হকিংকে নিয়ে তার ছাত্র যা বললেন
প্রকাশিত : ১২:১২ পিএম, ১৫ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার
স্টিফেন হকিং শুধু পৃথিবী বিখ্যাত বিজ্ঞানীই ছিলেন না। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুপরিচিত শারীরিক প্রতিবন্ধী এক ব্যক্তি। একদিকে তাঁর ছিল অসাধারণ মেধা এবং অন্যদিকে ছিল অচল দেহ। হকিং প্রমাণ করেছেন মানুষের চেষ্টার কোন সীমা-পরিসীমা থাকে না। তিনি যে কাজ করতে পারবেন বলে মনে করতেন সেটিকে তার তীক্ষ দৃষ্টি থাকতো। হকিং বলে গিয়েছেন যে, শারিরিক প্রতিবন্ধী হওয়া কোনো বাধা নয়। মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী না হতে তিনি পরামর্শ দিয়ে গেছেন।
মাত্র ২২ বছর বয়সেই স্টিফেন হকিং বিরল মোটর নিউরন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। শরীরের যেসব শীরা মাংসপেশিকে নিয়ন্ত্রণ করে সেগুলো ধীরে-ধীরে অকেজো হয়ে যেতে থাকে। ফলে তিনি তাঁর নিজের দেহের কাছে বন্দি হয়ে পড়েন। কিন্তু তার চিন্তার জগত ছিল অবারিত। হুইল চেয়ার বসে এবং কৃত্রিম কণ্ঠে কথা বলে হকিং পৌঁছে যান তাঁর চিন্তার সর্বোচ্চ শিখরে।
শারীরিক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে যে ধারণা প্রচলিত আছে সে বিষয়টি বদলে দিয়েছিলেন হকিং।
অধ্যাপক হকিং-এর ছাত্র অধ্যাপক পল শেরার্ড মনে করেন, তিনি অন্য যে কারও চেয়ে বেশি কিছু করে দেখিয়েছেন। মোটর নিউরন রোগ নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলেছিলেন হকিং। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে যে ধারনা প্রচলিত আছে সেটিকে বদলে দিয়েছে হকিং-এর জীবন। ডাক্তাররা যা ধারণা করেছিলেন, হকিং তার চেয়ে প্রায় ৫০ বছর বেশি বেঁচে ছিলেন। সাধারণত মোটর নিউরন রোগে যারা আক্রান্ত হয় তারা দ্রুত মারা যায়। একজন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ হিসেবে হকিং -এর মন ছিল তাঁর গবেষণাগার।
হেনরি ফ্রেসার নামে একজন লিখেছেন, হকিং ছিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধী কিংবা সক্ষম- সবার জন্যই এক সত্যিকারের অনুপ্রেরণা। তিনি ছিলেন এমন অসাধারণ প্রতিভাবান ব্যক্তি যিনি অসাধ্য সাধন করেছেন।
তবে একটা প্রশ্ন থেকে যায়। অক্সফোর্ড থেকে স্নাতক হওয়ার পর শারীরিক প্রতিবন্ধী না হয়ে হকিং যদি জন্মগত-ভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী হতেন তাহলে কী হতো?
বর্তমানে শারীরিকভাবে যারা প্রতিবন্ধী নয়, তারা যে সংখ্যায় বেকার আছে তার চেয়ে দ্বিগুণ সংখ্যায় বেকার হচ্ছে শারীরিক প্রতিবন্ধীরা। যারা শারীরিক প্রতিবন্ধী তাদের প্রতি অধ্যাপক হকিং-এর পরামর্শ ছিল- যেটা অর্জন করা যাবে সেটিকেই দৃষ্টি দাও।
নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক হকিং বলেছিলেন, যারা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী তাদের প্রতি আমার উপদেশ হলো, তুমি এমন কাজের প্রতি দৃষ্টি দাও যেখানে ভালো করতে হলে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না। মানসিক দিক থেকে তুমি কখনও প্রতিবন্ধী হবে না।
সূত্র: বিবিসি
একে// এআর