ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে 

প্রকাশিত : ১১:৪৬ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সোমবার

কর কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বৃদ্ধি, জরিপ আর মনিটরিং এর মাধ্যমে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করার আহ্বান জানিয়েছেন সিনিয়র সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জনাব মো: মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, এনডিসি। 

আজ সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ২য় ১২ তলা সরকারি ভবনের ৩য় তলায় কর অঞ্চল-১, ঢাকার সম্মেলন কক্ষে এ দপ্তরের কর্মকর্তাদের ‘ক্যাপাসিটি ব্লিডিং প্রোগ্রাম’এর আওতায় উৎসে কর কর্তন বিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে এনবিআর সদস্য (অডিট ইন্টেলিজেন্স এন্ড ইনভেস্টিগেশন) জনাব মীর মুস্তাক আলী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কর অঞ্চল-১ এর কমিশনার মো: আলমগীর হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, কর অঞ্চল-১, ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার জনাব লুৎফুল আজিম।

করনেট সম্প্রসারণে কর অঞ্চল-১, ঢাকার নেওয়া পরিকল্পনার প্রশংসা করে চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের ট্যাক্স নেট বাড়ানোর অপার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে জরিপের মাধ্যমে যারা কর আওতার বাইরে রয়েছে তাদের করের আওতায় আনা, উৎসে করের মনিটরিং বৃদ্ধি করা যেতে পারে। কর অঞ্চল-১ এর নেওয়া পরিকল্পনা বাস্তবভিত্তিক এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে। কর আহরণে কর্মকর্তাদের মনোযোগী হতে হবে। কর অঞ্চল-১ এর মতো প্রত্যেক কর অঞ্চলকে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর উদ্ধাত্ত আহ্বান জানান চেয়ারম্যান। রাজস্ব আহরণ, করের নেট বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করে তিনি।

প্রশিক্ষণের আয়োজন করায় কর অঞ্চল-১ এর ভূয়সী প্রশংসা করে জনাব মো: মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, রেভিনিউ গ্রোথ বর্তমানে একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। প্রতিবছরই রেভিনিউ গ্রোথ বাড়ছে। এ রেভিনিউ গ্রোথ বাড়ানোর ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের কৃতিত্ব বেশি। কর্মকর্তাদের একাগ্রতা, দেশপ্রেম, সরকারের প্রতি সহমর্মিতার ফলে রেভিনিউ বাড়ছে। কর্মকর্তাদের নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে আরো সচেতন হওয়া এবং আইনের সকল বিধি বিধান মনে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এনবিআর চেয়ারম্যান প্রথম কর অঞ্চল-১ পরিদর্শন ও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। এজন্য কর অঞ্চল-১, ঢাকা এর পক্ষ থেকে স্বাগত জানিয়ে কমিশনার মো: আলমগীর হোসেন বলেন, মাননীয় এনবিআর চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমরা করদাতা, কর অফিসের মধ্যে অধিকতর আস্থার সর্ম্পক এবং রাজস্ববান্ধব পরিবেশ তৈরিতে কাজ করছি। ক্রমাগত বর্ধিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কর অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। সেজন্য কর অঞ্চল-১ কর কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছেন। উৎসে কর বিষয়ে পর্যায়ক্রমে স্টেকহোল্ডারদের বিশেষত উৎসে কর্তনকারী কর্তৃপক্ষের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা/সিএফও পর্যায়ের কর্মকর্তাগণকে উক্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এর মাধ্যমে উৎসে কর আহরণের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসবে, রাজস্ব বাড়বে।

আর্থিক উন্নয়নে আয়করের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আয়কর আহরণের অন্যতম স্বীকৃত ও সহজ পদ্ধতি হলো উৎসে আয়কর আহরণ। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছর কর অঞ্চল-১, ঢাকা মোট আয়কর আহরণের মধ্যে উৎসে কর্তিত আয়কর আহরণ করেছে ৯৩.১৪%। কর অঞ্চল-১, ঢাকার প্রায় ৯০ ভাগ রাজস্ব আহরণ হয় ৫৩এফ ধারায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতের উপর প্রদানকৃত সুদের বিপরীতে উৎসে কর কর্তন হতে। কর অঞ্চলটি ৫৩এফ ধারায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান (৮৬টি) হতে উৎসে কর এবং ৩০টি এয়ারলাইন্স হতে কর্তনকৃত ভ্রমণ কর আদায় করে থাকে।

ক্যাপাসিটি ব্লিডিং কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হলো-আয়কর অধ্যাদেশ, বিধি, এসআরও এবং বিভিন্ন সময় জারিকৃত প্রজ্ঞাপন সংগ্রহ, প্রতিনিয়ত হালনাগাদ থাকা সম্ভব হয় না। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে উৎসে কর কর্তন, সংগ্রহের হার, কর জমার কোড, কর্তিত আয়কর জমা প্রদানের সময়সীমা বিষয়ে নানা প্রশ্ন এবং অস্পষ্টতা রয়েছে। এসব বিষয়ে তদারকিতে এ কর অঞ্চলের ১১টি টিম কাজ করছে। উৎসে কর বিষয়ে এ টিমের দক্ষতা, সক্ষমতা ও কৌশলগত জ্ঞান অর্জনের জন্য কর্মকর্তাদের ক্যাপাসিটি ব্লিডিং প্রোগ্রামের আওতায় প্রথম পর্যায়ে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। প্রশিক্ষণে উপকর কমিশনার, সহকারী কর কমিশনার, অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার ও কর পরিদর্শক পর্যায়ের মোট ৩২ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।

এসি/