ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বাবার মৃত্যুর ২ বছর পর যমজ শিশুর জন্ম!

প্রকাশিত : ০৮:৩৩ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার

মৃত্যুর দুই বছর পর যমজ বাচ্চার বাবা হলেন ভারতীয় এক নাগরিক। পুনে শহরের ইঞ্জিনিয়ার প্রথমেশ পাটিল জার্মানিতে পড়াশোনা করতে গেলে, সেখানেই তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। ব্রেইন টিউমার ও ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান ২০১৬ সালে। কিন্তু গত সোমবার তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান পৃথিবীতে আসে। শুনতে অবাক লাগলেও বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির কাছে এটি অসম্ভব নয়।

ক্যান্সারে মারা যাওয়া পুত্রের জমিয়ে রাখা শুক্রবীজ থেকেই ভারতের এক দম্পতি ফিরে পেয়েছেন ছেলেকে। তাঁদেরই এক আত্মীয়ার গর্ভে সেই শুক্রাণু থেকে তৈরি ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে এক যমজ (একটি পুত্র, একটি কন্যা)।

প্রথমেশ পাতিলের মা রাজশ্রী পাতিল জানান, চিকিৎসা শুরুর আগেই জার্মানির একটি স্পার্ম ব্যাঙ্কে জমিয়ে রাখা ছিল তার ছেলের শুক্রাণু। তা থেকেই আবারও ঘরে ফিরে এসেছে প্রিয় পুত্র।

২০১৬ সালে যখন প্রথমেশ মারা যায়, তখন যে শুধু তাঁর বাবা-মা-বোন এঁরাই ভেঙ্গে পড়েছিলেন, তা নয়। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়, প্রতিবেশী সকলেরই প্রায় একই মানসিক অবস্থা হয়েছিল সদা হাস্যময় ওই যুবককে হারিয়ে।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেশায় স্কুল শিক্ষিকা রাজশ্রী পাটিল বলেন, ছেলেকে হারানোর পরে আমরা তো বটেই, ওর বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় সকলেই খুব মিস করছিল। তবে আমি নিজে মনে করতাম ছেলে সামনেই আছে। ওর ঘরে শুধুই ওর ছবি রেখে দিয়েছি। সবসময়ে ছেলের একটা ছবি নিজের কাছেও রাখি। হঠাৎই একদিন মনে হয় ছেলের শুক্রাণু তো জমিয়ে রাখা আছে জার্মানিতে। সেটা দিয়েই তো কৃত্রিম প্রজননের সাহায্যে আমিই ফিরিয়ে আনতে পারি প্রথমেশকে। রাজশ্রী পাটিল বলছিলেন সেই শুক্রাণু দেশে এনে কৃত্রিমভাবে ভ্রূণ প্রজনন ঘটিয়ে তিনি নিজের গর্ভে প্রতিস্থাপন করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকরা তাতে সম্মতি দেননি। তখনই তাঁর এক সম্পর্কিত বোন এগিয়ে আসেন।

প্রথমেশের জমিয়ে রাখা শুক্রাণু থেকে ভ্রূণ তৈরি করে সেই আত্মীয়ার গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হয়, যাকে আই ভি এফ পদ্ধতি বলা হয়। সেই আত্মীয়ার গর্ভেই থেকে ১২ই ফেব্রুয়ারি জন্ম নিয়েছে এক যমজ।

রাজশ্রী পাটিল আরও বলেন, যমজ সন্তান ঘরে আসার পর থেকেই গোটা পাড়া- আত্মীয় স্বজন তাদের বাড়িতে আনন্দ উৎসবে মেতেছে। ছেলের শুক্রাণু থেকে জন্ম হলেও সদ্যজাতদের তিনি নাতি-নাতনী বলতে নারাজ। তিনি বলেন, এরা তো আমার ছেলে আর মেয়েই। তাই পুত্র শিশুটির নাম রেখেছি মৃত ছেলের নামেই- প্রথমেশ, আর কন্যা শিশুটির নাম পৃষা।

সূত্র: বিবিসি

একে/টিকে