ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

১২০ বছর আগের প্রেমপত্রের সন্ধ্যান

প্রকাশিত : ০২:৫১ পিএম, ৯ মার্চ ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০৪:৫৫ পিএম, ৯ মার্চ ২০১৮ শুক্রবার

১২০ বছর আগে লেখা প্রেমপত্র। লিখেছিলেন দিঘাপতিয়ার রাজকন্যা ইন্দুপ্রভা চৌধুরী। গোপনে তুলে রাখা এ রকম ২৮৫টি পত্রের সন্ধ্যান মিলেছে নাটোর জেলা প্রশাসনের ট্রেজারির চাবিহীন একটি ট্রাঙ্ক থেকে।

গত সোমবার উদ্ধার করা ট্রেজারিতে শুধু পত্র নয়, পাওয়া গেছে তাঁর অপ্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের পাণ্ডুলিপি, দিনলিপি, রুপার ফ্রেমে বাঁধানো ছবি, প্রাচীন পদ্ধতিতে লেখার কাজে ব্যবহৃত রাজকন্যার দোয়াত-কলমসহ আরও অনেক কিছু।

এ ছাড়া এত দিন আড়ালে থাকা মহামূল্যবান পাথরখচিত রাজমুকুট, রাজপরিধেয়—সবই আজ শুক্রবার উত্তরা গণভবন সংগ্রহশালায় দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করার কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, আঠারো শতকে নির্মিত দিঘাপতিয়া মহারাজাদের বাসস্থান। দয়ারাম রায় (১৬৮০-১৭৬০) এ রাজবংশের  প্রতিষ্ঠিাতা। নাটোর শহর থেকে প্রায় ২ দশমিক ৪ কিমি দূরে প্রাসাদটি অবস্থিত। ১৯৫৬ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর এই রাজপরিবারটি ভারতে চলে যায়। পরে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু রাজবাড়িটিকে উত্তরা গণভবন ঘোষণার পর থেকে এর পরিচর্যা করত গণপূর্ত বিভাগ। সম্প্রতি এই রাজবাড়ি থেকে গোপনে আমগাছ কেটে নেওয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে গত বছরের অক্টোবর মাসে জেলা প্রশাসন রাজবাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয়।

এরপর জেলা প্রশাসন খোঁজা শুরু করে দিঘাপতিয়ার রাজার স্মৃতিচিহ্ন। এলাকায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে সিন্দুক। জেলা প্রশাসনের ট্রেজারিতে একটি ট্রাঙ্কের ওপরে লেখা রয়েছে রাজকুমারী ইন্দুপ্রভা। ওই ট্রেজারিতেই পাওয়া যায় মহামূল্যবান পাথরখচিত রাজার মুকুট, জরির জামা, হাতির দাঁতের হাতল লাগানো ছুরি, দামি পাথর কেটে তৈরি রাজবাড়ির থালাবাসনসহ অনেক কিছু।

এর মধ্যে রুপার ফ্রেমে বাঁধানো একটি ছবিও পাওয়া যায়। ছবিটির পরিচয় খুঁজতে গিয়ে ফ্রেম খুলে দেখা যায়, ফ্রেমে আড়াল হয়েছিল রাজকুমারী ইন্দুপ্রভার নাম। রাজবংশের চতুর্থ পুরুষ প্রমথনাথের কন্যা ছিলেন ইন্দুপ্রভা। ওই ট্রাঙ্ক থেকে বের করা হয় ইন্দুর হাতের লেখা ১০টি ডায়েরি। এর মধ্যে একটিতে শুধু কবিতা হলেও অন্যগুলোতে তাঁর আত্মজীবনী। ইন্দুর কাছে বিয়ের আগে ও পরে ২৮৫টি চিঠি লিখেছেন মহেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী। প্রতিটি চিঠির শেষে লেখা রয়েছে, ‘তোমারই মহেন্দ্র’। ইন্দুকে সম্বোধন করা হয়েছে ‘প্রিয়তমে’ হিসেবে। প্রায় ১২০ বছর আগের চিঠিগুলো এখনও পড়া যাচ্ছে।

একে/ এমজে