দি ডক্টরস (ভিডিও)
শিশুদের চোখের পাওয়ারের সমস্যা ও চিকিৎসা
প্রকাশিত : ০৩:৩৬ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০৩:৪৪ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শনিবার
চোখ একটি স্পর্শকাতর সংবেদনশীল অঙ্গ। যার সাহায্য আমার এই সুন্দর পৃথিবী দেখতে পাই। পৃথিবীর প্রকৃতি ও রূপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করি। এই চোখে দেখতে না পাওয়া মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় অভিশাপ। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাংলাদেশে প্রায় ১৮ লক্ষ লোক অন্ধ। যার প্রধান কারণ ছানিপড়া, দৃষ্টি শক্তি সমস্যা, নেত্রনালী প্রদাহ, কর্ণিয়ার আলসার বা চোখের ঘা, গ্লুকোমা, ইউভিয়াইটিস, চোখ টেরা, চক্ষুগোলকের বাইরের রোগ ইত্যাদি।
একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) ‘দি ডক্টরস্’ অনুষ্ঠানে আজকের আলোচনার বিষয়- ‘শিশুদের চোখের পাওয়ারের সমস্যা ও প্রতিকার’। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন- অধ্যাপক ডা. হারুন-উর-রশিদ (চক্ষু বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা আই কেয়ার হাসপাতালের চীফ কনসালট্যান্ট, বিশিষ্ট ল্যাসিক, ফ্যাকো ও গ্লোকমা বিশেষজ্ঞ)।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন- অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ।
অনুষ্ঠানটি শুনে লিখিত রুপে সাজিয়েছেন- সোহাগ আশরাফ
প্রশ্ন : বাংলাদেশে প্রচুর শিশু চোখের সমস্যায় ভুগছে। যার মধ্যে একটি সমস্যা খুব বেশি দেখা যায়। আর তা হচ্ছে- শিশুর চোখের পাওয়ার কমে যাওয়া। এই পাওয়ারের সমস্যাটা কেনো হয়?
উত্তর : আগে জানা দরকার- আমরা সাধারণত কিভাবে দেখি এবং কখন পাওয়ারে সমস্যা হয়? আমরা যখনই কোন জিনিসের দিকে তাকাই সেই জিনিস থেকে আলো এসে আমাদের চোখের কর্ণিয়া ভেদ করে ভিতরে অবস্থিত স্বচ্ছ প্রাকৃতিক লেন্সটি ভেদ করে চোখের সবচেয়ে পেছনের সংবেদনশীল যে স্তরটি রয়েছে যাকে আমরা রেটিনা বলে থাকি, এই রেটিনার একটি বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত হয়। আর তখনই আমরা কোন বস্তুর ছবি স্পষ্ট দেখতে পাই। কোন কারণে আলো যদি রেটিনাতে আপতিত না হয়ে রেটিনার সামনে বা পেছনে আপতিত হয় তখনই আমরা ঝাপসা দেখি। সাধারণ মানুষ এটাকে বলে চোখের পাওয়ারের সমস্যা।
এটি আবার তিন ধরণের।
১। হ্রস্ব বা ক্ষীণদ্রৃষ্টি (Myopia or short sight)
২। দীর্ঘদৃষ্টি বা দূরদৃষ্টি (Hypermetropia or long sight)
৩। বার্ধক্য দৃষ্টি বা চালশে (Presbyopia)
৪। বিষম দৃষ্টি বা নকুলান্ধতা (Astigmatism)
এ সমস্ত কারণেই শিশুরা সাধারণত ঝাপসা দেখে।
প্রশ্ন : অভিভাবক কিভাবে বুঝবে যে তার শিশু দৃষ্টি ত্রুটিতে ভুগছে?
উত্তর : এটি খুবই প্রাসঙ্গীক প্রশ্ন। আসলে চোখ তো মনের কথা বলে। চোখেরও কিন্তু একটা আলাদা ভাষা রয়েছে। যাকে আমরা বলি- চোখের ভাষা। বলতে পারেন এটি একটি শক্তিশালি মাধ্যম। যার মাধ্যমে আমরা নিজেকে প্রকাশ করতে পারি।
আসলে একটি শিশু যখন কথা বলতে শেখে সে কিন্তু তার চোখের ভাষাতেই তার অনুভুতি, তার ক্ষুধা, তার তৃষ্ণা, তার আবেগ এসব কিছুই সে প্রকাশ করে। বাবা-মায়েরা কিন্তু এসবই বুঝতে পারেন। বিশেষ করে মায়েরা।
যেমন ধরুণ লাল জিনিসের প্রতি শিশুরা খুব বেশি আকর্ষিত হয়। তেমন একটি খেলনা শিশুটির সামনে ধরা হলো, কিন্তু শিশুটি তার উপর আকর্ষিত হচ্ছে না বা ধরতে যাচ্ছে না। এলোমেলো ভাবে তাকাচ্ছে। তখনই বুঝতে হবে শিশুটি দৃষ্টি শক্তিতে ত্রুটি আছে। এছাড়া ধরুণ অন্ধকারে আলো জ্বালানো হলো কিন্তু বাচ্চা যদি নিরলিপ্ত থাকে তবে বুঝতে হবে সে চোখের সমস্যায় ভুগছে। অনেক সময় সরাসরি কর্ণিয়ায় দেখা যায় সাদা স্পট পড়ে আছে। এমন কি শিশু বড় হচ্ছে, হাঁটছে কিন্তু যেখানে সেখানে ধাক্কা খাচ্ছে বা পড়ে যাচ্ছে। আবার দেখা যায় শিশুটি টেলিভিশন দেখার সময় সামনে গিয়ে দেখছে। তাকে যতবার পেছনে নিয়ে আসা হচ্ছে সে আবারও সামনে গিয়ে দেখার চেষ্টা করছে। শিশুটি যখন আরও বড় হলো তখন স্কুলে গিয়ে ক্লাবে বোর্ডের লেখা দেখতে পারছে না। অথবা খাতায় লিখতে গিয়ে ভুল লিখছে। শুধু তাই নয়; চোখ পিটপিট করে দেখছে, মাথা বাকা করে দেখছে। এমনকি ঘনঘন মাথা ব্যথারও কথা বলে। এসব দেখলেই বাবা-মায়েরা বুঝবেন যে তার শিশুর দৃষ্টি সমস্যা রয়েছে।
এই সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে নিচের ভিডিওটি দেখুন :
এসএ/