লজ্জায় বলতে পারি না জাতীয় পার্টি বিরোধী দল: রওশন
প্রকাশিত : ১০:৪৪ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:৩৬ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার
জাতীয় পার্টি সম্মানের সাথে নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। তিনি পার্টির ‘সম্মান’ বাঁচাতে মন্ত্রিসভা থেকে দলটির নেতাদের বাদ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চাইলেন। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে রওশন এরশাদ এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, “আপনি বলতে কি পারেন দেশে বিরোধী দল আছে? আমরাও বলতে পারি না। কোথাও গেলে লজ্জায় কথা বলতে পারি না। সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলি। তাদের প্রশ্নের জবাব দিতে পারি না। আমরা সরকারি দল না বিরোধী দল পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারি না।”
রওশন খানিকটা উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, আমাদের ৪০ জনকে সরকারি দলে নিয়ে যান। আমরা তো বলতে পারি না। আপনি সবাইকে নিয়ে নেন।
সংসদে বিরোধী দলের আসন নেওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রিসভায়ও যোগ দিয়ে চার বছর পার করার পর এখন দলের ‘সম্মানহানির’ কথা জানালেন জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান।
সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আলোচনায় রওশন বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম আমাদের মন্ত্রীগুলোকে উইথড্রো করে নেন। আপনি সেটা করেন নাই। আমরা বিরোধী দল হতে পারি নাই। এভাবে বিরোধী দল হওয়া যায়? তার এই বক্তব্যের সময় সংসদ নেতা ও সরকার প্রধান শেখ হাসিনা সংসদে ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল জাতীয় পার্টি। এরপর তারা বিরোধী দলের আসনে বসে। রওশন এরশাদ হন বিরোধীদলীয় নেতা। জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর তিন সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ মন্ত্রী এবং মুজিবুল হক চুন্নু ও মশিউর রহমান রাঙ্গা প্রতিমন্ত্রী হন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকেও করা হয় মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত।
এ বিষয়টি নিয়ে বরাবরই প্রশ্নের মধ্যে পড়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। বিএনপিবিহীন সংসদে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের আসন নিয়ে সরকারেও যোগ দেওয়ায় সংসদে তাদের কার্যকর ভূমিকা পালন নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন উঠেছিল। বিএনপি তাদের ‘গৃহপালিত বিরোধী দল’ বলে আসছে।
এসব সমালোচনার জবাবে জাতীয় পার্টির নেতারা বিভিন্ন সময়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে নানা বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রওশন বলেন, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) যদি বলতে পারতেন, মন্ত্রিত্ব ছাড়েন। আমরা বলতে পারি না। এটা আপনি করলে জাতীয় পার্টি বেঁচে যেত, সম্মানের সাথে থাকত। আমরা সম্মানের সাথে নাই। আরো এক বছর আছে, সেটা দেখেন।
রওশনের বক্তব্যের সময় সরকারি দলের সদস্যরা মাইক ছাড়াই বলতে থাকেন, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পার্টির নেতাদের মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বলেছেন।
তখন রওশন বলেন, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশ দিলে মানবে না কে? তাহলে সবাইকে নিয়ে নেন। সবাইকে মন্ত্রী বানিয়ে দেন। হয় বিরোধী দল হতে হবে, না হয় সরকারি দল। বিরোধী দলের কোনো দরকার নেই।
বক্তব্যে তিনি নিরাপদ খাদ্য, রাজধানীর যানজট, মশার উপদ্রব, প্রশ্ন ফাঁস, কর্মসংস্থানের অভাব নিয়েও কথা বলেন।
আর/টিকে