‘বিশ্ববাজারে পণ্যের প্রবেশাধিকার ধরে রাখতে হবে’
প্রকাশিত : ০৪:০২ পিএম, ১৯ মার্চ ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৫:০৩ পিএম, ১৯ মার্চ ২০১৮ সোমবার
ড. আহসান এইচ মনসুরের
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের শর্ত হিসেবে যে সূচকগুলোর রয়েছে তার তিনটিতেই নির্ধারিত মান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) সম্প্রতি এমন ঘোষণা দিয়েছে। এর ফলে নির্দিষ্ট সময়েই উন্নয়নশীল দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। যা দেশের জন্য বড় একটি অর্জন।
উন্নয়নশীল দেশ হলে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ে জানতে একুশে টেলিভিশন অনলাইন মুখোমুখি হয় পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুরের।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত হওয়ার কারণে কিছু সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছে। এটা কিন্তু আমাদের শেষ অবলম্বন নয়। আমাদের শেষ অবলম্বন আমাদের নিজস্ব স্বক্ষমতা বাড়াতে হবে। কাজেই বাংলাদেশকে দুইভাবে এগোতে হবে। একটা হচ্ছে বিভিন্নভাবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কীভাবে বিশ্ববাজারে আমাদের পণ্যের প্রবেশাধিকার ধরে রাখতে পারি, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া। দ্বিতীয়ত : ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিএসপি প্লাস পাওয়া। সর্বোপরি আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটির হুবহু তুলে ধরা হলো।
বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশকেও এগিয়ে যেতে হবে সামনের দিকে। সেজন্য স্বল্পোন্নত থেকে উত্তোরণ আমাদের কাম্য ছিল এবং দরকারও ছিল। এটা শুধু একটা সনদ-ই না। এটা হচ্ছে আমাদের যেসব অর্জন হয়েছে তার একটা প্রতিফলন। এটা আন্তর্জাতিকভাবে পাওয়া বিশ্ব দরবারের একটা স্বীকৃতি। সেজন্য আমরা সেটা চাই।
তবে একটা বিষয় হলো আমরা কী স্বল্পোন্নত থাকবো না কী উন্নত দেশ হবো। আমরা দরিদ্র দেশ হিসেবে যেসব সুযোগ-সুবিধা পেতাম, সেগুলো নিয়েই থাকবো? নাকি মধ্যম আয় বা উন্নত দেশের কাতারে যাবো।
পৃথিবীর অন্যান্য উন্নত দিকে যদি আমরা তাকাই সেখানে কী দেখতে পাই? সেখানে চীন আছে, ভারত আছে, ভিয়েতনাম আছে। তারা সবাই মধ্যম আয়ের দেশ বা উন্নয়নশীল দেশ এখনও তারা। কিন্তু তারা বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালীভাবে ধরে রেখেছে।
এখানে কথা হচ্ছে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত হওয়ার কারণে কিছু সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। এটা কিন্তু আমাদের শেষ অবলম্বন নয়। আমাদের শেষ অবলম্বন আমাদের নিজস্ব স্বক্ষমতা বাড়াতে হবে।
কাজেই বাংলাদেশকে দুইভাবে এগোতে হবে। একটা হচ্ছে বিভিন্নভাবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কীভাবে বিশ্ববাজারে আমাদের প্রবেশাধিকার ধরে রাখতে পারি সেটা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু করতে হবে। দ্বিতীয়ত : আমাদের বিশেষ লক্ষ্য থাকতে হবে আমরা যেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিএসপি প্লাসটা পেতে পারি। আসিয়ানের সঙ্গে যেন আমরা বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করতে পারি। উন্নত দেশের সঙ্গে আমরা দ্বিপাক্ষিক চুক্তির পথে এগোতে পারি। ভারত, চীন ও তুরস্কের সঙ্গে আমরা যেন দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে এগোতে পারি। তাহলে আমাদের বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে যে সমস্যা দেখা দিতে পারে সেটা অতিক্রম করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো প্রস্তুতি নেই। দরকষাকষি কিন্তু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এ ব্যাপারে এখনই বাংলাদেশকে প্রস্তুতি নিতে হবে। যাতে আগামী ২০২৭ সালে আমাদের যে সুযোগ-সুবিধা থাকবে না সেগুলো যেন বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে অব্যাহত রাখতে পারি।
অনুলিখন : রিজাউল করিম।
আরকে// এআর