ঢাকা, বুধবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ২২ ১৪৩১

দুর্নীতি মামলায় খালেদার ৪ মাসের জামিন

প্রকাশিত : ০২:৩৮ পিএম, ১২ মার্চ ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৪:০৫ পিএম, ১২ মার্চ ২০১৮ সোমবার

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৪ মাসের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার দুপুরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

গতকাল রোববারই এই আবেদনের আদেশ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিশেষ আদালতের রায়ের নথি হাইকোর্টে না পৌঁছানোর কারণে আদালত আদেশের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন। পরে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে নিম্ন আদালত থেকে রায়ের নথি হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়।

আজ সোমবার রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, দুদকের পক্ষে খুরশিদ আলম খান এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন শুনানি করেন।

জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতে আমরা আবেদন করেছি। আবেদনটি শুনানি শেষে আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ ছিল।  আদালতে আমরা কারেন্ট দুটি পিটিশন প্লেস করেছি।  সেখানে আছে ১০ বছর বা সাত বছর জেল হলেও বয়স্ক মানুষকে জামিন দিয়ে থাকেন আদালত। আদালত সেই ক্ষমতা ব্যবহার করে আজ তাকে চার মাসের জামিন দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া এখন জামিনপ্রাপ্ত। সরকার যদি আর কোনো মামলায় তাকে গ্রেফতার না দেখায় তাহলে তার জামিন পেতে আর কোনো বাধা নেই। সর্বোচ্চ আদালতের ওপর আমাদের আস্থা আছে। খালেদা জিয়ারও আস্থা আছে বলে তিনি আপিল করেছেন।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. আক্তারুজ্জামানের আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।রায়ের দিন থেকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই। মামলায় আসামির সংখ্যা মোট ছয়জন। ৩২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। যুক্তিতর্ক শেষ করা হয় চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি। বিচারের সময়কাল ২৩৬ কার্যদিবস। মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানি মোট ১৬ কার্যদিবস। সর্বশেষ রায় ঘোষণা ৮ ফেব্রুয়ারি।

এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকে পাঠানো দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দুদক এই মামলা করেছিল। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট ছয়জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশীদ।
অন্য আসামিরা হলেন সাবেক সংসদ দসস্য ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। মামলায় শুরু থেকে পলাতক আছেন কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে অন্যায়ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। সরকারি এতিম তহবিলের আর্থিক দায়িত্ববান বা জিম্মাদার হয়ে বা তহবিল পরিচালনার ভারপ্রাপ্ত হয়ে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে পরস্পর যোগসাজশে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের করেছেন, যা দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ১০৯ ধারায় অপরাধ।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন—মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

এসএ/ এআর