ডিএসএলআর মত ছবি তুলবে গ্যালাক্সি এস নাইন প্লাস
প্রকাশিত : ০৮:২৮ পিএম, ৩ মার্চ ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০৮:২৯ পিএম, ৩ মার্চ ২০১৮ শনিবার
পেশাদার ফটোগ্রাফির জন্য ডিএসএলআর ক্যামেরার ব্যবহার করে থাকেন আলোকচিত্রীরা। তবে তুলনামূলক বেশি দাম আর জটিল ব্যবহার বিধির কারণে সাধারণের কাছে এক অতি আকর্ষণীয় বস্তু এই ডিএসএলআর ক্যামেরা। তবে তাদের কাছে মুঠোফোনের মধ্যেই ডিএসএলআর ক্যামেরার প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে স্যামসাং।
দক্ষিণ কোরিয়া ভিত্তিক বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের ফ্ল্যাগশিপ মুঠোফোন স্যামসাং গ্যালাক্সি এস নাইন প্লাস মডেলটিতে সন্নিবেশ ঘটিয়েছে মুঠোফোন আর ডিএসএলআর ক্যামেরার যৌথ প্রযুক্তিকে।
আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশের বাজারে গ্যালাক্সি এস নাইন প্লাস মডেলের মুঠোফোনটি উন্মোচন করে স্যামসাং। মুঠোফোনটির বিভিন্ন আকর্ষণীয় দিকে তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটির পণ্য ব্যবস্থাপক শাহরিয়ার হোসেন জানান, মুঠোফোনটির পিছনে অ্যাপারেচার পরিবর্তনযোগ্য দুইটি ক্যামেরা আছে; যা কোন মুঠোফোনের জন্য এটিই প্রথম।
মোবাইল ক্যামেরায় পরিবর্তনযোগ্য এই অ্যাপারেচারের কারণে এতে পেশাদারি ফটোগ্রাফির মত ছবি তোলা যাবে। বিশেষ করে ছবির ‘ডেপথ অব ফিল্ড’ এবং ‘ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার বুকেহ ইফেক্ট’ হবে আরও চমৎকার।
১২ মেগাপিক্সলের ডুয়েল ক্যামেরা দুইটিতে আছে সর্বোচ্চ এফ/২.৪ এবং এফ/১.৫ অ্যাপারেচার। আর ৮ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট সেলফি ক্যামেরায় আছে এফ/১.৭ অ্যাপারেচার।
মুঠোফোনটির উন্মোচন অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার হোসেন বলেন, “এ যাবৎকালে স্যামসাং তো বটেই আরও যত স্মার্টফোন আছে তাদের মধ্যে সেরা আমাদের এই এস নাইন প্লাস। এটিকে ডিএসএলআর ক্যামেরার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে”।
এছাড়াও মুঠোফোনটির ক্যামেরার অন্যান্য বিশেষ ফিচারের মধ্যে আছে সুপার স্লো-মোশন মোড, ডুয়েল লাইভ ফোকাস এবং ইফেক্টস।
ডিসপ্লে
প্রায় বেজেলহীন এই মুঠোফোনটিতে আছে ৬ দশমি ২ ইঞ্চির পর্দা। সামনে এবং পেছনের গোরিলা গ্লাসে মোড়ানো মুঠোফোনটির পর্দায় যে কোন কিছু দেখা যাবে প্রিমিয়াম হাই ডেফিনিশন কোয়ালিটিতে।
কানকটিভিটি
চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ফোর-জি সমর্থিত গ্যালাক্সি এস নাইন মুঠোফোনটিতে কানেকটিভিটির জন্যে রয়েছে এলটিই ক্যাট ১৮। এছাড়াও আরো আছে ব্লুটুথ ভার্সন ৫.০ এবং ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট।
নিরাপত্তা
মুঠোফোনটির বাহ্যিক নিরাপত্তায় ফেস রিকগনিশন প্রযুক্তির পাশাপাশি এতে ব্যবহৃত হয়েছে আইরিশ রিকগনিশন প্রযুক্তি। অর্থ্যাৎ শুধু মুখমণ্ডলই না, চোখের পাপড়ির আকার ও গঠন মিলিয়ে মুঠোফোনটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর তো থাকছেই।
আর মুঠোফোনটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় ব্যবহার করা হয়েছে স্যামসাং নকস নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মার্কিন সামরিক গ্রেডের এই নিরাপত্তা ব্যবস্থাটি মোবাইল ফোনের জন্য সব থেকে আধুনিক এবং শক্তিশালী বলে দাবি স্যামসাং এর। এর ফলে মুঠোফোনটিতে আর্থিক লেনদের পাশাপাশি বিভিন্ন সংবেদনশীল কাজ নিশ্চিন্তে করা যাবে বলেও জানায় স্যামসাং বাংলাদেশ।
র্যাম, রম ও প্রসেসর
অক্টা কোর বিশিষ্ট স্যামসাং এর নিজস্ব ১০ ন্যানো মিটার ক্ষুদ্রাকৃতির প্রসেসর রয়েছে মুঠোফোনটিতে। অন্যান প্রসেসর থেকে ৩০ শতাংশ কম শক্তি শোষণ করা এই প্রসেসরটিতে রয়েছে ২ দশমিক ৩ এবং ১ দশমিক ৭ গিগাহার্টজের গতি।
আর মুঠোফোনটিতে বিভিন্ন কাজ দ্রুত করতে এর সাথে সংযোজন করা হয়েছে ৬ জিবি র্যাম। পাশাপাশি অধিক পরিমাণ তথ্য জমা রাখতে এতে আছে ৬৪জিবি রম যা ২০০ জিবি পর্যন্ত মেমরি কার্ড সমর্থন করবে।
মাত্র ৮০ মিনিটে পুরো চার্জ হওয়া এস নাইন প্লাসকে দীর্ঘক্ষণ সচল রাখতে এতে আছে ৩ হাজার ৫০০ অ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি।
পানি ও ধুলা প্রতিরোধক
উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন বলেন, আইপি ৬৮ সনদপ্রাপ্ত এই মুঠোফোনটি পানি ও ধুলা প্রতিরোধক। প্রায় দেড় মিটার পর্যন্ত গভীর পানিতে আধা ঘণ্টা পর্যন্ত কোনো রকম সমস্যা ছাড়াই সচল থাকবে মুঠোফোনটি।
ডলবি সারাউন্ড সিস্টেমের জন্য নতুন স্টেরিও স্পিকারযুক্ত মুঠোফোনটি বাংলাদেশের বাজারে ফোনটি তিনটি রঙে পাওয়া যাবে। এগুলো হলো-মিডনাইট ব্ল্যাক, কোরাল ব্লু এবং লিলিয়াক পার্পেল।
তবে ১ লক্ষ ৫ হাজার ৯০০ টাকা মূল্যের মুঠোফোনটি হাতে পেতে গ্রাহকদের অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু দিন।
চলতি মার্চ মাসের ৮ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত শুধু প্রি-অর্ডার নেওয়া হবে।
মুঠোফোনটির সাথে আকর্ষণীয় একটি হেডফোন এবং চার্জার থাকবে। তবে যারা প্রি-অর্ডার করবেন তাদের জন্য থাকছে প্রায় ৬ হাজার টাকা মূল্যের ওয়্যারলেস ডক চার্জার।
বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিটধারী গ্রাহকেরা সর্বোচ্চ ১২ মাসের কিস্তিতেও কিনতে পারবেন আকর্ষণীয় এই মুঠোফোনটির।
এসএইচএস/টিকে