ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

কমছে লালবাগ কেল্লার দর্শণার্থীর সংখ্যা

প্রকাশিত : ০৯:১৬ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সোমবার

ইট-পাথরের কর্মব্যস্ত নগরীর মানুষগুলো ছুটির দিনে প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান পরিদর্শণ করে। সময়ের সল্পতায় অনেকেই আবার রাজধানীর মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলোই পরিদর্শণ করে। রাজধানীর দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে রয়েছে পুরানো ঢাকায় অবস্থিত লালবাগ কেল্লা।

১৬৭৮ সালে নির্মিত বিশাল জায়গা জুড়ে কয়েকটি স্থাপনা রয়েছে এর ভেতরে। প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকে সামনের জায়গা জুড়ে কয়েকটি স্থাপনাই রয়েছে এর ভেতরে। প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকে একটু সামনে গেলেই চোখে পড়ে একটি সমাধি। সমাধিটি পরী বিবির। বাংলার সুবেদার শায়েস্তা খাঁ’র আদরের কণ্যা। রহমান বানু নামে পরী বিবির অপর নাম থাকলেও অনেকেই সেটা জানতো না। দেখতে পরীর মত সুন্দরী হওয়ায় নাম রাখা হয়েছিল পরী বিবি। পরী বিবির অকাল মৃত্যু হলে সুবেদার শায়েস্তা খাঁ দু:খে ‘অপয়া’ ভেবে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় লালবাগ কেল্লার। কেল্লার ভেতরে সমাধি করার পর পরী বিবির অন্তিম শয্যার ওপর যে সৌধ নির্মাণ করা হয় সেটা সৌন্দর্যময় একটি মুঘল স্থাপত্যের নিদর্শণ।

শায়েস্তা খাঁ সমাধি নির্মাণের জন্য সুদূর রাজমহল থেকে কালো ব্যাসল্ট পাথর ও জয়পুর থেকে এনেছিলেন সাদা মার্বেল পাথরের বড় বড় ফলক। এছাড়াও শ্বেত চন্দন কাঠ এনেছিলেন দরজা ও খিলান নির্মাণের জন্য। সমাধি ফলকগুলো রাখা হয় আস্ত। তার ওপর কাটা হয় নকশা। সমাধি সৌধের বিভিন্ন অংশ নির্মাণ করা হয় ফুলের নকশা খচিত জালি ও ফলক দিয়ে।

গত শতকের আশির দশকে কেল্লাটি যথা সম্ভব সংস্কার করে এর আগের রুপ ফিরিয়ে এনে শনিবার ছাড়া সপ্তাহের ছয় দিন দেশী দর্শনার্থীদের জন্য ১০ টাকা ও বিদেশী দর্শনার্থীদের জন্য ১০০ টাকা প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করে টিকিটের ব্যাবস্থা করে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। কেল্লাটি ১৯১০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে প্রাচীণ সংরক্ষিত স্থাপত্য হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে নেওয়া হয়।

রাজধানীর মিরপুর থেকে স্বপরিবারে ঘুরতে আসা ফায়সাল আহমেদ বলেন, শহরের ইট-পাথরের মধ্যে থাকতে থাকতে দম বন্ধ হয়ে আসে। তাই ছুটির দিনে এখানে ঘুরতে আসি। স্থানটি দেখতে অনেক সুন্দর হলেও এখানে স্থানীয় কিছু ছেলে আছে যারা খুবই বিরক্ত করে। অনেক সময় মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এখানে এসে অনেককে অপদস্ত হতে হয়। কখনো কখনো মেয়েদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করা হয়। কিছু বলতে গেলে উল্টা মারতে আসে। প্রশাসনের লোকদের চোখ ফাকি দিয়েই এরা এ সব কাজ করে বেড়ায়। এদের জন্য দিন দিন দর্শনার্থীর সংখ্যাও কমে যাচ্ছে।

কেল্লার পাশের এলাকার লোকমান নামে এক প্রবীণ ব্যক্তির সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আগে এখানে অনেক দর্শনার্থী আসতো কিন্তু এখন তাদের সংখ্যা অনেক কম। 

আরএ/এসি