ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বিষে ভরা নাগিনী শ্রীদেবী

প্রকাশিত : ১১:৪৫ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ১২:৩৯ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সোমবার

এ কথা সত্য যে শ্রীদেবী রূপে ছিলেন অনন্যা। আর গুণেরও কোন কমতি ছিল না তার। অভিনয় দক্ষতা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই শ্রীদেবী সম্পর্কে। হাজার হোক তিনি রূপোলী পর্দার সুপারস্টার। কিন্তু নাগিনা সিনেমার এই নায়িকা ব্যক্তিগত জীবনেও যে নাগিনী ছিল তা হয়তো সবার জানা আছে। দক্ষিণী রূপবতী শ্রীদেবী সংসার ভাঙায় ছিলেন ওস্তাদ। বিবাহিত পুরুষকে বসে আনার কৌশল ঠিকই রপ্ত করেছিলেন তিনি। এই নাগিনীর বিষে রঙিন হয়েছিলো বাঙালি হিরো। মিঠুনের তীরে ভিড়েছিল শ্রীদেবীর তরী। মিঠুনে মজেছিলেন তিনি। প্রেমের আগুন দুই পক্ষেই লেগেছিল।

এদিকে মিঠুন তখন বিবাহিত। স্ত্রী যোগীতাবালি ও সন্তান মিমোকে নিয়ে তার সংসার। এমন সময় সেখানে প্রবেশ করেন শ্রীদেবী। গোপনে মিঠুন ও শ্রীদেবীর প্রেমলীলা শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে দেখা দেয় বিতর্ক। এমনকি মিঠুনের স্ত্রী যোগীতা বালিও ক্ষুব্ধ হয়ে যান। এদিকে শ্রীদেবীকে হাতছাড়া করতে নারাজ মিঠুন। তাইতো গোপনে বিয়েও করে ফেলেছিলেন দুজন। তারপরেই মধুচন্দ্রিমায় চলে যান মিয়া-বিবি।

হানিমুন থেকে ফিরে শ্রীদেবী বেঁকে বসেন। সাফ জানিয়ে দেন যোগীতার সংসার ছেড়ে আসতে হবে মিঠুনকে। বাঙালি হিরো দাদা পড়ে যান মহা সমুদ্রে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত না নিলে সম্পর্ক ত্যাগের হুমকি দেন শ্রীদেবী। এই নিয়েই শুরু হয়েছিল ভাঙন। পরিস্থিতি সত্যিই খুব নিষ্ঠুর। চরম বিতর্ক শুরু হয় শ্রীদেবীকে ঘিরে।

এদিকে মিঠুন পর্ব শেষ হতে না হতেই শ্রীদেবীর জীবনে উপস্থিত হন বনি কাপুর। তিনিও বিবাহিত। বনির স্ত্রী মোনার সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব ছিল শ্রীদেবীর। বন্ধুত্বের খাতিরেই বনির বাড়িতে যাতায়াত ছিল। আর মোনাও কোনওদিন আপত্তি করেননি। করার প্রশ্নই নেই। বন্ধু বলে কথা। কিন্তু মোনা ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি তাঁরই স্বামীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন তাঁর বান্ধবী শ্রীদেবী। যখন জানলেন, তখন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। স্বামী বনিকে কব্জা করে নিয়েছেন শ্রীদেবী।

শ্রীদেবীর এই কাণ্ডকারখানা মিঠুনের কানে পৌঁছয়। স্বাভাবিকভাবেই তিনি মেনে নিতে পারেননি। মিঠুনের একপ্রকার জোরাজুরিতেই বনিকে প্রায় বাধ্য হয়েই রাখি বাঁধেন শ্রীদেবী। এরই মধ্যে শ্রীদেবী গর্ভবতী হয়ে পড়েন।

বলিউডের মিস হাওয়া হাওয়াই প্রেগন্যান্ট! দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ে খবর। হতবাক হয়ে যায় পুরো বলিউড। কিন্তু এই নিয়ে কোনও লুকোচুরি করেননি শ্রীদেবী বা বনি। পেটে সন্তান। এমন অবস্থায় কী আর খবর লুকিয়ে রাখা যায়? কিন্তু এই সময় কোনও একটা সিদ্ধান্তে তো আসতে হয়। এদিকে বনির স্ত্রী মোনা তখনও জীবিত। ডিভোর্সও হয়নি। ফলে ১৯৯৬ সালে মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেন তাঁরা।

বৈবাহিক জীবন ভালোই কাটছিল। দুই নৌকায় পা দিয়ে বেশ চলছিলেন বনি। কিন্তু এভাবে চলবে কতদিন? মোনাকেও ছাড়তে পারছিলেন না বনি। একদিন প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে পিকনিকে গিয়েছিলেন বনি। সঙ্গে ছিল ছেলে অর্জুন ও মেয়ে অংশুলা। মোনার সঙ্গে এত ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে পারছিলেন না শ্রীদেবী।

শোনা যায়, এই কারণে তিনি বনি কাপুরেরে সঙ্গে জোর ঝামেলা করেছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত তা এক প্রতিবেশির কানে চলে গিয়েছিল। তিনিই ফাঁস করে দেন বলিউডের অন্যতম হিট কাপলের দাম্পত্য কলহের কথা। তিনি এও বলেছিলেন, বনি তাঁর ছেলেমেয়েদের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু শ্রীদেবী নাকি কোনওদিনই তা বোঝেননি। আবার উল্টোদিকে বনি কাপুরেরও শ্রীদেবীর অনুভূতি বোঝা উচিত ছিল বলে অনেকে মনে করেন। একদিকে শ্রীদেবী ছিলেন তাঁর দ্বিতীয়া স্ত্রী। তার উপর এক সন্তানের মা।

শোনা যায়, মোনার মা নাকি শ্রীদেবীর উপর শারীরিক অত্যাচার করেন বলে অভিযোগ। তারপর থেকে বনির প্রথম পক্ষের সঙ্গে বাক্যালাপ বন্ধ করে দেন শ্রীদেবী। বনিকে বলেন- তিনি যেন প্রথম পক্ষের সঙ্গে সব ধরণের সম্পর্ক ত্যাগ করেন। শ্রীয়ের কথা মতো বনি ছেড়ে দিয়েছিলেন মোনাকে। প্রথম পক্ষের সন্তানদের সঙ্গে এখনও তাঁর সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয়।

যা রটে, তার কিছুটা সত্য বটে। শ্রীদেবী-বনির এই গোপন খবর প্রকাশ্যে না আসলেও অর্জুন কাপুর একবার বলেছিলেন, শ্রীদেবী তাঁর মা হতে পারেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক নয়। শ্রীদেবী তাঁর বাবার স্ত্রী। এর বেশি কোনও পরিচয় তাঁর কাছে নেই।

সূত্র : কলকাতা টুইন্টিফোর

এসএ/