ঢাকা, সোমবার   ১১ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ২৬ ১৪৩১

কংগ্রেস জোটের কান্ডারি রাহুল

প্রকাশিত : ১১:৩৪ এএম, ১৮ মার্চ ২০১৮ রবিবার

লোকসভা ভোটের বছরখানেক আগে ধীরে ধীরে দানা বাঁধছে বিরোধী জোট। গতকাল শনিবার কংগ্রেসের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ঝাঁঝালো আক্রমণ করে সেই জোটের পক্ষেই বার্তা দিলেন সোনিয়া গান্ধী। কিন্তু একই সঙ্গে এটাও বুঝিয়ে দিলেন, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসই হবে সেই জোটের মূল কান্ডারি।

শনিবারের অধিবেশনে যে রাজনৈতিক প্রস্তাব পাশ হল, তাতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বিজেপি-আরএসএসকে হারাতে সম-মনোভাবাপন্ন দলগুলির সঙ্গে বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। আর সোনিয়া শোনালেন, পাঁচমারি অধিবেশনে একা চলার সিদ্ধান্ত পাঁচ বছরের মধ্যেই পাল্টে শিমলা শিবিরে সম-আদর্শের দলের সঙ্গে মিলে কাজ করার সিদ্ধান্তের কথা। তার পর দশ বছর জোট সরকারের কথা। কিন্তু কথায় কথায় এটিও জানাতে ভুললেন না, রাষ্ট্রনির্মাণে আর নানান আন্দোলনে সবচেয়ে এগিয়ে কংগ্রেসই। যে দলের নেতা এখন রাহুল গান্ধী। সোনিয়া যা রেখেঢেকে বললেন, সেটাই খোলাখুলি বলে দিলেন দলের বাকি নেতারা: ২০১৯ সালে রাহুল গান্ধীর প্রধানমন্ত্রী হওয়া কেউ আটকাতে পারবে না।

জোটের বার্তা দেওয়ার পর মোদীকে নিশানা করলেন সোনিয়া। ‘প্রতারক’, ‘ড্রামাবাজ’, ‘মিথ্যাবাদী’, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, ‘তানাশাহি’, ‘অহঙ্কারী’, ‘ক্ষমতালোভী’— নানা বিশেষণে ভূষিত করলেন প্রধানমন্ত্রীকে। ইউপিএ জমানার প্রকল্পগুলি দুর্বল করা, সাম-দান-দণ্ড-ভেদ নীতি এবং‌ সংবিধান-সংসদকে উপেক্ষা করা, বিরোধী দল ও মিডিয়াকে দমানোর চেষ্টার জন্য তাঁকে কাঠগড়ায় তুললেন। বললেন, এর বিরুদ্ধে লড়াই করেই ‘ভয়মুক্ত’, ‘পক্ষপাতমুক্ত’, ‘প্রতিশোধমুক্ত’, ‘হাহাকারমুক্ত’ ভারত গড়বে কংগ্রেস।

রাহুল বললেন, দেশে ক্রোধ ছড়ানো হচ্ছে। বিভাজন করা হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদী রাস্তা দেখাতে পারছেন না। রোজগার না পেয়ে যুবকরা ক্লান্ত। তাঁদের রাস্তা দেখাবে কংগ্রেসই।

এ ভাবে বিরোধী জোটের কান্ডারি হিসেবে কংগ্রেসকে তুলে ধরা হলেও আঞ্চলিক দলগুলি তা কতটা মেনে নেবে, সেই প্রশ্ন থাকছে। বস্তুত, তৃণমূল-সহ অনেক দলই রাহুলকে জোটের নেতা হিসেবে আগাম মেনে নিতে নারাজ। তারা কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তৃতীয় মোর্চা তৈরির পথে হাঁটছে।

এই অবস্থায় রাহুলের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার প্রথম ধাপ হিসেবে কংগ্রেসকে কর্নাটকের কঠিন লড়াই জিততে হবে। সোনিয়া তাই গতকাল ৪০ বছর আগে ইন্দিরা গান্ধীর চিকমাগালুর জয়ের কথা টেনে আনেন।

বিরোধী জোটের এই চেষ্টাকে এ দিন কটাক্ষ করেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তিনি বলেন, এক সময় ইন্দিরার বিরুদ্ধে বিরোধী দলের জোট হত। এখন মোদী বনাম বিরোধী। এটাই প্রমাণ করে, বিজেপির শক্তি কতটা। অমিতের দাবি, সোনিয়ার নৈশভোজে যে সব বিরোধী নেতা গিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই তলায় তলায় যোগাযোগ রাখছেন বিজেপির সঙ্গে। অমিতের কথায়, ওঁরা বলছেন, বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে।

সূত্র: আনন্দবাজার

একে// এআর