ঢাকা, শুক্রবার   ০৮ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ২৪ ১৪৩১

‘বৈষম্য দূর করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে’

প্রকাশিত : ০৯:৫৩ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ বুধবার

দেশে অসমতা ক্রমেই বাড়ছে। এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে সুযোগের ক্ষেত্রে যে বৈষম্য রয়েছে তা দূর করতে হবে। মানুষকে কেন্দ্র করেই প্রবৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। ভাবতে হবে ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীকে পিছিয়ে রেখে কোন উন্নয়ন সম্ভব হবে না।

আজ বুধবার রাজধানীর পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ভবনে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘গণমানুষের কণ্ঠস্বর: বাংলাদেশে ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে পিকেএসএফ।

পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খুলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। এতে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কেএম আবদুস সালাম, পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তফা কে মুজেরি ও ঢাকা স্কুল অব ইকনোমিক্স`র শিক্ষক ড. তৌহীদ রেজা নুর।

পিকেএসএফ–এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বাগত বক্তব্যে বলেন, পিকেএসএফের উদ্যোগে গঠিত ‘গণমানুষের কণ্ঠস্বর: বাংলাদেশে ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন’ প্ল্যাটফর্ম এসডিজি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, পিকেএসএফের সকল কর্মসূচি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিন্যাস করেছে।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, এসডিজির লক্ষ্য হলো ১৬৯টি। সরকার সবগুলো সমভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে না সম্পদের কারনে। তাই সরকার প্রাথমিকভাবে ৩৯টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাস্তবায়নের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাও এসডিজির সাথে সামঞ্জস্য রেখেই করা হয়েছে। এসডিজি শুধু কেন্দ্রীয় ভাবে বাস্তবায়নের বিষয় নয়, দেশের সকল অঞ্চলে বাস্তবায়নের উপর সরকার জোর দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আগামী মাসে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।

ড. মোস্তফা কে মুজেরি বলেন, এসডিজির ১০ নম্বর অভীষ্ঠ সর্বক্ষেত্রে বৈষম্যতা ও অসমতা দূর করা। আমাদেরকে সুযোগের অসমতা দূর করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, দেশে বৈষম্য বাড়ছে। আর এই বৈষম্যটা বহুমাত্রিক। তবে শহরের চেয়ে গ্রামে এটি বেশি।

ড. তৌহীদ রেজা নূর টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৮-এর উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের একটি অন্যতম চাবিকাঠি হচ্ছে স্থিতিশীল কর্মসংস্থান ও পরিপূর্ণ কর্মপরিবেশ। তিনি বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষম্যের নানা দিক তুলে ধরেন। পাশাপাশি বৈষম্যহীন কর্মসংস্থান, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনের জন্য প্রয়োজন বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

এ দুইটি প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আব্দুস সালাম। অসমতা দূর করার জন্য সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এসডিজির লক্ষ্যসমূহের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এনজিও সমূহ তাদের কাজের বিন্যাস ঘটাবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ তার বক্তব্যে বলেন, আমরা সব সময় বলি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হবে। কিন্তু সেটা কিভাবে বাড়াবো তা ঠিক করতে হবে। মানুষকে কেন্দ্র করেই প্রবৃদ্ধির প্রক্রিয়া সাজাতে হবে। ধনীদের নিয়ে ভাবনার দরকার নেই। ভাবতে হবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের নিয়ে। বাস্তবভিত্তিক ও মানুষ কেন্দ্রিক কর্মসূচি নিতে হবে এবং একই সাথে আমিত্ব থেকে বের হয়ে বহুত্বের দিকে যেতে হবে উন্নয়নের ধারাকে টেকসই করতে। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নই কেবল নয় সামাজিক ও নৈতিকতা উন্নয়ন, টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আরকে/টিকে