কেন্দ্র থেকে হলে যাওয়ার সময় প্রশ্নফাঁস হয় : ডিবি
প্রকাশিত : ০৯:১৫ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ রবিবার
পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে হলে যাওয়ার সময়ে কিছু অসাধু চক্র প্রশ্নের ছবি তুলে ফাঁস করে বলে দাবি করেছেন গোয়েন্দা পুলিশর (ডিবি)। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে শনিবার দিনভর চালানো অভিযানে ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি।
প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িতরা হলেন, আপন তিন ভাই আমান উল্লাহ, বরকত উল্লাহ, আহসান উল্লাহ। তারা চাঁদপুর থেকে ঢাকায় এসে ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডের একটি বাসায় বসবাস শুরু করেন। এসএসসি পরীক্ষা শুরুর কয়েক দিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘোষণা দেন ‘উল্লাহ বাহিনী’। তাঁরা ফেসবুকে ঘোষণা করেন, তাদেরকে কেউ ধরতে পারবে না, ধরার সামর্থ্যও নেই।
গ্রেপ্তার হওয়া বাকি ১১ জন হলেন রাহাত ইসলাম, সালাউদ্দিন, সুজন, জাহিদ হোসেন, সুফল রায় ওরফে শাওন, আল আমিন, সাইদুল ইসলাম, আবির ইসলাম, শাহাদত হোসেন, ফাহিম ইসলাম ও তাহসিব রহমান।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজে ব্যবহৃত ডিভাইস, যেমন: এইচপি ল্যাপটপ, স্যামসাং, নকিয়া, সিম্ফোনি, লাভা, হুয়েই, লেনোভো, আইফোন ব্রান্ডের মোট ২৩টি মুঠোফোন ও নগদ ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ এবং ২৩ টি স্মার্টফোন এবং ২ লাখ ২ হাজার ৪০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আবদুল বাতেন গণমাধ্যমকে বলেন, আসামিরা পরীক্ষার আগের দিন ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁস করে শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করে। পরের দিন পরীক্ষা শুরুর ৩০ থেকে ৪০ মিনিট আগে কেন্দ্র থেকে বিভিন্নভাবে প্রশ্ন সংগ্রহ করে। সেগুলো ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার, ইমো এবং হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে শিক্ষার্থীদের কাছে এগুলো ছড়িয়ে দেয়া হয়। এর বিনিময়ে তারা বিকাশ ও রকেটের মাধ্যমে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা আদায় করে।
তিনি আরও বলেন, প্রশ্ন যখন পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে হলে যায় ওই সময়টাতে কেউ এর ছবি তুলে আসামিদের পাঠায়। এই সময়টা পরীক্ষার ৩০-৪০ মিনিট আগে। এই সময়ের আগে যেসব প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কথা শোনা যায় সেগুলো ভুয়া প্রশ্ন। তৃণমূল পর্যায় থেকে অর্থাৎ পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে কারা প্রশ্নের ছবি তুলে ফাঁস করছে, কারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত তাদের কাছে যাওয়া খুব কঠিন।
আসামিরা যাদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করছে তাদের সুনির্দিষ্টভাবে কোনো নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওদের শত শত, হাজার হাজার চেইন। কখনো চট্টগ্রাম থেকে প্রশ্ন পাঠানো হয়, কখনো আরেক জেলা থেকে। তাদের শনাক্ত করা কঠিন।
কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন ফাঁস রোধের পরামর্শ দেন আবদুল বাতেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু শিক্ষার্থী নয়, পরীক্ষার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত প্রতিটি কর্মকর্তার মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ করলে সুফল পাওয়া যেতে পারে।
কেআই/টিকে