মস্তিষ্ক ক্ষুরধার রাখতে ক্ষুধার্ত থাকুন
প্রকাশিত : ১০:৪৮ এএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার
মানুষ বুড়ো হতে থাকলে মস্তিষ্কে যে পরিবর্তনগুলো ঘটে তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন অধ্যাপক ড. মার্ক ম্যাটসন। মতার গবেষণায় দেখা গেছে উপবাস বা রোজা আলঝেইমার (স্মৃতিভ্রংশের রোগ। এ রোগ ৬৫ বয়সের পরে সাধারণত হয়ে থাকে। এতে মানুষের মৃত্যু হয়। এটা ভালো হয় না।), ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রমের মতো বয়সজনিত রোগগুলো থেকে বাঁচাতে পারে একজন মানুষকে।
মার্ক ম্যাটসনের এ গবেষণায় একদল ইঁদুর ব্যবহার করা হয়েছে যাদের একসময় না একসময় আলঝেইমার হবেই। ম্যাটসন এদেরকে দুভাগে ভাগ করলেন। একভাগকে তিনি মাঝে মাঝে না খাইয়ে রাখতেন। আর অন্য ভাগকে নিয়মিতভাবে উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার এবং চিনি মেশানো পানি খাওয়াতে লাগলেন। দেখা গেল, যে ইঁদুরগুলোকে তিনি মাঝে মাঝে না খাইয়ে রাখতেন, অন্য ইঁদুরের তুলনায় অনেক পরে তাদের রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে এবং নতুন শেখা বা মনে রাখার মতো মস্তিষ্ককে ব্যবহার করে যে কাজগুলো করতে হয়, তা তারা ভালোভাবেই পারছে।
কম খাবার পাওয়া ইঁদুরগুলোর ক্ষেত্রে এই বিলম্বের পরিমাণ ছয় মাস থেকে এক বছর। মানুষের ক্ষেত্রে এটা ৫০ বছর বা ৮০ বছর বয়সে আলঝেইমার হবার মতো।
অন্যদিকে যে ইঁদুরগুলো হাই ফ্যাট খাবার এবং চিনিযুক্ত পানি খেয়েছে, তাদের মধ্যে খুব দ্রুত রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে। সেটা একজন মানুষ তার ৩০ বা ৪০ বছর বয়সে আলঝেইমারে আক্রান্ত হওয়ার মতো। না খেতে পাওয়া ইঁদুরগুলোর মস্তিষ্ক বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তাদের ব্রেনে নতুন নতুন নিউরোনের জন্ম হয়েছে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, না খেয়ে থাকা আর ব্রেনে নতুন নিউরোন সেল গজিয়ে ওঠার মধ্যে সংযোগটা আসলে হয়েছে অস্তিত্বের লড়াইয়ের কারণে। ম্যাটসন বলেন, আপনি যখন ক্ষুধার্ত থাকেন, তখন খাবারের উৎসের কথা মনে করা বা মনে রাখার জন্যে আপনাকে অনেক বেশি মাথা ঘামাতে হয়। আর তাতেই উদ্দীপ্ত হয় মস্তিষ্কের গ্রে ম্যাটার। তার মানে আপনি যদি ব্রেনকে ক্ষুরধার করতে চান, তাহলে আপনাকে ক্ষুধার্ত থাকতে হবে।
কেআই/এসএইচ/