এ থেকে  মুক্তি পেতে কী করা যেতে পারে?

সেলিম আজাদ চৌধুরী : শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে আগে পিতামাকে সচেতন হতে হবে। বাংলার সাহিত্য সংস্কৃতি লালন করতে হবে। ছেলে মেয়েরা যাতে বই পড়তে আগ্রহী হয় এবিষয়ে পিতামাতাকে গুরু দায়িত্ব পালন করতে হবে।  

একুশে টিভি অনলাইন : আমাকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

সেলিম আজাদ চৌধুরী : একুশে পরিবারের প্রতি শুভ কামনা।

/ এআর /