ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

খেলাপি ঋণের কারণে পিছিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত

প্রকাশিত : ১২:৪১ পিএম, ৫ মার্চ ২০১৮ সোমবার

লাগামহীন খেলাপি ঋণে ধুঁকছে ব্যাংক খাত। পার্শ্ববর্তী সব দেশকে ছাড়িয়ে গেছে এই ঋণ। কোনো উদ্যোগ, কোনো ব্যবস্থাই কাজে আসছে না। প্রতিবেশী দেশ নেপালের খেলাপি ঋণ যেখানে শূন্যের কাছাকাছি, সেখানে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বিতরণ করা ঋণের ১০ শতাংশের ওপর।

রোববার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটরিয়ামে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী প্রথম আঞ্চলিক ব্যাংকিং সম্মেলন-২০১৮ (আরবিসি-২০১৮)-এ ব্যাংক খাত বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের লাগামহীন খেলাপি ঋণ নিয়ে এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিআইবিএমের গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। সম্মেলনের উদ্বোধনী সেশনের সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো. আহসান হাবীব।

গভর্নর ফজলে কবির বলেন, দেশ স্বাধীনের পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যাংক খাত বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই প্রবৃদ্ধি ছিল ধারাবাহিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক। একটি প্রতিক্রিয়াশীল বেসরকারি খাতের উত্থানে সহায়তার মধ্যে দিয়ে মুখ্য কাঠামোগত এবং নিয়ন্ত্রণমূলক পুনর্গঠনের সফল বাস্তবায়নের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের ব্যাংক খাতের।

সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থাপক ও আলোচকরা জনগণের আমানতের অর্থ এভাবে কিছু মানুষের হাতে কুক্ষিগত হওয়ায় পুরো ব্যাংক খাতে ঝুঁকি তৈরি করেছে বলে উল্লেখ করেন। খেলাপি ঋণের কারণে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত আগামী দিনে ভয়ানক পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে বলেও আশঙ্কা করেন তারা। এ কারণে এখনই সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করতে পরামর্শ দেন তারা।

আঞ্চলিক ব্যাংকিং সম্মেলনে উপস্থাপিত এক প্রবন্ধে দেখা গেছে, নেপাল, ভুটান, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে কম নেপালে এবং সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে। নেপালের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ গড়ে ১.৭১ শতাংশ। দেশটির খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে কম সানিমা ব্যাংকে, মাত্র ০.০৩ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি সিভিল ব্যাংকে, ৪.৫২ শতাংশ।

অন্যদিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর কোনো কোনোটা খেলাপি ঋণের হার ২৫ শতাংশের ওপরে। বেসিক ও বিডিবিএলের খেলাপি ঋণ ৫০ শতাংশের ওপরে রয়েছে। ভুটানের খেলাপি ঋণও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারতের খেলাপি ঋণ একটু বেশি হলেও তা এখনো দুই অঙ্কের কোটায় পৌঁছায়নি।

সম্মেলনের প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনের সঞ্চালক বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘নেপালের খেলাপি ঋণ কম হওয়ার পেছনে দেশটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা ভালো ভূমিকা রাখছে। এই দেশটির ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনেক শক্তিশালী।’

এসএইচ/