‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকারকে আরও কৌশলী হতে হবে’
প্রকাশিত : ০১:২৬ পিএম, ১৫ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের কোনো বিকল্প নেই। আর প্রত্যাবসনে সরকারকে আরও বেশি কৌশলী হতে হবে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট ভবনে আয়োজিত এক জাতীয় সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আয়োজনে দু’দিনব্যাপী সম্মেলনের আজ শেষ দিন।
সম্মেলনের সকালের সেশনে দেশের প্রথিতযশা কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, গবেষকরা বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আলী আশরাফ বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলায় সরকারের সামনে তিনটি পথ খোলা আছে। প্রথমত, রোহিঙ্গাদের তৃতীয় কোনো দেশে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, তাদের জন্য উন্নত দেশগুলো থেকে মানবিক সহযোগিতা আনতে হবে। যেহেতু প্রথম দুটির কোনোটি ভালোভাবে হচ্ছে না, তাই তৃতীয় পথ হিসেবে তাদেরকে মিয়ানমারে-ই প্রত্যাবসনে সরকারকে আরও বেশি কৌশলী হতে হবে। তাদের প্রত্যাবসনে আরো জোর দিতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহীদুজ্জামান বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের কৌশলী হতে হবে। এখানে দেখতে হবে তাদের জায়গা দিতে গিয়ে যেন আমরা অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে সমস্যায় না পড়ি। তবে যখন জায়গা দিয়ে ফেলেছি, এখন তাদের মানবিক দিক সমুন্নত রাখা আমাদের দায়িত্ব। তাদের ধর্ষণের মতো জঘন্য বিপদে যেন ফেলে না দেওয়া হয়।
একই বিভাগের অধ্যাপক ড.ইমতিয়াজ বলেন, মিয়ানমার ইস্যুতে আমাদের পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অভিজ্ঞতা মনে রেখে এগোতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার যদি সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করে, তবে সেটা হবে যুদ্ধের মতো কঠিন কিছু। তাই সেটা না করে বরং কীভাবে চীনসহ উন্নত দেশগুলোকে বাংলাদেশের পক্ষে আনা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে।
এছাড়া সেশনের উম্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা ও নিপীড়ন হয়েছে। এই হত্যার দায় মিয়ানমার সরকার ও তাদের সেনাবাহিনী কোনোভাবে এড়াতে পারে না। যেকারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট) বিচারের মুখোমুখি হতে হবে তাদের।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, জোরপূর্বক মিয়ানমারের রাখাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নাগরিকত্ব, জাতীয়তা এবং নিজস্ব পরিচয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করতে হবে এবং তাদের নাগরিক অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে। এগুলো করতে হলে আমাদেরকে আন্তর্জাতিক সম্প্রাদয়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের উপরে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে । এবং সেটা অব্যহত রাখতে হবে।
/ এআর /