জেনেভায় মিয়ানমার সেনাকর্মকর্তার দাবি
গণহত্যা হয়নি, বেশিরভাগ রোহিঙ্গা-ই এখনো রাখাইনে আছেন
প্রকাশিত : ১১:৩৯ এএম, ৯ মার্চ ২০১৮ শুক্রবার
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, দাতা সংস্থা ও জাতিসংঘসহ সারা বিশ্বের দাবি অগ্রাহ্য করে মিয়ানমার আবারও বলছে দেশটিতে কোন ধরণের গণহত্যা বা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। জেনেভায় এক বৈঠকে অংশ নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং তুন দাবি করেন, এখনো রাখাইনে অধিকাংশ রোহিঙ্গা রয়ে গেছেন। তাই গণহত্যা বা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে তাদের সবাই ওই রাজ্য থেকে পালিয়ে যেতো বলে যুক্ত তুলে ধরেন তিনি।
মিয়ানমারের ওই কর্মকর্তা এমন সময় এ মন্তব্য করেন, যখন দেশটির প্রভাবশালী এক সংবাদ মাধ্যম তাদের নিজস্ব অনুসন্ধানে বলছে, দেশটি থেকে অন্তত ৯০ শতাংশ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে এ রিপোর্টও অস্বীকার করেছেন তুন। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও জাতিগত নিধনযজ্ঞের অভিযোগ তাই একে উড়িয়ে দিয়েছেন এই কর্মকর্তা। তবে এর আগে মিয়ানমারে একটি গণকবরের সন্ধ্যান পাওয়ার পর মিয়ানমারের সেনারা গণহত্যার বিষয়টি অস্বীকার করলেও ১০ নিরীহ নাগরিককে হত্যারি বিষয়টি স্বীকার করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের দেশছাড়া করার ছক আঁকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেন প্রায় ৭ লাখ মানুষ। তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পালিয়ে আসা বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হলেও তা কার্যকরের বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন।
জেনেভায় সাংবাদিকদের উদ্দেশে থাউং তুন বলেছেন, ‘রাখাইনে বসবাস করা মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় অংশ এখনও রয়ে গেছে। যদি গণহত্যা চালানো হতো তাহলে সবাই বিতাড়িত হতো।’ তবে তার এই বক্তব্যের যথাযর্থ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে খোদ মিয়ানমারের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে। ফেব্রয়ারির শেষ সপ্তাহে সরকারি ও বেসরকারি তথ্যেরভিত্তিতে রাখাইনের জনসংখ্যার বিষয়ে নিজেদের একটি হিসাব প্রকাশ করে ইরাবতী। তাতে দেখা যায়, গত বছরের আগস্টে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৯০ শতাংশই পালিয়ে গেছে।
সূত্র: এপি
এমজে/