ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

আত্মহত্যা করলেন সেই বাবলি!

প্রকাশিত : ১২:০১ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার

মেয়ে হয়ে জন্মানোটাই ছিলো তার অপরাধ। এ কারণেই জন্মের ছয় মাসের মাথায় হত্যার জন্য মুখে অ্যাসিডে ঢেলে দিয়েছিলেন পিতা। কিন্তু তখন বেঁচে গেলেও ১৭ বছর পর গত বুধবার রাতে আত্মহত্যা করেছেন সেই মেহিয়া আক্তার বাবলী। তিনি এবার টাঙ্গাইলের ভারতেশ্বরী হোমস থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

পুলিশ ধারণা করছে, বাবলী আত্মহত্যা করেছে। তবে এ ঘটনার কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ।

বাবার সেই অ্যাসিড আক্রমণ থেকে শেষ পর্যন্ত বেঁচে গেলেও বাবলী শারীরিকভাবে দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। এমনকি কথা বলতেও পারতেন না ঠিকমত। তবে নানা মানুষের সহায়তায় ভর্তি হতে পেরেছিলেন টাঙ্গাইলের নামকরা একটি স্কুলে।

জানা গেছে, কন্যাসন্তান হওয়ার তথ্য জেনে জন্মের আগে থেকেই বাবলীর মা`কে গর্ভপাত করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতেন বাবলীর পিতা। পরে কন্যাসন্তান হিসেবে জন্ম হওয়ার ছয় মাসের মাথায় অ্যাসিড দিয়ে বাবলীকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। ওই হামলায় বাবলীর একটি কান নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়াও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় গলা, জিহ্বা ও মুখ। ওই সময় এ নিয়ে মামলা হলে কিছুদিন পলাতক ছিলেন বাবলীর পিতা। কিন্তু পরে ওই মামলার আর কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় বাবলী এবং তার মা আর তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখেননি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ অ্যাসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশনের শিক্ষাবৃত্তির সহায়তায় পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল বাবলী। শারীরিক বিকলঙ্গতার জন্য প্রায়ই অন্যান্য ছাত্রীদের বিদ্রুপের শিকার হতে হতো তাকে।

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুল হক জানান, ভারতেশ্বরী হোমসের ছাত্রীনিবাসে থেকে পড়াশোনা করতেন বাবলী। তবে আট-দশ মাস আগে শৃঙ্খলাজনিত কারণে তাকে ছাত্রীনিবাস থেকে বহিস্কার করা হয়।

বাবলীর মা পারুল বেগম জানান বহিস্কার হওয়ায় ভারতেশ্বরী হোমসের একজন শিক্ষার্থী ও তার মায়ের সঙ্গে মির্জাপুরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন বাবলী। সেই শিক্ষার্থী ও তার মা বাবলীকে মৌখিকভাবে তিরস্কার করতো বলে জানান পারুল বেগম।

একে/এসএইচ/