ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন যেভাবে

প্রকাশিত : ১১:০০ এএম, ৩ মার্চ ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০১:৩৫ পিএম, ১২ মার্চ ২০১৮ সোমবার

অনেকেই রেগে গেলে ভাঙচুর করে কিংবা হাতের কাছে যা পায় ছুঁড়ে মারে। এমনকি গলা ফাটিয়ে চেঁচামেচি বা হুমকিও দেন কেউ কেউ। হুট করে এমন রেগে গিয়ে খুন খারাবি পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছে এমন ঘটনাও শোনা যায়। এমন রাগ থাকলে নিয়ন্ত্রণ করাই উচিৎ। কিন্তু কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব?

ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি কর্মশালায় গতকাল শুক্রবার জড়ো হয়েছিলেন এমন কিছু মানুষ যারা রাগ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। রেগে গেলে কে কিভাবে তার প্রতিক্রিয়া জানান সেটি নিয়ে আলাপ হয়।

তাদের একজন বলছেন, এটা বলতে একটু লজ্জা লাগছে আমি খুবই চিল্লাচিল্লি করি। আশপাশে ভাঙার মতো কিছু পেলে ভাঙাভাঙি করি। কথা বলা বন্ধ করে দেই। আমাকে দেখলে বোঝা যাবে না এমন রাগতে পারি।

রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম, অতিরিক্ত গাড়ির হর্ন, বাসের কন্ডাকটরের আচরণ, রেস্টুরেন্টের ওয়েটারের দেরিতে খাবার দেওয়া, এমন অনেক কিছুতেই ইদানীং খুব রেগে যান এমন একজন আব্দুল্লাহ রেজওয়ান। তিনি বলছেন, ইদানীং হুট করে খুব রাগ হয়ে যায়। মাঝে মধ্যে রাগ হয়ে যাওয়ার পরে এবং রাগারাগি করার পরে বুঝেতে পারি যে আমার তা উচিৎ হয়নি।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন রাগ একটি স্বাভাবিক আবেগ। কিন্তু এই রাগ ক্ষতির কারণ হয়েও দেখা দিতে পারে। তার প্রভাব পড়তে পারে ব্যক্তিজীবন, সামাজিক ও পেশাগত জীবনে। এমনকি স্বাস্থ্যের ওপরও রাগের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

কর্মশালার আয়োজক আর্ক নামের একটি মনোচিকিৎসা কেন্দ্রের মনোবিজ্ঞানী মধুরিমা সাহা হিয়া বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মানুষের সহনশীলতা কমছে, আর রাগের বহিঃপ্রকাশ আগের থেকে অনেক বেশি বেড়ে গেছে। তিনি বলছেন, প্রতিদিন কিন্তু রাস্তায় বের হলেই অন্তত দুই থেকে তিনটা ঝগড়া দেখি। যেমন ধরুন, রিকশাওয়ালার সাথে যাত্রীর, এক বাসের সাথে আরেক বাসের চালকের, ফেরিওয়ালার সঙ্গে ক্রেতার। প্রতিদিনই কিন্তু আমরা ঝগড়া দেখছি। আমাদের অবজারভেশন বলে আমাদের ধৈর্য কমছে আর রাগ বাড়ছে।

মধুরিমা সাহা বলছেন, যখন সেটা স্বাভাবিকের পর্যায়ে থাকবে না তখনই তা নিয়ন্ত্রণের দরকার। যেমন কেউ যদি আক্রমণাত্মকভাবে সেটি প্রকাশ করে, মানুষজনকে আঘাত দিয়ে, অন্যকে হুমকি দিয়ে বা জিনিসপত্র ভাঙচুর করে যদি কেউ রাগ প্রকাশ কর - তাহলে।

রাগ নিয়ন্ত্রণে মধুরিমা সাহা চারটি সহজ টিপস দিলেন। তিনি বলছেন, তাৎক্ষণিক কিছু কাজ আমরা করতে পারি। যেমন-

১. যে জায়গাটিতে রেগে যাওয়ার মতো কিছু ঘটেছে সেখান থেকে সরে যাওয়া।

২. যার ওপরে রাগ হয়েছে- তার কাছ থেকে সরে যাওয়া।

৩. যার সঙ্গে রাগ হয়েছে তার সঙ্গে তখনই নয়, বরং খানিক পরে কথা বলা।

৪. হাতের কাছে যদি বরফ থাকে তাহলে তা হাত দিয়ে ধরে থাকা। কারণ বরফ মেজাজ শীতল করতেও সহায়তা করে।

এছাড়া যদি সম্ভব হয় যে কাপড়ে আছেন তাতেই গোসল করে ফেলুন। নিশ্বাসের একটি ব্যায়াম করে দেখতে পারেন। সেটি করার পদ্ধতি হল, রাগ থেকে মনটাকে সরিয়ে নিশ্বাসের দিকে মনোযোগ দেয়া। বুক ভরে গভীর নিশ্বাস নেওয়া, সেটাকে কিছুক্ষণ ধরে থাকা, কিছুক্ষণ পর বাতাস ছেড়ে দেওয়া। সেটি রাগ কমাতে সাহায্য করে। হয়ত এর সবগুলোই আপনার কাজে নাও আসতে পারে কিন্তু চেষ্টা করে দেখতে তো আর সমস্যা নেই বলছেন মধুরিমা সাহা।

সূত্র: বিবিসি

একে / এআর