ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে সিআইটিএফ এর বর্ণাঢ্য উদ্বোধন
প্রকাশিত : ১১:১৫ পিএম, ৩ মার্চ ২০১৮ শনিবার
দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র উদ্যোগে “২৬তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৮” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ০৩ মার্চ বিকেলে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চিটাগাং চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাংসদ এম. এ. লতিফ, চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সিআইটিএফ’১৮ এর চেয়ারম্যান মোঃ নুরুন নেওয়াজ সেলিম, সহ-সভাপতি ও কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ জামাল আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে চেম্বার পরিচালকবৃন্দ কামাল মোস্তফা চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), এম. এ. মোতালেব, মঈনুদ্দিন আহমেদ মিন্টু, মোঃ জহুরুল আলম, মাহবুবুল হক চৌধুরী (বাবর), ছৈয়দ ছগীর আহমদ, সরওয়ার হাসান জামিল, মোঃ রকিবুর রহমান (টুটুল), অঞ্জন শেখর দাশ, এস. এম. শামসুদ্দিন, মোঃ শাহরিয়ার জাহান ও মোঃ আবদুল মান্নান সোহেল, সরকারী উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সিসিসি কাউন্সিলরবৃন্দ, বিভিন্ন ট্রেডবডি নেতৃবৃন্দ, অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিসহ নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বন্দরের প্রবৃদ্ধি ১৫% এবং লয়েড্’স র্যাং কিং এ এগিয়েছে ২৭ ধাপ। অটোমেশন, স্কেনার, ইকুইপমেন্ট সংগ্রহের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে যে ধরণের জেটি ও ইকুইপমেন্ট থাকা দরকার তা নেই। তিনি একমাত্র স্লিপওয়ে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে উল্লেখ করে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের কাজ শুরু হয়েছে এবং ভূমি সংক্রান্ত সমস্যা দূর হলে দ্রুতই বে-টার্মিনালের কাজ শুরু হবে জানান।
মন্ত্রী বলেন, মাতারবাড়ীতে কয়লার জন্য টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে এবং বাণিজ্যিকভাবে বন্দরও চালু করা হবে। যোগাযোগের উন্নয়নে বহুমাত্রিক যান ব্যবস্থার উপর গুরুত্বারোপ করছে সরকার।
ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, চিটাগাং চেম্বার ব্যবসায়ীদের উন্নয়নে ভূমিকা অব্যাহত রেখেছে। চট্টগ্রামবাসী সারা বছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। চেম্বার দীর্ঘদিনের এ ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, আমদানি, রপ্তানি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও অবকাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদি সূচকে উল্লেখযোগ্য উন্নতির মাধ্যমে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া, এমডিজি অর্জনে উদাহরণ সৃষ্টির পর এসডিজি ও ক্রমান্বয়ে ভিশন ২০৪১ অর্জনের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে প্রথম টানেল নির্মাণ ও পদ্মা সেতু তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি জাহাজের অতিরিক্ত অবস্থানের জন্য লক্ষ লক্ষ ডলার ডেমারেজ চার্জ দেয়ার উল্লেখ করে প্রায়রিটি কার্গো নির্ধারণ, ডলফিন এ প্রাইভেট জেটি নির্মাণের অনুমতি প্রদান এবং জাহাজজটের স্থায়ী সমাধানের আহবান জানান।
সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেন, চেম্বারের বাণিজ্য মেলার তাৎপর্য ও গুরুত্ব রয়েছে এবং আবেদন তৈরী হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হচ্ছেন। দেশে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনটি স্পেশাল ইকনোমিক জোনের চাপ মোকাবেলায় বে-টার্মিনাল নির্মাণ ত্বরান্বিত করতে হবে। লালদিয়া ও পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মিত হলে যানজট আরো বৃদ্ধি পেতে পারে উল্লেখ করে মেয়র বন্দর সংশ্লিষ্ট এলাকার অফডক সরিয়ে দিয়ে পোর্ট ও সিটি ট্রাফিক আলাদা করে এয়ারপোর্ট রোড ও মহানগরকে যানজট মুক্ত করতে কার্যকর উদ্যোগের আহবান জানান।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, দেশীয় পণ্য অভ্যন্তরীণ বাজারে ১৬ কোটি মানুষের মাঝে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে মেলার আয়োজন করা হয় যা মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। তিনি পতেঙ্গা, লালদিয়া ও অন্যান্য টার্মিনাল যথাসময়ে সম্পন্ন হবে বলে প্রত্যাশা করেন। চেম্বার সভাপতি শুধুমাত্র চট্টগ্রাম থেকে ৬ চাকা গাড়ীতে ১৩ টনের বেশী মালামাল পরিবহনে নিষেধাজ্ঞার কারণে চট্টগ্রাম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে উল্লেখ করে এক্ষেত্রে প্রতি কেজি পণ্যের পরিবহন ব্যয় ২ টাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্যান্ট্রি ক্রেইন ও অন্যান্য ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করা হলে চট্টগ্রাম বন্দর গতি পাবে প্রত্যাশা করে মেলার স্থায়ী ভেন্যুর জন্য একটি জায়গা বরাদ্দের আবেদন জানান চেম্বার সভাপতি।
উল্লেখ্য, ০৩ মার্চ শুরু হওয়া মাসব্যাপী এই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা পলোগ্রাউন্ড মাঠে প্রতিদিন সকাল ১০.০০ টা থেকে রাত ১০.০০ টা পর্যন্ত চলবে।
এসি