ঢাকা, বুধবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ২১ ১৪৩১

রোহিঙ্গা সংকট

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ বাড়াতে হবে 

প্রকাশিত : ০৯:৩৯ পিএম, ১৫ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৯:৫১ পিএম, ১৫ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসনে আন্তর্জাতিক চাপ আরো বাড়ানো দরকার। সেক্ষেত্রে এসোসিয়েশন অব সাউথ-ইষ্ট এশিয়ান নেশন্স (এশিয়ান) সহ সব আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের যোগাযোগ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি এর সমাধানের উপায় খুঁজতে অভ্যন্তরীণ গবেষণাও বাড়াতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট ভবনে আয়োজিত এক জাতীয় সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আয়োজনে দুইদিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলন আজ শেষ হয়েছে। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের পঞ্চম অধিবেশনে দেশের প্রথিতযশা বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, গবেষকরা বক্তব্য রাখেন।

সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকটের স্বরুপ, ঐতিহাসিক পটভূমি নিয়ে এবং ভবিষ্যৎ দিক নির্দেশনার উপর প্রবন্ধসমূহ উপস্থাপন করা হয়। প্রবন্ধকার এবং আলোচকবৃন্দের আলোচনায় কয়েকটি বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। এই সংকটটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বাংলাদেশ এই সংকটটির অন্যতম প্রধান ভুক্তভোগী। সংকটটি খুবই স্পর্শকাতর, গুরুত্বপূর্ণ এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এর প্রভাব অপরিসীম।

এই সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বর্তমান ভূমিকা যথেষ্ঠ নয়। একটি টেকসই সমাধানে মিয়ানমারের সরকারের উপর আরো চাপ প্রয়োগ করা দরকার বলে আলোচকবৃন্দ মতামত ব্যক্ত করেন। মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা সংকটটি সম্পর্কে বাংলাদেশে গবেষণার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই সীমাবদ্ধতা সংকটটির যথাযথ মূল্যায়নে একটি ইনটেলেকচুয়াল কনস্ট্রেইন্ট। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে এই সীমাবদ্ধতা দূর করা দরকার বলে আলোচকেরা মতামত দেন।

সস্মেলনের পঞ্চম অধিবেশনে প্রফেসর ড. রাশেদুজ্জামান বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিক কাজ করেছে। এখন বাংলাদেশে সুবিধা বা ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় তাদের ফেরত পাঠাতে হবে। কিন্তু দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। এ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে সেনাবাহিনী নয় বরং আন্তর্জাতিক চাপের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে হবে।

প্রফেসর ইহসানুল হক বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে যথাযথ চাপ আসছে না। আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগে আমাদের আসিয়ানকে আরো এগিয়ে আসতে হবে। আর সেজন্য বাংলাদেশকে নিতে হবে কূটনৈতিক, বুদ্ধিদ্বীপ্ত ও গবেষণালব্ধ পদক্ষেপ।

ড. আব্দুল মান্নান বলেন, এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে জাতিসঙ্গের এমন সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। তাদের মতামত নিতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে জনমত তৈরি করে চীনকে বাংলাদেশের পক্ষে আনতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে এ কাজের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণভাবে এ বিষয়ের গবেষণাও বাড়াতে হবে। তা না হলে বেশি দূর অগ্রসর হওয়া যাবে না।

দুই দিন ব্যাপী সম্মেলনে মোট ৬টি অধিবেশনে আন্তর্জাতিক সর্ম্পক বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ১৭ টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করে। ‘‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দৃষ্টি’’ শিরোনামে দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন, ড. নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস ও মো. আলী সিদ্দিকী।

‘‘বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অবস্থা” শিরোনামে তৃতীয় অধিবেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. লাইলুফার ইয়াসমিন, মোহাম্মদ আতিক রহমান এবং লামিয়া মোমেন।

‘‘রোহিঙ্গা সংকট এবং নিরাপত্তা” শিরোনামে চতুর্থ অধিবেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক এম. শাহিদুজ্জামান, ড. এএসএম আলী আশরাফ, শেখ শামস মোরসালিন এবং ঊষাণ আরা বাদল।

‘‘রোহিঙ্গা সংকট এবং আঞ্চলিক একটর” শিরোনামে পঞ্চম অধিবেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক এহসানুল হক, অধ্যাপক ড. রাশেদুজ্জামান এবং ড. মো: আব্দুল মান্নান।

আরকে//এসি