এলডিসি উত্তরণে প্রথম ধাপ পেরোলো বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ০৯:২৬ এএম, ১৭ মার্চ ২০১৮ শনিবার
প্রথমবারের মতো স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে আসার প্রথম ধাপ পেরোলো বাংলাদেশ। প্রথম পর্যায় স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরোনোর এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে জাতিসংঘ। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ত্রিবার্ষিক বৈঠক শেষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি)। বাংলাদেশ সময় সোমবার মধ্যরাতে শুরু হয়ে শুক্রবার শেষ হয়েছে বৈঠকটি। দ্বিতীয় দফায় ২০২১ সালে আবারও এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পারলে চূড়ান্তভাবে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে শুক্রবার ফেসবুক স্ট্যাটাসে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম লিখেছেন, ‘জাতিসংঘের উন্নয়নবিষয়ক কমিটি গতকাল রাতে নিউইয়র্কে বৈঠকে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ থেকে উত্তরণের সব সূচক প্রথমবারের মতো অর্জন করেছে। শুক্রবার তারা আমাদের জাতিসংঘে স্থায়ী মিশনে এটা নিশ্চিত করে একটা চিঠি হস্তান্তর করবে। নিয়ম অনুযায়ী তিন বছরে পরপর দুবার এটা অর্জন করলেই চূড়ান্তভাবে একটা দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আমাদের এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে এবং ২০২১ সালে আবারও নিশ্চিত করতে হবে একই সূচকগুলো অর্জনের মধ্য দিয়ে। সবাইকে অভিনন্দন। এ রকম একটি ঐতিহাসিক সময়ে পরম শ্রদ্ধেয় বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করি। শহীদদের স্মরণ করি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’
এর আগে বিরল কৃতিত্ব অর্জন করতে যাওয়ায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সিপ্পো এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আগাম অভিনন্দন বার্তা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘উন্নয়নে বিশ্বে রোল মডেল হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।’
জাতিসংঘের ইকোনমিক ও সোশ্যাল কাউন্সিল উত্তরণ পর্যায়ে যে তিনটি বিষয় বিবেচনা করে থাকে, সেগুলো হচ্ছে- প্রথমত, মাথাপিছু আয় ১২৪২ মার্কিন ডলার হতে হয়, বাংলাদেশ তা অনেক আগেই অতিক্রম করে ১৬১০ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, মানবসম্পদের উন্নয়ন অর্থাৎ দেশের ৬৬ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হতে হয়, বাংলাদেশের অর্জন ৭২.৯ ভাগ। তৃতীয়ত, অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর না হওয়ার মাত্রা ৩২ ভাগের নিচে হতে হয়, বাংলাদেশে তা ২৫ ভাগে রয়েছে।
বাংলাদেশকে অবশ্য সূচকের এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে ২০২১ সাল পর্যন্ত। ২০২২ সালের শেষের দিকে জাতিসংঘের নির্ধারিত নিয়মে সূচকের তথ্যগুলোর সমন্বয়ে চূড়ান্ত হিসাব তৈরি করা হবে। ২০২৪ সালের মার্চে সিডিপির নতুন বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন হলে তা পাঠানো হবে ইকোসোকে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চূড়ান্ত করে জাতিসংঘে প্রতিবেদন পাঠাবে ইকোসোক। সাধারণ অধিবেশনে তা স্বীকৃতি পেলে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাবে। এসব প্রক্রিয়ায় মোট ৬ বছর লাগবে। সে পর্যন্ত বাংলাদেশকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
এসএইচ/