পোশাক শ্রমিকদের বেতন ১৮ হাজার টাকা করার দাবি
প্রকাশিত : ০৪:৩০ পিএম, ১১ মার্চ ২০১৮ রবিবার
দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে কর্মরত শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ১৮ হাজার টাকা নির্ধারণের জোর দাবি জানিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (জি-স্কপ)। আজ রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সম্মেলনে বেতন বাড়ানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের উদাহরণ দিয়ে বলা হয়, গার্মেন্টস পণ্যের বিশ্ববাজারে চীনের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। বিশ্বের সব গার্মেন্টস পণ্যের বড় বাজার ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডাসহ ধনী দেশগুলোতে। তাই জি-স্কপের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রশ্ন রেখেছেন, অন্যান্য দেশগুলো বেশি বেতন দিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারলে আমরা কেন পারবো না? আমরা সবাই জানি, বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে কম।
বিশ্বব্যাপী বেতন নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিছু মানদণ্ড বিবেচনা করা হয় বলেও উল্লেখ করেছে জি-স্কপ। সংগঠনটির নেতাদের ভাষ্য, বাংলাদেশের শ্রম আইনের ১৪১ ধারা অনুযায়ী ১০টি মানদণ্ডের কথা বলা আছে। সরকারি পে-স্কেল নির্ধারণের ক্ষেত্রে এসব মানদণ্ড মেনে চলা হয়। সেই মানদণ্ড অনুযায়ী আমরা গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ১৮ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি জানাই।
আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান অক্সফামের জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে শ্রমিকদের বেতন হতে হবে ২০ হাজার ৬৬৪ টাকা। বক্তাদের কথায়, গার্মেন্টস শ্রমিকদের কায়িক শ্রমের পরিমাণ অন্যান্য শ্রমিকদের তুলনায় কম নয়। শরীর ঠিক রেখে কাজ করতে গেলে সঠিক পুষ্টি গ্রহণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু বর্তমান বেতন দিয়ে তা একেবারেই সম্ভব নয়। খাদ্যদ্রব্য ছাড়াও বাড়িভাড়া, শিক্ষা-চিকিৎসা খরচ, বিদ্যুতের দামের উর্ধ্বগতি রয়েছে। এগুলো মেটাতে গেলে বেতন বৃদ্ধি যৌক্তিক ও আবশ্যক।
এ সময় গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণের জন্য মজুরি বোর্ড গঠন হয়েছে বলে জানান জি-স্কপের যুগ্ম আহ্বায়ক নাঈমুল হাসান জুয়েল। তার অভিযোগ, মজুরির কথা তুললেই মালিকরা বলেন, বেতন বাড়ালে কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যাবে। এটা শ্রমিকদের তিক্ত অভিজ্ঞতা।
সম্মেলনে বাংলাদেশে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী একজন গার্মেন্ট শ্রমিকের কমপক্ষে ১৭ হাজার ৮৩৭ টাকা মাসিক আয় থাকা প্রয়োজন।
সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে এ সময় আরও ছিলেন জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, জি-স্কপের যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব বুলবুল, শাহ মো. আবু জাফর, এম শাহাদাত হোসেন, অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন শেষে মজুরি নির্ধারণ বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে পাঁচ সদস্যের একটি দল।
আরকে// এআর