ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

মশা তাড়ানোর সহজ ১০ উপায়

প্রকাশিত : ১১:২৭ এএম, ১ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০১:৩৫ পিএম, ১২ মার্চ ২০১৮ সোমবার

এক যন্ত্রণাদায়ক পতঙ্গের নাম মশা। আকারে অতি ক্ষুদ্র হলেও রাতের ঘুম হারাম করতে পারে এই পতঙ্গটি। শুধু কি তাই, দিনের বেলায়ও এখন এর যন্ত্রণা থেকে রক্ষা নেই। এতটুকু হলেও দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা যেত। কিন্তু বিরক্তিকর উপদ্রবের পাশাপাশি তারা রোগজীবাণু সংক্রামণ করে। যা অনেক সময় মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

মশার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, ফাইলেরিয়া, পীত জ্বর, জিকা ভাইরাস প্রভৃতি মারাত্মক রোগ সংক্রমিত হয়ে থাকে। স্প্রে, কয়েল, অ্যারোসল কোন কিছুতেই মশা তাড়ানো সহজ নয়। আবার এসব দিয়ে মশা তাড়ালেও এতে আমাদের স্বাস্থ্য চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে মশা তাড়ানোর ব্যবস্থা করা জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক মশা তাড়ানোর সহজ ও কার্যকরী ১০ উপায়-

১. ফ্যান চালু রাখুন: মশারা খুবই হালকা। মশাদের উড়ার গতিবেগের চেয়ে ফ্যানের ঘুরার গতি অনেক বেশি হওয়ায় সহজেই মশাদের ব্লেডের কাছে টেনে নেয়। আপনার বসার স্থান কিংবা ডেক বা যেসব স্থান থেকে মশারা খুব সহজে আপনার গৃহে প্রবেশ করতে পারে, এমনসব স্থানে মশাদের আগমন সময়ে আপনার টেবিল ফ্যান বা পেডাল ফ্যানটি চালু রাখুন।

২. হলুদ বৈদ্যুতিক আলো: ঘরের মধ্যে মশার উৎপাত কমাতে চাইলে, ঘরের বৈদ্যুতিক আলোটি হলুদ সেলোফেনে জড়িয়ে দিন। ফলে হলুদ আলো হবে। দেখবেন মশা কমে গেছে। কারণ মশা হলুদ আলো থেকে দূরে থাকতে চায়।

৩. সুগন্ধি ব্যবহার করুন: মশারা সুগন্ধি থেকে দূরে থাকে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে শরীরে আতর, সুগন্ধি, কিংবা লোসন মেখে শুতে গেলে দেখবেন মশা সাধারণ থেকে অনেক কম দেখা যাবে।

৪. চা-পাতা ও নিমপাতা পোড়ান:  ব্যবহৃত চা-পাতা ফেলে না দিয়ে ভাল করে রোদে শুকিয়ে নিন। শুকনো চা পাতা পোড়ানো ধোঁয়ায় ঘরের সমস্ত মশা, মাছি পালিয়ে যাবে। এছাড়া নিমপাতা পোড়ালে যে ধোঁয়া হয়। তা মশা তাড়ানোর জন্য খুবই কার্যকর।

৫. লেবু ও লবঙ্গের ব্যবহার: লেবু খণ্ড করে কেটে ভেতরের অংশে অনেকগুলো লবঙ্গ গেঁথে দিন। লেবুর মধ্যে লবঙ্গের পুরোটা ঢুকাবেন শুধুমাত্র লবঙ্গের মাথার দিকের অংশ বাইরে থাকবে। এরপর লেবুর টুকরাগুলো একটি প্লেটে করে ঘরের কোণায় রেখে দিলে বেশ কয়েকদিন মশার উপদ্রব থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।   

৬. ধুনোর সঙ্গে নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়ো: প্রতিদিন নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়ো ধুনোর সঙ্গে ব্যবহার করলে মশার হাত থেকে রেহাই পাবেন।

৭. কর্পূর ও রসুনের ব্যবহার: মশা কর্পূরের গন্ধ একেবারেই সহ্য করতে পারে না। একটি ৫০ গ্রামের কর্পূরের ট্যাবলেট একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিটি পানি দিয়ে পূর্ণ করে এটি ঘরের কোণে রেখে দিন। তাৎক্ষণিকভাবেই মশা একেবারে গায়েব হয়ে যাবে। তবে দুই দিন পর পানি পরিবর্তন করে নিন। এছাড়া রসুনের স্প্রে মশা তাড়াতে খুবই কার্যকারী প্রাকৃতিক উপায়। এক্ষেত্রে ৫ ভাগ পানিতে ১ ভাগ রসুনের রস মেশান। মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে শরীরের যেসব স্থানে মশারা কামড়াতে পারে সেসব স্থানে স্প্রে করুন।

৮.  নিমের তেল ও পুদিনার ব্যবহার: মশা তাড়ানোর বিশেষ একটি গুণ রয়েছে নিমের। সমপরিমাণ নিমের তেল ও নারকেল তেল মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিলে দেখবেন মশা আপনার ধারে কাছে ভিড়তে পারবে না। সেই সঙ্গে ত্বকের অ্যালার্জি, ইনফেকশন জনিত নানা সমস্যাও দূর হবে। আর একটি ছোট গ্লাসে একটু পানি নিয়ে তাতে ৫ থেকে ৬ গাছি পুদিনা খাবার টেবিলে রেখে দিলে দেখবেন ঘরের সব মশা পালিয়েছে। তবে ৩ দিন অন্তর পানি বদলে দেবেন।

৯. জমানো পানি থেকে বিরত থাকুন: জমানো পানি থেকে দূরে থাকুন। খেয়াল রাখুন যেন কোথাও পানি জমে না থাকে। ঘরের আনাচে-কানাচে কিংবা উঠোনে পানি জমে থাকলে সেখানে মশারা বংশবিস্তার করতে পারে। তাই যেখানেই পানি জমুক না কেন, তা সরিয়ে ফেলুন।

১০. যে রঙের পোশাক এড়িয়ে চলবেন: কালো, নীল ও লাল কাপড় এড়িয়ে চলুন। কারণ এ রঙগুলো মশাদের পছন্দ। তারা গরমের প্রতিও সংবেদনশীল। তাই ঠান্ডা ঘর রাখুন আর পোষাক পড়ুন হালকা রঙের।

 

/ এআর /