সামাজিক মাধ্যমে ঝড় উঠালেন চীনা শিক্ষিকা
প্রকাশিত : ০৯:১৫ পিএম, ১৬ মার্চ ২০১৮ শুক্রবার
চীনের এক বয়োবৃদ্ধ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকার কর্মকাণ্ডে ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। শিক্ষকতা থেকে অবসরের পর তার বিশ্ব ভ্রমণ নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সূত্র ধরে এ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
৭৩ বছর বয়সী এই সাবেক স্কুল শিক্ষিকার নাম মিস চি।
কর্মজীবন থেকে অবসরের পর ছেলেমেয়ের বাড়িতে থাকার বদলে দুনিয়া জুড়ে ঘুরাঘুরি করছেন তিনি। আর তার এ ঘুরাঘুরি নিয়ে সম্প্রতি ৩ মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশিত হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।
তবে অনলাইনে আসার অল্প সময়ের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিওটি। ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি বার দেখা হয় ভিডিওটি। ভিডিওটি প্রকাশের পর থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় ভিডিওটি।
এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে মিস চি ইয়োরোপ, আমেরিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন।
এই সফরগুলোর সময় তিনি সাধারণত ছাত্রদের হোস্টেলে থাকেন।
যাতায়াতের ব্যয় তিনি ছাত্রদের সাথে ভাগাভাগি করেন।
তিনি বলেন, তার সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে তরুণদের সাথে আলাপচারিতা করা।
"আমি তাদের সাথে কথা বলতে পছন্দ করি এই কারণে যে তারা নতুন কথা বলে। তারা নতুন ধ্যানধারণা তুলে ধরে।"
ভিডিওর এক জায়গায় মিস চি প্রশ্ন তুলেছেন, "বয়োবৃদ্ধ চীনাদের কেন তাদের ছেলেমেয়ের বাড়িতে থাকতে হবে? কেন ঘরের কাজকর্ম করতে হবে? কেন নাতী-নাতনিদের মানুষ করার দায়িত্ব নিতে হবে?"
তিনি বলেন, অবসরের পর ছেলেমেয়ের ওপর বোঝা না হওয়ার জন্যই তিনি ঘোরাঘুরি শুরু করেছেন।
চীনা সমাজে বয়স্ক মানুষের ভূমিকা এবং তাদের প্রতি সমাজের দায়িত্ব সম্পর্কে মানুষজন নানা ধরনের মন্তব্য করছেন।
এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে মিস চি ইয়োরোপ, আমেরিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন।
এই সফরগুলোর সময় তিনি সাধারণত ছাত্রদের হোস্টেলে থাকেন।
যাতায়াতের ব্যয় তিনি ছাত্রদের সাথে ভাগাভাগি করেন।
তিনি বলেন, তার সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে তরুণদের সাথে আলাপচারিতা করা।
"আমি তাদের সাথে কথা বলতে পছন্দ করি এই কারণে যে তারা নতুন কথা বলে। তারা নতুন ধ্যানধারণা তুলে ধরে।"
মিস চি-এর জীবনধারা নিয়ে চীনা সোশাল মিডিয়ায় লক্ষ লক্ষ মন্তব্য পোস্ট করা হয়েছে।
অনেকেই তার স্বাধীন সত্ত্বার প্রশংসা করেছেন।
অনেকেই বলেছেন, তার ভিডিওটি তাদের দারুণভাবে উৎসাহিত করেছে এবং তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা সম্পর্কে চিন্তাভাবনার খোরাক জুগিয়েছে।
"চীনা বাবা-মায়েরা যে কেন সবসময় ছেলেমেয়েদের বলে বিয়ে কর, বাচ্চা নাও!" বলছিলেন একজন।
অন্য একজন মন্তব্য করেন: "এই জন্যেই আমি বিয়ে করতে চাই না।"
পিতামাতা, সমাজের বয়োবৃদ্ধ কিংবা পূর্বপুরুষের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো কনফুসিয়াস প্রবর্তিত মূল্যবোধের অংশ, যা চীনে কঠোরভাবে পালন করা হয়।
বয়স হওয়ার পর পিতামাতারা সন্তানের সাথে থাকবে চীনা সমাজে এমনটাই আশা করা হয়।
কিন্তু এখন বহু মানুষকে দীর্ঘ সময় কাজ করতে হয় আর বাড়িতে বৃদ্ধ পিতামাতা তাদের সন্তানদের দেখাশোনা করে থাকেন।
গড় আয়ু বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং জন্মহার কমে যাওয়ার কারণে চীনে বয়স্ক মানুষদের জন্য সঙ্কট শুরু হয়েছে।
আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ চীনের ১৪০ কোটি জনসংখ্যার মোট চার ভাগের এক ভাগের বয়স হবে ৬৫ বছরের ওপরে।
সূত্র:বিবিসি বাংলা
//এস এইচ এস//টিকে