ঢাকা, শনিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   আশ্বিন ৫ ১৪৩১

বিশ্বযুদ্ধের গোপন খবর বয়ে বেড়াচ্ছেন যে ব্রিটিশ গুপ্তচর

প্রকাশিত : ০৬:৪১ পিএম, ৮ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার

টেইলর থম্পসন। মাত্র ১৯ বছর বয়সে যোগ দিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থাতে। আর যোগ দিয়েই স্বাক্ষর করেছিলেন রাষ্ট্রীয় সিক্রেট অ্যাক্টসে। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক ভয়াবহ স্মৃতিই বলতে পারছেন না তিনি। বলতে পারছেন না, পেছনে কারণ একটাই। গুপ্ত কোন বিষয় প্রকাশ করলেই মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। এই আশঙ্কায় ৭৩ বছর ধরে বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের স্মৃতিচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন ৯৩ বছর বয়সী এ নারী।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় দখলীকৃত ফ্রান্স থেকে কোড করা গোপন বার্তা পাঠাতেন হেলেন। সেখানে ছোটখাটো কোন ভুল হলেই হয়তো সেটা কারো জীবনকে বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারতো। দখলীকৃত ফ্রান্স থেকে ব্রিটেনের সেনাদের কাছে গোপন বার্তা পাঠাতো থম্পসন।

থম্পসন আরও বলেন, আপনি যা দেখেছেন বা যা করেছেন, সেটা নিয়ে যদি কখনো কারো কাছে কিছু বলেন, সেটা দেশদ্রোহিতা বলে বিবেচিত হবে, হয়তো আপনাকে তার জীবন দিয়েই তার মূল্য দিতে হবে। তখনকার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের `গোপন আর্মি` বলে পরিচিত বাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন টেইলর থম্পসন।

স্পেশাল অপারেশন এক্সিকিউটিভ নামের একটি গোপন বাহিনী তৈরি করেছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল, যাদের কাজ ছিল গোপনে জার্মান বাহিনীর বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ করা আর ধ্বংসাত্মক অভিযান পরিচালনা করা। তবে থম্পসন কোন ধ্বংসাত্মক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন।

তিনি বলছেন, ‘আমার কাজ ঠিক বিপদজনক ছিল না, কিন্তু আমাকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হতো। কারণ আমার সামান্য একটি ভুলে কারো জীবন বিপদে পড়তে পারতো। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নারীরা যে ভূমিকা পালন করেছিলেন, তা যেন স্মরণীয় করে রাখা হয়’।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যারা সেখানে গিয়েছে,তাদের অনেককে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। অনেকে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, অনেকে আর কখনো ফিরে আসেনি। তাই তাদের স্বীকৃতি দেওয়া দরকার। জার্মান দখলকৃত ফ্রান্স গুপ্তচরদের কাছে গোপন বার্তা পাঠাতেন হেলেন। এদের মধ্যে অন্তত ৩০জন ছিলেন নারী, যারা শত্রু এলাকায় গোপনে কাজ করতেন।

এদিকে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর পূর্ব লন্ডনে একটি ছোট হাসপাতাল চালাতেন হেলেন টেইলর। কিন্তু সরকারের ব্যয় সংকোচনে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপরও থেমে থাকেননি থম্পসন। এরপর জীবনের প্রান্তসীমায় থাকা মানুষজনের জীবন আরেকটু আরামদায়ক করতে ইউরোপের প্রথম দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি তিনি চালু করেন।

এমজে/