শেষ পর্ব
প্রযুক্তির ছোঁয়ায় ঘরে বসেই স্বজনের কবরের খবর
তবিবুর রহমান
প্রকাশিত : ০৩:১৩ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ১০:২০ এএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার
মৃত ব্যক্তির শেষ চিহৃটি সংরক্ষণে কতকিছুই না করে তার স্বজনরা। অনেকেই মাসিক চাঁদা দিয়ে সংরক্ষণ করেন স্বজনের কবর। এছাড়া যারা বিদেশ থাকেন ইচ্ছা থাকলেও স্বজনের কবরটি দেখতে পায় না। এসব বিষয় মাথায় রেখে অনলাইনে নতুন সেবা চালু করতে যাচ্ছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। যা গুগল ম্যাপের মাধ্যমে কাছের আত্মীয় স্বজনের কবরের সর্বশেষ অবস্থান, ছবিও দেখতে পারবেন।
এছাড়া এর মাধ্যমে মৃত ব্যক্তিদের বিভিন্ন তথ্যসহ বিদেশে অবস্থানরত নাগরিকরা তাদের আত্মীয়-স্বজনের কবরে পুষ্পস্ত্মবক অর্পণ, কোরআন খানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করাতে পারবেন। এছাড়া আয়োজনের ছবি ও ভিডিও ক্লিপস ওয়েব পেজে আপলোড করা হবে, যা ওই ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনসহ সবাই দেখতে পাবেন। সেজন্য আবেদন করে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে।
আগামী মার্চ মাসের মধ্যে একটি ওয়েব পেজ চালু করতে যাচ্ছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন মেয়র সাঈদ খোকন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় আজিমপুর, জুরাইন এবং খিলগাঁও কবরস্থান থেকে মৃত ব্যক্তির বিভিন্ন ডাটা গ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে।
আজিজপুর কবরস্থানের পাঁচ থেকে ১০ বছরের ডাটা সংগ্রহ করছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ইতোমধ্যে ডাটাগুলো ওয়েব পেজের সযুক্ত করার হয়েছে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আইসিটি বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো. আবু তৈয়ব রোকন একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, এটা বাস্তাবয়ন হলে পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকেই স্বজনের কবর সর্বশেষ অবস্থা দেখতে পারবেন। মৃত ব্যক্তি অনেক স্বজন বিদেশ বা কর্মব্যস্ততার কারণে বাবা-মা আন্তীয়-স্বজনের মৃত ব্যক্তি স্থানে আসতে পারেন না। তাদের জন্য এই সেবা। এমনকি সে ক্ষেত্রে মৃতু্যবার্ষিকীর সাত দিন আগে মৃত ব্যক্তির পরিবারের কাছে সার্ভিসের মাধ্যমে বার্তা পাঠানো হবে। যা মৃত ব্যক্তির স্বজনদের প্রোফাইলে নোটিফিকেশন আকারে চলে যাবে।
তিনি আরও বলেন, ওই ডাটাবেজে মৃত ব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত সন্নিবেশিত করা হয়েছে। মারা যাওয়ার তারিখ, দাফনের সময়, মৃত্যু কারণ এবং ওয়ারিশদের তথ্য সংযুক্ত করা হয়েছে। এসব তথ্য দেখতে হলে প্রথমেই ডিএসসিসির ওই ওয়েব পেজে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
রেজিস্টেশনের জন্য ব্যক্তির নাম, ব্যক্তিগত তথ্য এবং ফোন নম্বর লাগবে। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড দিয়ে সাইটটিতে লগইন করতে হবে। সেখানে তার একটি প্রোফাইল তৈরি হবে। প্রোফাইল থেকে মৃত্যু ব্যক্তির সনদের জন্য আবেদন করা যাবে। এজন্য আবেদনের সঙ্গে মৃত ব্যক্তির দাফনের রশিদ সংযুক্ত করতে হবে। এরপর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মৃত্যু সনদের নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে। তখন ডিএসসিসি ওই মৃত ব্যক্তির ডেথ সার্টিফিকেট প্রস্তুত করে তার প্রোফাইলে পাঠাবে। এসময় ব্যবহারকারী একটি নোটিফিকেশন মেসেজ পাবেন। তখন যেকোনো জায়গা থেকে এটি ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের সম্পত্তি নিয়ে বিভিন্ন ঝামেলাও নিরসন হবে।
রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে একাউন্টধারী গ্রাহক সব মৃত ব্যক্তির তথ্য দেখতে পাবেন। এ ক্ষেত্রে দাফন করার সময় দেয়া একটি সিরিয়াল নম্বর দিয়ে সার্চ করলে সহজেই কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির সব তথ্য চলে আসবে। এই ওয়েব পেজের মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত নাগরিকরা তাদের আত্মীয়-স্বজনের কবরে পুষ্পস্ত্মবক অর্পণ, কোরআন খানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করাতে পারবেন।
এসএইচ/