ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

“শিক্ষা ব্যবস্থায় যোগ্য নেতৃত্বের অভাব”

প্রকাশিত : ০৬:৪৭ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৬:৪৮ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার

দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় যোগ্য নেতৃত্বের অভাব বলে মত দিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষাবিদ। সেই সাথে দুর্নীতি ও লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতির কারণে শিক্ষা ব্যবস্থায় অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে বলেও মত দেন তারা।

মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে `বাংলাদেশে শিক্ষার সর্বসাম্প্রতিক চালচিত্র` শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তারা এ মন্তব্য করেন। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন আলোচনা এ সভার আয়োজন করে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক কায়কোবাদ বলেন, একটি শিশু যখন দেখে স্কুলে প্রশ্নফাঁস হয়, এবং সেই ফাঁসের সাথে তার অভিভাবক ও শিক্ষকরা জড়িত, তখন শিশুটি পুরো সমাজ সম্পর্কে অনৈতিক ধারণা পায়।

শিক্ষা ব্যবস্থার নানা সমালোচনা করে এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, আমরা স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তি করি। কিন্ত একমাস পরে সেই শিক্ষার্থী হয়ে যায় পরীক্ষার্থী। আমরা কতজনকে শেখাচ্ছি, তা দেখিনা। বরং কতজন পাস করছে তা দেখি। অধ্যাপক কায়কোবাদ এ সময় বলেন, এই ঢাকা শহরেই অধিকাংশ স্কুলে এনসিটিবির বই পড়ানো হয় না। পড়ানো হয় গাইড, নোট। বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে দেশে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের আমার যোগ্য মনে হয় না।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক তারিক আলীর বলেন, গ্রামের স্কুলগুলোতে অধিকাংশ সময় পঞ্চাশ থেকে ষাট ভাগ উপস্থিত থাকে। বাকিদের অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায়। আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষকদের মান মোটামুটি থাকলেও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মান খুব খারাপ।

এসময় তিনি আরো বলেন, আমাদের শিক্ষাক্রমে মানবিকতাবোধ, বিজ্ঞানমনস্কতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা শেখানো হয়না। ফলে শিক্ষা অপূর্ণাঙ্গ থেকে যায়।

আলোচক হিসেবে উপস্থিত থেকে অধ্যাপক শফি আহমেদ বলেন, গ্রামে কলেজ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সুপারিশ করে রাজনৈতিক নেতারা। এটা শিক্ষার জন্য ভালো দিক নয়। এ সময় তিনি আরও বলেন, ২০১০ সালে সরকার শিক্ষানীতি গ্রহণ করলেও আজ পর্যন্ত এর কোনো নীতি বাস্তবায়িত হয়নি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় আনার কথা ছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি।

শফি আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, এবারের প্রশ্নফাঁসে নায়কোচিত ব্যাপার দেখা গেছে। প্রশ্নফাঁস কারীরা ঘোষণা দিয়ে ফোন নাম্বার দিয়ে ফেসবুকে প্রশ্নফাঁস করেছে। ক্লাস ওয়ানে পর্যন্ত প্রশ্নফাঁস হয়। সবচেয়ে দু:খের বিষয় প্রশ্নফাঁসের সাথে স্কুলের শিক্ষকরা পর্যন্ত জড়িত। এর মধ্য থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে জাতিগতভাবে আমাদের মহা দূর্যোগে পড়তে হবে। শফি আহমেদ আরও বলেন, শিক্ষকদের এত সংগঠন থাকলেও শিক্ষকের পেশাগত মান উন্নয়ন নিয়ে কেউ আন্দোলন করেনা।

এএ/টিকে