স্বাধীনতার মাস শুরু
প্রকাশিত : ১২:০৯ এএম, ১ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৯:৪৭ এএম, ৩ মার্চ ২০১৮ শনিবার
অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন আজ বৃহস্পতিবার। বাঙালির জীবনে ঐতিহাসিক কারণে মার্চ মাস অন্তনির্হিতি শক্তির উৎস। এ মাসেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
এর আগে তিনি পাকিস্তানি শাসকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, “সাতকোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। মরতে যখন শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি, আরো দেবো। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করেই ছাড়বো- ইনশাল্লাহ। এবাররে সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।”
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসর্কোস ময়দানে (বর্তমান সোহরাওর্য়াদী উদ্যান) দেওয়া এই ঐতিহাসিক ভাষণের সময় মুহুর্মূহু গর্জনে উত্তাল ছিল জনসমুদ্র। লক্ষ কন্ঠের একই আওয়াজ উচ্চারতি হতে থাকে দেশের এ প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে।। ঢাকাসহ সারা দেশে উড়ছিল সবুজ জমিনের উপর লাল সূর্যের পতাকা।
গত ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা প্যারিসের ইউনেস্কোর সদর দফতরে এই স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন।
ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণটি মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ইউনেস্কো বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্যের তালিকা সংরক্ষণ করে থাকে। মেমোরি অব দ্য ওয়াল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রারের অন্তর্ভুক্ত প্রামাণ্য ঐতিহ্যের তালিকা বিশ্ব প্রেক্ষাপটে গুরুত্ববহ। ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রারের লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বের প্রামাণ্য ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা এবং বিশ্ববাসী যাতে ঐতিহ্য সম্পর্কে সহজে জানতে পারে তা নিশ্চিত করা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতির পর এবারের মার্চ মাসে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালনে যোগ হবে নতুন মাত্রা। আওয়ামী লীগ ৭ মার্চ উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করেছে। অন্যদিকে এ মাসেই জাতি এবার পালন করবে মহান স্বাধীনতার ৪৭ বছর। এ উপলক্ষে মাসের প্রথম দিন থেকেই শুরু হবে সভা সমাবেশ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নানা আয়োজনে মুখরিত থাকবে গোটা দেশ।
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য যে আগুন জ্বলে উঠছেলি- সে আগুন যেন ছড়িয়ে পরে বাংলার সর্বত্র। এর পরে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ এর ছয়দফা এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুথানের সিঁড়ি বেয়ে একাত্তরের মার্চ বাঙ্গালীর জীবনে নিয়ে আসে নতুন বারতা। ওই বছরের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এর আগে ২৫ মার্চ রাত একটার অল্প পরে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি সন্যরা গ্রেফতার করে তাঁর বাড়ি থেকে।
২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানিরা বাঙ্গালীর কন্ঠ চিরতরে স্তব্দ করে দেওয়ার লক্ষ্যে অপারশেন সার্চলাইট নামে বাঙ্গালি নিধনে নামে। ঢাকার রাস্তায় বেরিয়ে সন্যরা নির্বিচিারে হাজার হাজার লোককে হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্নি শিক্ষা প্রতষ্ঠিানে হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষককে হত্যা করে।
এর পরের ঘটনাপ্রবাহ প্রতিরোধের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর আহবানে ঘরে ঘরে র্দূগ গড়ে তোলা হয়। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। র্দীঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বের বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে জাতি লাভ করে স্বাধীনতা। বাসস
আর/টিকে