মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ
১৩ রুশ নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এফবিআইয়ের
প্রকাশিত : ১২:৪৬ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শনিবার
দুই বছর আগের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার ১৩ নাগরিক হস্তক্ষেপ করেছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই)। এ ঘটনায় ওই ১৩ জন রুশ নাগরিক ও তিনটি প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করেছে সংস্থাটি। এ কোম্পানিগুলো ‘মার্কিন রাজনীতিতে অনৈক্যের বীজ বপন করার কৌশলগত লক্ষ্যে’ কাজ করছিল বলেও এফবিআইয়ের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আর্থিক জালিয়াতি এবং পাঁচজনের বিরুদ্ধে অন্যের পরিচয় ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর বাকিদের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
২০১৪ সালের মে মাস থেকে ‘প্রজেক্ট লাখতা’ নামে মার্কিন রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের কাজ শুরু করে অভিযুক্তরা, দাবি এফবিআইর। অভিযুক্তরা নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে মার্কিন নাগরিক সেজে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে প্রচার চালায়। পরিচয় পাল্টে তারা আর্থিক লেনদেন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, যেন সাধারণ আমরিকানরা তাদের ভিনদেশি না ভাবে।
এ রাশিয়ানরা বিভিন্নজনের কাছ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে অর্থও সংগ্রহ করে; ২০১৬-র নির্বাচনী প্রচারের সময় এ গোষ্ঠীর ব্যয় প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি ডলারে দাঁড়ায় বলেও অভিযোগ।
অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে তাদের লক্ষ্য ছিল হিলারি ক্লিনটন সম্পর্কে অপমানজনক তথ্য সরবরাহ। তারা টেড ক্রুজ ও মার্কো রুবিওর মতো অন্যান্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের প্রচারে কালি লাগানোর কাজেও নিয়োজিত ছিল। তাদের সমর্থন ছিল প্রথমে বার্নি স্যান্ডার্সের প্রতি এবং পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প।
অভিযোগের বিষয়ে শুক্রবার সকালে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিস্তারিত জানানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে হোয়াইট হাউজ।
দিনের শেষভাগে এক টুইটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়টি ‘কার্যত স্বীকার’ করে নিলেও এর সঙ্গে তার বা রিপাবলিকান শিবিরের কোনো ধরণের সংযোগ ছিল না বলেও ফের দাবি করেন।
এর আগে ২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মস্কোর হস্তক্ষেপ বিষয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার দাবিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখার কথা বলে আসছিলেন ট্রাম্প। এ নিয়ে কংগ্রেস ও বিচার বিভাগের তদন্তকেও বারবার একহাত নিয়েছিলেন তিনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও অন্যান্য কর্মকর্তারা সবসময়ই মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
রয়টার্স বলছে, এফবিআইয়ের রবার্ট মুলারের অভিযোগপত্রে রাশিয়ান নাগরিক ও কোম্পানিগুলোর নাম এলেও এদের সঙ্গে মস্কোর সরাসরি সংযোগের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট হন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই নির্বাচনের পর পরই রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠে। পরে তদন্ত শুরু করে মার্কিন প্রশাসন।
সূত্র: বিবিসি ও রয়টার্স।
একে// এআর