ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

মাধ্যমিকে ছাত্রী ঝরে পড়ার হার বেড়েছে

প্রকাশিত : ১০:২৫ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:৩৫ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার

দেশে মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রীদের ঝরে পড়ার হার বেড়েছে। তবে উচ্চ মাধ্যমিক বা কলেজ পর্যায়ে ছাত্রীদের ঝরে পড়ার হার আগের থেকে কমেছে। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি উভয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মাধ্যমিক স্তরে মেয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বেড়েছে। তবে কলেজ পর্যায়ে মেয়েদের ঝরে পড়া কমেছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে ‘বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান-২০১৭’ এর খসড়া প্রতিবেদন নিয়ে এক কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। খসড়া জরিপ প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন ব্যানবেইসের পরিচালক মো. ফসিউল্লাহ।

খসড়া পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, সারা দেশে ১০ ধরনের দুর্যোগে প্রায় ১৮ হাজার ৬৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সরকারি পর্যায়ে ৬১৮টি এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১৮ হাজার ২০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এর মাঝেই মেয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বেড়েছে মাধ্যমিক পর্যায়ে। ছেলেদের চাইতে মেয়েদের এ ঝরে পড়ার হার বেশি।

মাধ্যমিকে গত ২০১৭ সালে ৪১ দশমিক ৫২ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। ছেলেদের ঝড়ে পড়ার হার ৩৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আর ছেলে-মেয়ে উভয়ের ঝরে পড়ার হার ৩৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। ২০১৬ সালে মাধ্যমিকে ছেলে-মেয়ে উভয়ের ঝরে পড়ার হার ছিল ৩৮ দশমিক ৩০ শতাংশ।

অন্যদিকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রীদের ঝরে পড়ার হার কমেছে। এ বছর এর পরিমাণ ১৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ২০১৬ সালে এ হার ছিল ২০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

জরিপে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক স্তরে ২০২০ সালে ছেলে-মেয়ে উভয়ের ঝরে পড়ার হার হবে ৩৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, ২০২৫ সালে ২৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং ২০৩০ সালে এ হার ২০ দশমিক ১৭ শতাংশে দাঁড়াবে।

এছাড়াও পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে শিক্ষার্থীদের পাসের হারও কমেছে। ২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ২১ শতাংশ, যা ২০১৬ সালের থেকে ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ কম। সে বছর পাসের হার ছিল ৮৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ২০১৭ সালে পাসের হার ৬৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ২০১৬ সালে এ হার ছিল ৭২ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

সারা দেশে স্কুলপর্যায়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫১ হাজার ২১১ জন, কলেজ পর্যায়ে ৩ হাজার ৬৪৩ জন, মাদরাসা পর্যায়ে ৯ হাজার ৯৩৬ জন। এ তিন স্তরে বাকপ্রতিবন্ধী, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শ্রবণপ্রতিবন্ধীসহ মোট ২৮ হাজার ৩২৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে বলে ২০১৭ সালের জরিপে তুলে ধরা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সারা দেশের শিক্ষাব্যবস্থা জানার জন্য তথ্য ও সংখ্যা জানা দরকার। ব্যানবেইসের এ জরিপের মাধ্যমে তা ওঠে এসেছে। শুধু তাই নয় এ পরিসংখ্যানের মাধ্যমে পেছনের সব সমস্যা ওঠে এসেছে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমাতে সারা দেশে ২ কোটি ৩ লাখ ছেলে-মেয়েকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে উপবৃত্তি। বিভিন্ন স্তরের প্রতিবন্ধীকেও বৃত্তি দেয়া হচ্ছে।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মান নিয়ে কিছুটা বির্তক রয়েছে। উন্নত দেশের দিক থেকে আমরা কিছুটা পিছিয়ে রয়েছি। মানের দিক থেকে আমরা আমেরিকা নাকি ইংল্যান্ডকে অনুসরণ করব তা নিয়েও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবে আধুনিক চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে শিক্ষার মান নির্ধারণ করা হবে।

//এস এইচ এস//