জাতিসংঘ ও কমনওয়েলথের কাছে বিএনপির যে আশা
প্রকাশিত : ০৮:৪২ এএম, ২ মার্চ ২০১৮ শুক্রবার
বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নানা সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা কিংবা প্রভাবশালী দেশের রাষ্ট্রদূতদের কাছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে। বিশেষ করে বিরোধী দল যখন রাজনৈতিকভাবে বেকায়দায় থাকে তখন এ বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়।
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি গত বুধবার দেশটির রাজনৈতিক এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে জাতিসংঘ এবং কমনওয়েলথের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে এই চিঠি পাঠানো হয়।
বিএনপি সূত্র জানায়, তাদের চিঠিতে বিরোধী দলের ওপর, তাদের ভাষায়, সরকারের দমননীতি, বিচারবিভাগের ওপর সরকারের হস্তক্ষেপ এবং আসন্ন সাধারণ নির্বাচন নিয়ে সরকার কী ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে- সেই বিষয়গুলোই তুলে ধরা হয়েছে। ঐ চিঠির মাধ্যমে বিএনপি মূলত বলতে চেয়েছে, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং মানবাধিকার হুমকির মুখে পড়েছে।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের ভেতরে কী ঘটছে সে বিষয়গুলো তারা আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে চান। তিনি বলেন, জাতিসংঘ এবং কমনওয়েলথে সদস্য থাকার কারণে বাংলাদেশ বিভিন্ন বিষয়ে অঙ্গীকারাবদ্ধ। কিন্তু গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং মানবাধিকার হুমকির মুখে পড়েছে বলে বিএনপি মনে করছে। খসরু বলেন, এসব বিষয় নিয়ে একটা জনমত সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা আছে। সেটা শুধু দেশের মধ্যে নয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ গত ২৫ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে দেখা গেছে, কমনওয়েলথ কিংবা জাতিসংঘ বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের সমাধান করতে পারেনি। উনিশশো পচানব্বই সালে কমনওয়েলথের দূত স্যার নিনিয়ান স্টেফান কিংবা ২০১৩ সালে জাতিসংঘের দূত অস্কার ফার্ণান্দেজ তারানকোর সমঝোতা চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল।
বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, একসময় বাংলাদেশের রাজনীতিতে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রভাব থাকলেও এখন ভারত এবং চীনের ভূমিকা বেশ জোরালো হয়েছে।
এমন অবস্থায় আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের রাজনীতিকে কতটা প্রভাবিত করতে পারবে? রাজনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক আমেনা মহসিন বলছেন, এখন খুব একটা প্রভাবিত করার সুযোগ নেই। কিন্তু বাংলাদেশ যেহেতু আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বিচ্ছিন্ন কোন দেশ নয়, সেজন্য একটা নৈতিক চাপ থাকতে পারে।
খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপি ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সাথে বৈঠক করেছে। আন্তর্জাতিক মহলকে বিএনপি বোঝাতে চাইছে যে খালেদা জিয়া ন্যায় বিচার পাননি। অধ্যাপক আমেনা মহসিন মনে করছেন, আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বিষয়গুলো তুলে ধরার মাধ্যমে বিএনপি হয়তো তাদের রাজৈনৈতিক বিকল্পগুলো প্রয়োগ করছে। তাই কোনটা ফল দেবে আর কোনটা ফল দেবে না সেটা এ মুহূর্তে বলা খুবই কঠিন।
বিএনপি নেতারা মনে করছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনকে ক্ষেত্রে করে দুই দলের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠানের জন্য ক্ষমতাসীনদের উপর একটি আন্তর্জাতিক চাপ বজায় রাখা জরুরি। তবে ২০১৪ সালের পর থেকে এ আলোচনার কথা আওয়ামী লীগ বরাবরই বাতিল করে দিচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি
একে/