ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৯ ১৪৩১

খুলনা সফরে প্রধানমন্ত্রী

উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন ৯৯ প্রকল্পের

প্রকাশিত : ০৮:৩০ এএম, ৩ মার্চ ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০৮:৫৬ এএম, ৩ মার্চ ২০১৮ শনিবার

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিনের সফরে খুলনায় আসছেন আজ শনিবার। দ্বিতীয় দফায় সরকার গঠনের পর শেষ মুহূর্তে তার এ সফর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অবহেলিত মানুষের কাছে গুরুত্ব বহন করছে। উন্নয়নের পাশাপাশি প্রত্যাশা নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন দাবি করা হচ্ছে উন্নয়ন কমিটি আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে। নিজস্ব অর্থায়নে ও প্রধানমন্ত্রীর একক প্রচেষ্টায় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের পথে। ফলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন হবে।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর খুলনায় আগমন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
গোটা নগরীতে স্বাগত জানিয়ে নির্মিত হয়েছে তোরণ। ফেস্টুন আর ব্যানারে ছেয়ে গেছে সড়ক। কেসিসি, ওয়াসা ও সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সংস্থা ভাঙাচোরা আর খানাগর্ত সড়ক মেরামত করেছে। অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থলে নির্মিত হয়েছে বিশাল আকারে (১১০ ফুট) নৌকা মঞ্চ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ারস, বাংলাদেশ (আইইবি)’র ৫৮তম সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিচ্ছেন।
দিনব্যাপী সফরে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিকেলে নগরীর সার্কিট হাউস মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দেবেন। এছাড়াও তিনি একই স্থানে খুলনার ৪৭টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন এবং ৫২টি প্রকল্পের ভিত্তিফলক উন্মোচন করবেন।
আইইবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুস সবুর বাসসকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী সকাল ১১ টায় নগরীর খালিশপুর কেন্দ্রে আইইবি’র চার দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্প উদ্বোধন করবেন সেগুলো হলো- গল্লামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়ক, রূপসা-শ্রীফলতলা-তেরখাদা সড়ক, কেডিএ খানজাহান আলী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক-কাম-প্রশাসনিক ভবন, লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাডেমিক ভবন, চালনা মোবারক মেমোরিয়াল কলেজের একাডেমিক ভবন, খুলনা আইডিয়াল কলেজের একাডেমিক ভবন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের একাডেমিক ভবন, খুলনা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের একাডেমিক ভবন, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন, মহেশ্বরপাশা সরকারি শিশু পরিবার হোস্টেল ভবন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ভবন, মেডিকেল কলেজের অডিটরিয়াম ভবন, শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল ভবন, তেরখাদা থানা ভবন, রূপসা ফায়ার স্টেশন ভবন, রূপসা সেনহাটি নদী ফায়ার স্টেশন, বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, কৃষি বিভাগের অফিস-কাম-ট্রেনিং এন্ড প্রসেসিং সেন্টার ভবন, রূপসা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, দিঘলিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, তেরখাদা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, ডুমুরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, পাইকগাছা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন। পাইকাগাছা আরএন্ডএইচ-বাঁকা জিসি সড়কের কপোতাক্ষ নদের উপর ব্রিজ। খুলনা ডায়াবেটিক হাসপাতালের নতুন ভবন। হাতিয়ার ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবন, শিমলার আইট খেজুরডাঙ্গা আরএনজিপিএস কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবন। দেওয়াড়া পশ্চিমপাড়া আরএন জিপিএস কাম সাইক্লোন সেল্টার ভবন, তেরখাদা আব্দুলের মোড় আরএন্ডএইচ-মাঝিরগাথি জিসি ভায়া কোলা বাজার সড়ক, বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের সম্প্রসারণ। পাইকগাছা হাবিবনগর মাদ্রাসা মোড় থেকে ডুমুরিয়া মাগুরখালি-কাঁঠালতলা বাজার পর্যন্ত সংযোগ সড়ক, খুলনা শহীদ মিনার, রেলওয়ে স্টেশন এবং ইয়ার্ড রি-মডেলিং প্রকল্প, খুলনা জেলা স্টেডিয়াম, পাঁচতলা বিশিষ্ট কয়রা আধুনিক ডাকবাংলো ভবন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য হোস্টেল ভবন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, পাইকগাছায় কপিলমুনি ইউনিয়ন ভূমি অফিস, কয়রা থানা ভবন, ডুমুরিয়াতে শোভনা ইউনিয়ন ভূমি অফিস, জলমা ইউনিয়ন ভূমি অফিস, আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রকল্প, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল (বর্ধিতাংশ), জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল (ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ), শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ ভবন (ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ), মাইকেল মুধুসুদন দত্ত অতিথি ভবন (বর্ধিতাংশ), আচার্য প্রফল্ল চন্দ্র রায় কেন্দ্রীয় গবেষণাগার (বর্ধিতাংশ), খুলনা ওয়াসা ভবন।
প্রধানমন্ত্রী যে সকল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন সেগুলো হচ্ছে : খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা (খুলনা অংশ) সড়ক। পাইকগাছা কৃষি কলেজ। বটিয়াঘাটা ডিগ্রি কলেজের একাডেমিক ভবন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমাজিং ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ‘এ’ ব্লকের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্সেস ডরমিটরি। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ ডরমিটরি। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বাংকার। খুলনা সদর হাসপাতাল ১৫০ বেড থেকে ২৫০ বেডে উন্নীতকরণ। সিভিল সার্জনের অফিস ভবন। শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের আবাসিক ভবন। দিঘলিয়া উপজেলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। পুলিশ সুপারের কার্যালয়। এএসপি ‘ক’ সার্কেল অফিস। দৌলতপুর থানা ভবন। আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের অস্ত্রাগার ভবন। পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একাডেমিক ভবন। পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ফায়ারিং বার্ট। পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অস্ত্রাগার ভবন। জেলা রেজিস্ট্র্রি অফিস ভবন। রূপসা উপজেলা মডেল মসজিদ। আলিয়া মাদ্রাসা মডেল মসজিদ। ডুমুরিয়া ভদ্রা নদীর ওপর ৩১৫.৩০ মিটার লম্বা পিসি গার্ডার ব্রিজ। বটিয়াঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন। তেরখাদা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক ভবন ও হলরুম। পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়ন ভূমি অফিস। পাইকগাছা উপজেলার লতা ইউনিয়ন ভূমি অফিস। ফুলতলা উপজেলায় উচ্চ জলাধার ও পাইপ লাইনের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১০০০ আসনবিশিষ্ট অডিটরিয়াম-কাম মাল্টিপারপাস হল। টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। জেলা কারাগার। জেলা পুলিশ লাইন। ১০ তলাবিশিষ্ট বিএসটিআই আঞ্চলিক অফিস ভবন। আরআরএফ ব্যারাক ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ। পাইকগাছা উপজেলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আরআরএফ’র অস্ত্রাগার ভবন। পাইকগাছা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। রূপসা শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র পুনর্নির্মাণ ও আধুনিকীকরণ। ওজোপাডিকো লিমিটেডের ১৫-তলাবিশিষ্ট প্রধান কার্যালয়। জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে ভদ্রা ও সালতা নদী পুনঃখনন। বিএনএস তিতুমীর সংলগ্ন ভৈরব নদীর তীর সংরক্ষণ। শেখ রাসেল ইকো পার্ক। এডমিনিস্ট্রেটিভ কনভেনশন সেন্টার। ১০-তলা ভিতবিশিষ্ট জয় বাংলা ভবন। ১০ তলাবিশিষ্ট শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী আবাসিক ভবন। লালন সাঁই মিলনায়তন ও টিএসসি ভবন। শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরী চিকিৎসা কেন্দ্র। সুলতানা কামাল জিমনেসিয়াম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আইইআর ভবন। আইটি ইনকিউবেশন এন্ড ট্রেনিং সেন্টার। রূপসা নদীর তলদেশ দিয়ে পাইপ লাইন স্থাপন।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান জানান, প্রধানমন্ত্রী বিকেল ৩টায় খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন।
তিনি বলেন, ‘খুলনা নগরীতে আগামীকালের জনসভা সফল করার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।’
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানান, আইইবি খালিশপুর সেন্টার এবং সার্কিট হাউস ময়দান এলাকাসহ নগরীতে ৩,৫০০ পুলিশ সদস্য নিয়োগসহ ৮০০ সিসিটিভি স্থাপনের মাধ্যমে তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সূত্র : বাসস
এসএ/